ভরতপুর, 20 জুলাই: পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে শক্তি প্রদর্শন করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কলকাতা পৌঁছাতে শুরু করেছেন ঘাসফুল শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা ৷ ঠিক এই পরিস্থিতিতে শাসক শিবিরের সুর কাটছে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের বক্তব্যে ৷ তিনি এবার সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে নতুন রাজনৈতিক দল গড়ার হুঁশিয়ারি দিলেন ৷
বৃহস্পতিবার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘দল (তৃণমূল) যদি যোগ্য মর্যাদা দেয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) অনুগামী হয়েই থাকব । অন্যথায় 2024 এর লোকসভা ভোটে আইএসএফের মতো নিজেই পৃথক দল গড়ে দেখিয়ে দেব বাংলার মানুষকে । প্রয়োজনে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করব । কিন্তু দলের মধ্যে থেকে অসম্মান বরদাস্ত করব না ।’’
যদিও মুর্শিদাবাদের রাজনীতির এই অন্যতম কুশীলব বরাবরই ‘ঠোঁটকাটা’ হিসেবে পরিচিত ৷ কখন যে তিনি কার বিরুদ্ধে হুংকার দেবেন, তা আন্দাজ করাই মুশকিল ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রার্থী বাছাই নিয়ে তাঁর সঙ্গে বারবার সংঘাত হতে দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতৃত্বের ৷ সরাসরি তিনি জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ৷
আরও পড়ুন: টাকা দিলেই টিকিট! নির্বাচনে দলের অন্দরে দুর্নীতি নিয়ে মমতাকে হুঁশিয়ারি হুমায়ুন কবীরের
রেজিনগর, নওদা, হরিহরপাড়া, জলঙ্গির বিধায়ককে পাশে বসিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন সেই সময় । তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তাঁদের প্রার্থীদের তৃণমূলের টিকিটে লড়তে দেওয়া হবে না ? তখন তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় ও চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার ৷ পছন্দের লোকেদের গোঁজ প্রার্থীও করেছিলেন ৷ তবে তৃণমূল এখনও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি ৷
কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার পরও তিনি থামতে নারাজ ৷ আবারও তিনি শাওনি সিংহ রায়ের অপসারণ দাবি করেছেন ৷ পাশাপাশি জানিয়েছেন যে তাঁকে কংগ্রেস ও বিজেপি দলে নিতে চাইছে ৷
হুমায়ুন বলেন, ‘‘দিল্লি থেকে কংগ্রেস, বিজেপির কেন্দ্র নেতৃত্ব বারবার যোগাযোগ করছে । অফার দিয়েছে । কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যানকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি, অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন কংগ্রেসের ত্রিসীমানা মাড়াব না । কিছুর বিনিময়ে বিজেপি ছ'জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিতে চেয়েছে । আমি এখনও কোন জবাব দিইনি ।’’
যদিও এই নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি জেলা তৃণমূলের বহরমপুর ইউনিটের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায় । তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে আমি মুখ খুলব না । যা বলবে রাজ্য নেতৃত্ব বলবে ।’’ এখন বারবার বিদ্রোহী হয়ে ওঠা হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না ! নাকি তিনিই তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সংশ্রব ত্যাগ করেন !
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা তৃণমূলের চার বিধায়কের