দুর্গাপুর, 11 জানুয়ারি: সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে নৃশংসভাবে খুন করে দিদির বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়েও হল না শেষরক্ষা। পুলিশের জালে অভিযুক্ত আকাশ ভুঁইয়া। বৃহস্পতিবার 10 দিনের পুলিশি হেফাজতে চেয়ে তোলা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। বুধবার সন্ধেয় দুর্গাপুরের পারুলিয়ার ড্যামপাড়ায় হাত, পা, বাঁধা এবং গলায় ফাঁস দেওয়া বছর তেইশের অনিল ভুঁইয়ার দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে তদন্তে নামে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত অনিল ভুঁইয়ার প্রিয় বন্ধু ছিল আকাশ। অনিলের হাতে আকাশের নাম আর আকাশের হাতে অনিলের নামের ট্যাটু লেখা ছিল। তদন্তের ভিত্তিতে এই খুনের পিছনে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক উঠে আসে। অনিলের সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেম ছিল। আর অনিলের প্রেমিকাকেই বিয়ে করতে চাইছিল আকাশ। সেই নিয়েই অনিলের সঙ্গে আকাশের বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছিল। বুধবার সকালে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পারুলিয়ার পাথর খাদানের পাশে দু'জনের মধ্যে শুরু হয় বচসা।
সেই বচসা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যেতেই অনিলের হাত শরীরের পিছনে বেঁধে এবং দু'টি-পা বেঁধে গলায় কালো কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে আকাশ ভুঁইয়া। তারপরেই অন্ডালের বহুলার দিদির বাড়িতে গা-ঢাকা দেয় অভিযুক্ত বন্ধু। সেখান থেকেই বুধবার রাতে আকাশ ভুঁইয়াকে গ্রেফতার দুর্গাপুর থানার পুলিশ। পুলিশি হেফাজত চেয়ে ধৃতকে তোলা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে। মৃত অনিলের মা সীতা ভুঁইয়ার অভিযোগ, অনিলের সঙ্গে আকাশের মাঝেমধ্যেই ঝগড়া লেগে থাকত। কিছুদিন আগে আকাশ আমার ছেলের স্মার্টফোন ভেঙে দেয়। সেই রাগে অনিলও, আকাশের মোবাইল ভেঙে দেয়।"
তিনি আরও বলেন, "তারপর থেকে আকাশ এবং ওর পরিবারের লোকজন আমাকে এবং অনিলকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত। অনিল বিয়ের করার জন্য দিনমজুরের কাজ করে টাকা জোগাড় করছিল। অনিলকে বিয়ে না-করার জন্য চাপ দিত আকাশ। বুধবার সকালে আমার ছেলেকে আকাশ নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় খবর আসে অনিলকে খুন করা হয়েছে।" মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত আকাশ ভুঁইয়াকে। এই ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্তের গতি আনতে চাইছে পুলিশ।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পাণ্ডে বলেন, "মেয়েটিকে অনিল ভালোবাসত ৷ সেই মেয়েটিও অনিলকে খুব ভালোবাসত। আর সেই মেয়েটিকেই পছন্দ করত আকাশ। এই নিয়েই দ্বন্দ্ব-বাঁধে দুই বন্ধুর বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে আরও সত্য উদঘাটিত হবে। খুনের ঘটনায় আকাশ একা ছিল নাকি আরও কেউ ছিল সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ৷"
আরও পড়ুন: