বহরমপুর, 4 সেপ্টেম্বর : গণপিটুনি রুখতে বিল পাশ করেছে রাজ্য সরকার ৷ কিন্তু, সাধারণ মানুষ যে সচেতন হয়নি, ফের তার প্রমাণ মিলল বহরমপুরে ৷ গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক যুবকের ৷ মৃতের নাম খাবির শেখ (23) ৷
গণপ্রহারের পর কাতরালেও কেউ এগিয়ে আসেনি তাঁর মুখে একফোঁটা জল দিতে । এক মহিলা এগিয়ে এলে তাঁকেও অপমানিত হতে হয় । প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পড়ে থাকার পর মৃতদেহ তুলে নিয়ে যায় পুলিশ । কেন ওই যুবককে হাত পা বেঁধে পিটিয়ে মারা হল খতিয়ে দেখছে বহরমপুর থানার পুলিশ ।
খাবিরের বাড়ি বহরমপুর থানার সাহাজাদপুর ফুলিয়া পাড়ায় । কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকতেন । সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছিলেন । প্রত্যক্ষদর্শীরা বলে, আজ দুপুরে বহরমপুর লালদিঘিপাড় সংলগ্ন একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে আচমকা ঢুকে পড়েন তিনি । সেখানে ঢুকেই ভাঙচুর শুরু করেন বলে অভিযোগ । এরপর ওই চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মীরা তাঁর হাত পা বেঁধে মারধর শুরু করে । গণপ্রহারে ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় তাঁর । মৃত্যুর আগে কাতরালেও কেউ জল দিতে এগিয়ে আসেনি । এমন কী প্রায় দেড় ঘণ্টা সেখানেই পড়ে থাকে দেহ । পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা খাবিরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । গণপিটুনির তীব্র নিন্দা করেছেন অনেকে । পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
এই সংক্রান্ত খবর : বিল পাশেও পালটায়নি পরিস্থিতি, যুবককে গণপিটুনি থেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ
গণপিটুনি রুখতে 30 অগাস্ট বিধানসভায় পাশ হয়েছে দা ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং বিল 2019 বা "গণপ্রহার রোধ বিল" । বিল পাশ হলেও এখনও আইনটি চালু হয়নি । এই বিল অনুযায়ী, গণপ্রহারে কারও মৃত্যু হলে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা হবে । গণপ্রহারে কেউ জখম হলে দোষীর সর্বোচ্চ তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে । কিন্তু বিল পাশ হওয়ার পরও এবিষয়ে যে জনমানসে এখনও সেভাবে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি, বহরমপুরের ঘটনা তার প্রমাণ ।