সাগরদিঘি, 19 মার্চ: সাগরদিঘির হার নিয়ে মমতার নিশানায় ফের অধীর চৌধুরী (Adhir Choudhury) ৷ সরাসরি এবার কংগ্রেস, বিজেপি এবং বামেদের অনৈতিক জোট নিয়ে সরব হলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ অধীর চৌধুরীর পাশাপাশি এদিন রাহুল গান্ধির উদ্দেশেও তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷
রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের ভার্চুয়াল বৈঠকে মুর্শিদাবাদের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা খলিলুর রহমান ও আবু তাহেরের উপর যথেষ্ট আস্থা পোষণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রসঙ্গত শুক্রবার কালীঘাটের (Kalighat) দলীয় বৈঠকে এই দুই নেতার উপর মুখ্য়মন্ত্রী ক্ষুব্ধ বলে সংবাদ মাধ্য়মের একাংশ প্রচার করে। এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে অবশ্য় তেমন কিছু দেখা যায়নি ৷ তবে এদিন বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে আরএসএস যোগের চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, "আমি তোমার সঙ্গে দিল্লিতে দোস্তি করব। আর এখানে তুমি বিজেপির (BJP) সঙ্গে মস্তি করবে। এটা চলতে পারে না। আমি বিজেপির কাছে মাথা নত করিনি। মাথা নত করেছে কংগ্রেস।"
উল্লেখ্য, রবিবার মুর্শিদাবাদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা জেলা সভাপতি সায়নি সিংহ রায়ের ফোনে খলিলুর রহমান, আবু তাহের-সহ জেলার বিধায়ক সাংসদদের সঙ্গে কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister)। সেখানেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। এদিন সাগরদিঘি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সাগর দিঘিতে অনৈতিক লড়াই হয়েছে। যিনি জিতেছেন তিনি কার লোক? বিজেপির। তাকেই প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। আর সমর্থন দিয়েছে সিপিএম।" পরোক্ষে মমতার অভিযোগ, অধীর চৌধুরী, আরএসএসের হাত শক্ত করছে এখানে। অধীর চৌধুরী বিজেপির 'এক নম্বর লোক' বলেও এদিন তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্য়মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সাগরদিঘি অতীত, 'পঞ্চায়েত জয়ে'র জন্য ঝাঁপানোর নির্দেশ মমতার
মুখ্য়মন্ত্রী অভিযোগের সুরে বলান, "সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি বিভিন্ন ভাবে মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে কথা বলা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের ভুল বোঝান হয়েছে। সাগরদিঘিতে আসলে টাকার খেলা চলেছে।" যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে মাঠে নেমে সরকারি প্রকল্পগুলি বিশেষত সংখ্যালঘুদের জন্য যে কাজ হয়েছে, তা সবিস্তারে জানানো, বোঝানোর কাজ করতে হবে বলে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
এদিনের ভার্চুয়াল সভায় দলনেত্রীর উদ্দেশে খলিলুর রহমান বলেন, "আমাদের সম্মানহানি হয়েছে দিদি। সংবাদ মাধ্যম আমাদের সম্বন্ধে বাজে খবর করেছে।" খলিলুর অবশ্য় একা নয়, বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। তিনি বলেন, "কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি যৌথভাবে চক্রান্ত করে এইসব কাজ করছে। আমি কোনও কিছুই তোমাদের সেই ভাবে বলিনি। অথচ একশ্রেণীর মিডিয়া এই কাজ করেছে।" একইসঙ্গে দলনেত্রী এদিন বার্তা দিয়েছেন, সংবাদ মাধ্যম মিথ্যে খবর করলে, সেই সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করবে তৃণমূল।
অন্য়দিকে এদিন বৈঠক থেকে রাহুল গান্ধিকেও নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "রাহুল গান্ধিকে নেতা বানানোর জন্য বিজেপি সংসদ চলতে দিচ্ছে না। রাহুল গান্ধি নেতা থাকলে মোদিকে কেউ কোনও দিন হারাতে পারবে না। না হলে, বাইরে তিনি কি একটা বলেছেন, সেজন্য সংসদ চলতে দিচ্ছে না!"