কান্দি, 5 মে: শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে আত্মঘাতী যুবক ! বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের কান্দির থানার জীবধারপাড়ায় ৷ মৃত যুবকের নাম সৌরভ দাস ৷ পেশায় পরিচারক ও টোটো চালক সৌরভ ৷ অভিযোগ তাঁকে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং খোরপোশের দাবিতে চাপ দিচ্ছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বারিক ৷ বৃহস্পতিবার রাতে কাজের জায়গায় গিয়ে সৌরভের স্ত্রী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজন অশান্তি ও মারধর করেন ৷ এরপর বাড়ি ফিরে রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর সৌরভ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ তাঁর দিদির ৷ পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷ আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, গত 2 বছর আগে সৌরভ দাসের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা বারিকের বিয়ে হয় ৷ তাঁদের একটি সন্তানও রয়েছে ৷ সৌরভের দিদির অভিযোগ বিয়ের কয়েকমাসের মধ্যে সংসারে অশান্তি শুরু হয় ৷ প্রিয়াঙ্কা সেই সময় সৌরভের কাছে বিবাহবিচ্ছেদ চান ৷ সেই সঙ্গে ছেলের খোরপোশ বাবদ 5 লক্ষ টাকাও দাবি করেন ৷ কিন্তু, পেশায় পরিচারক এবং টোট চালক সৌরভের পক্ষে 5 লক্ষ টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না ৷ সৌরভের দিদি অনামিকা দাস অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাই সেকথা জানানোর পর শুরু হয় অত্যাচার ৷
বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য চাপ তৈরি করার পাশাপাশি, সৌরভকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন অনামিকা ৷ সৌরভ কান্দিতে মধুসূদন দত্ত নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে কাজ করতেন ৷ আর অবসর সময়ে লোকরে বাড়িতে জল দিয়ে আসার কাজও করতেন ৷ পাশাপাশি, টোটো চালাতেন সৌরভ ৷ এভাবেই সংসার চলত তাঁদের ৷ কিন্তু, সৌরভ স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার বিবাহ-বিচ্ছেদ এবং খোরপোশের দাবিতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন ৷
আরও পড়ুন: ছেলের পরিবারের আত্মহত্যা, পুলিশি হেফাজতে বোবা কান্না আর হতাশা অভিযুক্ত মায়ের
অনামিকার অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত 8টা নাগাদ প্রিয়াঙ্কা, তাঁর বাবা মোহন বারিক এবং মা দোলন বারিক মধুসূদন দত্তর বাড়িতে হাজির হন ৷ তিনজনে মিলে সেখানে অশান্তি শুরু করেন ৷ এমনকি সৌরভকে মারধরও করেন বলে অভিযোগ ৷ বাড়ি ফিরে রাতের খাবারও খান সৌরভ ৷ এরপর নিজের ঘরে চলে যান ৷ সেই সময় পাশের ঘরে সৌরভের বাবা ঘুমোচ্ছিলেন এবং তাঁর মা পাশের বাড়িতে ছিলেন ৷ বাড়ি ফিরে তিনি সৌরভকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন ৷ এ নিয়ে কান্দি থানায় প্রিয়াঙ্কা এবং তাঁর বাবা-মা’র বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে সৌরভের পরিবার ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷