নদিয়া, 23 মার্চ: ভোট যায় ভোট আসে ৷ সঙ্কটমোচন হয় না ৷ প্রতিবার রাজনৈতিক দলগুলির থেকে মেলে প্রতিশ্রুতি ৷ ভোট ফুরোলে কেউ ফিরেও তাকায় না ৷ এভাবেই আজ ধ্বংসের মুখে নদিয়ার তাঁত শিল্পী ৷ অভিযোগ করছেন জেলার শান্তিপুর ও ফুলিয়ার অসংখ্য তাঁত শিল্পীরা ৷
কমতেও কমতেও শান্তিপুরে থেকে ফুলিয়া অঞ্চলে এখনও 60 থেকে 70 হাজার মানুষ তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৷ এক সময় তাঁতের শাড়ি ছিল বাঙালি নারীর অন্যতম পরিধান ৷ কিন্তু আজকের বাজার বদলে গেছে ৷ এই অবস্থায় তাঁতিদের আয় তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ বিশেষত প্রবল সমস্যায় হ্যান্ডলুম ৷ শিল্পীদের কথায়, কাপড় বিক্রি করে বোনার খরচ উঠছে না । তাঁত শিল্পী সুশীল বসাক জানালেন, হ্যান্ডলুমে একটা কাপড় বুনলে 300 টাকা মজুরি ৷ ওই শাড়ি বুনতে লাগে দু-দিন ৷ অর্থাৎ কি না দিন প্রতি মজুরি মেলে 150 টাকা ৷ এভাবে সংসার চলে না ৷
আরও পড়ুন: জাতীয় তাঁতবস্ত্র দিবস : দেশীয় তাঁতশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াস
তাঁত শিল্পী বিমল বসাক বলেন, জেলার তাঁত শিল্প ধ্বংসের মুখে ৷ অনেক ঘরে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে ৷ শাড়ির মজুরি মেলে না ৷ এভাবে চলে না ৷ আমাদের তো এটাই রোজগার ৷ এখন উন্নত মেশিন এসে গেছে ৷ হাতে বোনার কদর নেই ৷ ভোট আসলে নেতারা প্রতিশ্রুতি দেয় ৷ তারপর ভোটের মতো ভোট চলে যায় ৷ কিছুই হয় না ৷
আরেক তাঁত শিল্পী সুশীল বসাকও ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ৷ বললেন, আগে বামদের সরকার ছিল, তারপর গত দশ বছর তৃণমূল সরকার ৷ আমাদের জন্য কেউ কিছু করেনি ৷ নতুন এই যে পাওয়ার লুম মেশিন এসেছে, এরাই আমাদের ভাত মেরে দিয়েছে৷ সব ধ্বংস হয়ে গেছে ৷
শিল্পীদের আবেদন, আসন্ন নির্বাচনে যে সরকারই আসুক, তারা যেন শান্তিপুর, ফুলিয়ার তাঁতকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নেয় ৷ নইলে অচিরেই নিশ্চিহ্ন হবে হাতে বোনা বাংলার তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য ৷