নদিয়া, 7 জুলাই: বাম সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কাছে পৌঁছে যেত সাদা থান ৷ বিরোধী প্রার্থীদের ভয় দেখাতেই তৎকালীন ক্ষমতাশীন শাসক শিবির এই পন্থা অবলম্বন করত বলে মনে করে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ ৷ একসময় এই অভিযোগ জানাত তৃণমূল থেকে শুরু করে কংগ্রেস ৷ এবার সেই একই অভিযোগে বিদ্ধ শাসকদল তৃণমূল ৷
বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির (28 নম্বর) প্রার্থী চঞ্চল চক্রবর্তীর বাড়ির সামনে পড়ে রয়েছে সাদা থান, কর্পুর, গীতা, মিষ্টি এবং ধূপকাঠি ৷ অভিযোগ, পরিবারকে আতঙ্কিত করতেই শাসকদল এই ঘটনা ঘটিয়েছে । নির্বাচনের আগের দিন এই ঘটনা ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নদীয়ার শান্তিপুর থানার ফুলিয়া এলাকায় । তবে কি বিরোধী আসনে থাকা রাজনৈতিকদল বর্তমানে শাসকের আসনে থেকে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ! ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া নিয়ে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির ।
বিজেপি প্রার্থী চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, "শাসক দল বোঝাতে চাইছে আমি খুন হয়ে যেতে পারি । এর আগেও আমাকে একাধিকবার বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয়েছে । কিন্তু আমি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করি ৷ এইসব হুমকিতে ভয় পাই না । তবে এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে পরিবার কিছুটা হলেও আতঙ্কিত রয়েছে ।" ঘটনায় শাসক দল জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন তিনি । ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন বলে দাবি ওই প্রার্থীর ৷ ঘটনার সত্যতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী চঞ্চল চক্রবর্তীর মা মীরা চক্রবর্তী জানান, সকালে কয়েকজন এলাকারই মহিলা তাঁকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান ৷ বাইরে যেতেই তিনি দেখতে পান গেটের বাইরে এই সমস্ত জিনিস পত্র পড়ে রয়েছে ৷ তাঁর কথায়, "যেহেতু আমার ছেলে বিজেপি করে এবং ভোটে দাঁড়িয়েছে সেই কারণেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল । রাত পোহালেই নির্বাচন ৷ তারমধ্যে এই সব জিনিস পড়ে রয়েছে বাড়ির সামনে ৷ আমরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি ।"
আরও পড়ুন: দু'টি আসনে মনোনয়ন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর ! ভোটের দু'দিন আগে প্রত্যাহার
তবে এই ঘটনার পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন 28 নম্বর ওয়ার্ড সমিতির তৃণমূল প্রার্থী উৎপল বসাক । তিনি বলেন,"তৃণমূল কখনও এই শিক্ষা লাভ করেনি । আমরা মমতা ব্যান্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজনীতি করি । তাঁরা কোনও গন্ডগোল কিংবা ঝামেলায় বিশ্বাসী নন । এই এলাকায় বিজেপি একটা ভোটও পাবে না সেই বুঝেই নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।"