বহরমপুর, ১৬ ফেব্রুয়ারি : বহরমপুরে আশাবরি আবাসনে তিন মহিলা খুনের ঘটনায় দোষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, সাজা শুরু হওয়ার ২০ বছরের মধ্যে দোষী সাজা কমানোর জন্য আবেদন করতে পারবে না। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবী দেবাশিস রায় জানিয়েছেন, জেলা দায়রা আদালতের এই রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। দোষীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে উচ্চ আদালতে যাবেন। তিনি বলেন, "নৃশংস এই খুনের ঘটনায় আমরা বরাবর দোষীর মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে এসেছি। একই দাবিতে এবার হাইকোর্টে যাব।"
২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি আশাবরি আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তিন মহিলা খুন হন। খুনের দু'দিন পর ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে বহরমপুর থানার পুলিশ প্রভা দাস (৭১), বিজয়া বসু (৪৮) ও তাঁর মেয়ে আত্রেয়ী বসু (১৮)-র দেহ উদ্ধার করে। এরপর পুলিশ সারগাছি এলাকার গয়না ব্যবসায়ী ওমর আলিকে জেরা করে ও মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শিলিগুড়ি থেকে নিত্যানন্দ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পেশায় জ্যোতিষী নিত্যানন্দ আত্রেয়ীর "কালসর্প দোষ" কাটাতে ঘটনার দিন পুজো করার জন্য আশাবরি আবাসনের ওই ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল। তারপর রাতে ওই তিন মহিলাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করে এবং গয়না ও মোবাই ফোন নিয়ে পালায়। ১০ জানুয়ারি তাকে শিলিগুড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিত্যানন্দের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা সহ মোট সাতটি ধারায় মামলা রুজু করে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। মোট ৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর গতকাল জেলা দায়রা আদালতের বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় নিত্যানন্দকে দোষী সাব্যস্ত করেন। গতকাল নিত্যানন্দকে দু'দফায় এজলাসে তুলে আদালত রায় ঘোষণা করেন। যদিও, সাজা ঘোষণার পরও নিত্যানন্দ দাস নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছে। বিজয়া বসুর স্বামী তথা আত্রেয়ীর বাবা দেবাশিস বসু বলেন, "আমরা মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলাম। সেটা হলেই খুশি হতাম।"