নদিয়া, 25 মার্চ: হাঁসুয়া দিয়ে স্ত্রী'কে কুপিয়ে খুন করে আত্মঘাতী স্বামী। সাত সকালে জোড়া মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার কুটিরপাড়া এলাকার। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ (Husband Suicide After Killed His Wife)। জানা যায়, কুঠিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা, জয়ন্ত সর্দার। বারো বছর আগে ওই এলাকারই যুবতী দিপালী সর্দারের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বর্তমানে তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর থেকেই মাঝে-মধ্যেই অশান্তি লেগে থাকত দু'জনের মধ্যে। কয়েক বছর আগে অশান্তি আদালতে পর্যন্ত পৌঁছয়। সেই কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আদালতে মামলা চলছিল ৷ অশান্তির কারণে এবং আদালতে মামলা চলার কারণে দিপালী সর্দার তাঁর বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তবে তাঁদের মধ্যে অশান্তি এবং মামলা হওয়া সত্ত্বেও মাঝে-মধ্যেই দেখা করতেন দিপালী ও জয়ন্ত।
অভিযোগ, গতকাল রাতে দিপালীকে ডেকে পাঠান স্বামী জয়ন্ত সর্দার। জয়ন্ত ডেকেছে শুনে দিপালী বাড়ি ছেড়ে তার কাছে যান। এরপর তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার এক জমিতে দেখেন হাত বাঁধা অবস্থায় দিপালী সর্দারের গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। তাঁর কিছুটা দূরে রেললাইনে মাথা ছিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে জয়ন্ত সর্দারের মৃতদেহ। এরপরে এলাকাবাসীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান অন্যান্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দিপালীর বাবার বাড়ি এবং জয়ন্তর পরিবারের লোকজন। ঘটনাস্থলে আসে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশও।
আরও পড়ুন: সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ, পরিবারের 4 সদস্যকে কুপিয়ে খুন মহিলার !
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দু'টি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্যদিকে, ঘর থেকে ধারালো হাঁসুয়া উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ এবং স্থানীয়দের প্রাথমিক অনুমান অভিযুক্ত জয়ন্ত সর্দার স্ত্রীকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। পরবর্তীকালে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হয়। এবিষয়ে কুটিরপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কাজলী সর্দার বলেন, "এর আগেও দেখা গিয়েছে প্রায়শই দু'জনের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকত। মামলাও চলছিল আদালতে তবে মাঝেমধ্যে দেখা করতো জয়ন্ত এবং দিপালী।" গতকাল জয়ন্ত দীপালিকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে মৃত দিপালী সর্দারের মা বলেন, "গতকাল রাত এগারোটার সময় জয়ন্ত মেয়েকে ডেকে পাঠিয়েছিল। তখন মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। জয়ন্তের কাছে শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোন ছিল কোনও ধারালো অস্ত্র ছিল না। দীর্ঘক্ষণ মেয়ে ফিরে না-আসার কারণে সকালে জানতে পারি খুন করা হয়েছে দিপালীকে। ওই এলাকার আরেক স্থানীয় বাসিন্দা তপন সর্দারের কথায়, নিজের স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে, খুন করে জয়ন্ত এরপর নিজেও আত্মঘাতী হয়। সাত সকালে এই ঘটনায় রীতিমত আতঙ্কিত এলাকাবাসী। আদালতে মামলা চলার পরে জয়ন্ত নিজের স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হবেন এটা কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। যদিও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ।