কান্দি, 15 জুন: যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে ৷ এই প্রবাদ বাক্যকে সার্থক করে দেখিয়েছেন নারীরা ৷ ছাপোষা গৃহবধূ সংসার সামলেও কর্মক্ষেত্রে কতটা পেশাদার হতে পারেন, এমন নজির নজর ঘোরালেই ধরা পড়বে ৷ এমনই এক গল্প শোনাব আজ ৷ গল্প নয়, সত্যি ৷ ঘরে আর বাইরে - দুটি ক্ষেত্রেই নিজের নিদারুণ দায়িত্ববোধের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন মুর্শিদাবাদের এক মহিলা পুলিশ আধিকারিক ৷
কান্দির একটি মনোনয়ন কেন্দ্রে দেখা মিলল তাঁর । মহকুমাশাসকের দফতরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা নেওয়া চলছিল সকাল থেকেই । হঠাৎ নজরে এল এক মহিলা পুলিশ অফিসার ৷ তিনি হলেন কান্দি থানার সাব ইন্সপেক্টর শতাব্দী মজুমদার, খড়গ্রামের বাসিন্দা । দীর্ঘ 15 বছর এই পেশায় যুক্ত । তাঁর কোলেই দেখা গেল একটি শিশুকে ৷ বর্তমানে ওই পুলিশকর্মী একজন মা । কোলে আট মাসের সন্তানকে নিয়েই মহকুমাশাসকের দফতরের গেটের বাইরে ডিউটি করছেন তিনি ।
তীব্র গরমেও মায়ের কোল ছাড়তে নারাজ একরত্তি । মাকে পুলিশের পোশাকে দেখলেই কান্না শুরু । তাই বাধ্য হয়ে আট মাসের শিশুকে কোলে নিয়েই ডিউটি করছেন সাব ইন্সপেক্টর শতাব্দী মজুমদার । ডিউটি করার পাশাপাশি সময়মতো ছেলেকে জল খাওয়ানো, ঘুম পাড়ানো সবই করছেন ৷
2008 সাল থেকেই পুলিশের পেশায় রয়েছেন শতাব্দী ৷ 2008 সাল থেকে 2013 সাল পর্যন্ত তিনি কনস্টেবল ছিলেন কান্দি থানায় । 2013 সালে পরীক্ষা দেন উচ্চপদের জন্য । সেখানে পাশ করে সাব ইন্সপেক্টর হন । বিভিন্ন থানায় ডিউটি করার পর তিনি বর্তমানে গত দেড় মাস ধরে কান্দি থানায় নিযুক্ত হয়েছেন । তাঁর স্বামীও দেশের সেবায় নিযুক্ত, তিনি একজন সেনা অফিসার ।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে মুহুর্মুহু বোমাবাজি দেখে ঘটনাস্থল ছাড়লেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা !
শতাব্দীর বিষয়ে বলতে গিয়ে কান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ জানান, "তিনি মেটারনিটি লিভ না নিয়ে যে ডিউটি করছেন সেটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় । যেহেতু ভোটের চাপ রয়েছে, তাই তিনি ডিউটি করার সিদ্ধান্ত নেন । তবে থানার পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে । এমন একজন পরিশ্রমী অফিসার পেয়ে আমরা খুশি । তবে এই গরমে যাতে বাচ্চাটার অসুবিধা না হয়, সে দিকেও নজর রাখা হয়েছে । খুব অসুবিধা হলে শিশুটিকে দফতরের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে । আর আইসি সাহেব এবং সহকর্মীদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা পেয়ে খুশি শতাব্দীও ৷