আসানসোল, 4 মে : ভ্রমণ করতে গিয়ে উত্তরাখণ্ডে আটকে পড়েছেন বাংলার 27জন পর্যটক । যাঁদের মধ্যে 23জন আসানসোলের ও চারজন হাওড়ার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে । বর্তমানে তাঁরা উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি জনপদ চৌকরি নামে একটি জায়গায় হোটেলে রয়েছেন । এই পর্যটকদের দলটিতে বেশিরভাগই বয়স্ক । দলে শিশুও রয়েছে । মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যে ফেরানোর আবেদন জানান তাঁরা । তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।
13 মার্চ আসানসোল থেকে 23জনের এই দল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল । হাওড়ার চারজন পরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন । প্রথমে তাঁরা যান নৈনিতাল, তারপর রানিখেত, কৌশানি হয়ে মুনশিয়ারি । সেখানে তাঁরা লকডাউনের খবর পেয়ে নেমে আসেন ।
21 মার্চ উত্তরাখণ্ডের প্রত্যন্ত এলাকা চৌকরিতে একটি হোটেলে আশ্রয় নেন । তারপর থেকে সেখানেই রয়েছেন । ওই পর্যটক দলে রয়েছেন আসানসোলের সাঁকতোড়িয়ার বাসিন্দা দিলীপ আচার্য । তিনি ফোনের মাধ্যমে ETV ভারতকে জানান, "আমাদের এই দলে চারজন হার্টের রোগী রয়েছেন । যাঁদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় । একজন শিশু আছে । এই অবস্থায় আমরা বড় অসহায় হয়ে এখানে পড়ে আছি ।"
উত্তরাখণ্ডের ওই এলাকার জেলা প্রশাসন তাঁদের অনেক সাহায্য করেছে । তাঁদের নিয়মিত রেশন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে । গ্যাসের দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং যে হোটেলে তাঁরা বর্তমানে রয়েছেন সেই হোটেলের ভাড়াও কমিয়ে দিয়েছে প্রশাসন । পাশাপাশি হোটেল মালিকও তাঁদের অনেক সহযোগিতা করেছেন । কিন্তু তাঁরা ওখান থেকে দ্রুত নিজেদের বাড়ি ফিরতে চান । দিলীপবাবুর দাবি, যেখানে তাঁরা রয়েছেন সেই জায়গাটি বিপদসঙ্কুল এলাকা । মাঝেমধ্যেই হোটেলে চলে আসছে হায়না । গতরাতেও চারটি হায়না হানা দিয়েছিল ওই হোটেলে । এর সঙ্গে রয়েছে তুষারপাত । জবুথুবু অবস্থা বৃদ্ধ মানুষদের । হার্টের রোগীরা যখন-তখন ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন । সেই কারণেই সোশাল মিডিয়ায় চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে এই পর্যটক দলটি । যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি ।
ওই দলে থাকা আরও এক পর্যটক পর্নিনি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা বাড়ি ফেরার পর 14দিন কোয়ারানটিনেও থাকতে রাজি আছি । আমাদের কারও মধ্যে কোনও সংক্রমণ নেই । দয়া করে মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাদের বাড়িতে ফেরান তাহলে আমরা বেঁচে যাই । না হলে গত এক মাস ধরে শারীরিক, আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছি, আমরা আর কতদিন সুস্থ হয়ে থাকতে পারব তা জানি না ।" এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি । তবে পর্যটকরা আশাবাদী, নিশ্চয়ই রাজ্য সরকার তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে আসবে ।