বহরমপুর, 31 অগস্ট: দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আগেই ৷ এবার সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে সুশান্ত চৌধুরীর ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত ৷ বৃহস্পতিবার বহরমপুরের তৃতীয় (ফাস্ট ট্র্যাক) কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জেলা বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক ফাঁসির সাজা দিয়েছেন।
2022 সালের 2 মে বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকার একটি গার্লস হোস্টেলের সামনে প্রাক্তন প্রেমিকের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন সুতাপা চৌধুরী। চার ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে হেফাজতে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ তখন থেকেই অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রেখেই শুনানি চলছিল। মোট 34 জনের সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে সুশান্তকে দোষি সাব্যস্ত করেন বিচারক ৷ যদিও সুশান্তের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল একজন মেধাবী ছাত্র ৷ তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু আদালত মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে বলে জানান তিনি ৷ আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পাওয়ার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান আইনজীবী ৷
খুনের 15 মাস পর গত মঙ্গলবার সুশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ৷ ওইদিন আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুতপা চৌধুরীর বাবা স্বাধীন চৌধুরী। মেয়ের খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। বিচারক কী রায় দেবেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিল বহরমপুরবাসী। এর আগে মাত্র পাঁচদিন আগে এই এজলাসেই বিচারক একজনের ফাঁসির সাজা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিচারক কী রায় দেবেন সেদিকেই চেয়ে ছিলেন অনেকে।
2022 সালের 2 মে সন্ধ্যা নাগাদ বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকার একটি গার্লস হস্টেলের দরজার সামনেই সুতপা চৌধুরীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। পরে জানা যায় হাতে থাকা পিস্তলটি খেলনা ছিল। সেই ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী ছিলেন এলাকার বহু মানুষ। কিন্তু কেউ সেদিন সাহস করে এগিয়ে যেতে পারেনি। ঘটনার চার ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় খেলনা পিস্তল এবং খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটিও। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে দুটিই কেনা হয়েছিল অনলাইনে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি নাবালিকার ভুয়ো আধার-প্যান, আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রে কী ভূমিকা মুস্তাকের ?
সুতপা চৌধুরীর বাড়ি মালদার ইংলিশবাজার। দোষি সাব্যস্ত সুশান্তের বাড়ি মালদা। বহরমপুর গার্লস কলেজের ওই ছাত্রী গার্লস হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করতেন। ঘটনার দিন সুতপাকে ফোন করে ডেকে তাকে খুন করে সুশান্ত। ছ'মাসের মধ্যে ট্রায়াল শেষ করে 34 জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বাবা-সহ সাক্ষ্য দেন প্রত্যক্ষদর্শী, সাংবাদিক, অনলাইনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, পুলিশ।