কান্দি, ৩১ মে: রাজ্যজুড়ে সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টার নিয়ে নানান অভিযোগ উঠছে । কখনও কোয়ারানটিন সেন্টারে মিলছে না জায়গা । কখনও আবার সেন্টারগুলিতে পর্যাপ্ত খাবার, পানীয় জল, শৌচাগার না থাকার অভিযোগ উঠছে । এবার ভিন রাজ্য থেকে ফেরা মুর্শিদাবাদের কান্দির দুই যুবকেরও ঠাঁই হল না সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারে । বাধ্য হয়েই তাঁদের একটি পরিত্যক্ত স্থানে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ।
কান্দির বাসিন্দা সুকুমার কোনাই মুম্বইয়ে শ্রমিকের কাজ করতেন । ২৯ মে তিনি ফিরে আসেন জেলায় । নিয়ম মতো ফিরে আসার পর ১৪ দিন কোয়ারানটিন সেন্টারে থাকতে হবে । এদিকে ফেরার প্রথম দিনে একটি স্কুলের কোয়ারানটিন সেন্টারে থাকতে যান তিনি । কিন্তু সেখানে ঠাঁই মেলেনি বলে অভিযোগ । নিরুপায় হয়ে চাষের জমিতে রাত কাটাতে বাধ্য হন তিনি । পরদিন কান্দির কংগ্রেস বিধায়ক সফিউল আলম খানের সহায়তায় পরিত্যক্ত কংগ্রেসের পার্টি অফিসে ঠাঁই মেলে । যদিও সেখানে কোনও খাবারের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ । নেই শৌচাগারের কোনও ব্যবস্থাও । শৌচকর্মের জন্য বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে ঝোপঝাড়ে । স্নান করতে হচ্ছে ফাঁকা মাঠে ।
এদিকে মুর্শিদাবাদের কান্দির রূপপুরের বাসিন্দা দীপঙ্কর পাল । ২৪ মে সকালে বর্ধমানে এসে পৌঁছান তিনি । কানপুরের একটি ফার্টিলাইজার কম্পানিতে কাজ করেন । লকডাউন একটু শিথিল হওয়ায় কানপুর থেকে বাসে করে ২৪ মে সকালে বর্ধমানে আসেন । সেখান থেকে ফের গাড়ি করে সন্ধেয় নাগাদ কান্দি আসেন । জেলায় পৌঁছানোর পর প্রশাসনের তরফে কোনওরকম সহায়তা মেলেনি বলে অভিযোগ । স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাতে পারেননি ওই দিন । ঢুকতে পারেননি বাড়িতে । সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারেও ঠাঁই মেলেনি । বাড়ি ঢুকতে গেলে প্রতিবেশীদের বাধার মুখে পড়তে হয় । কান্দি থানার তরফেও কোনওরকম সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ । বাধ্য হয়ে সেইদিন রাতটা রাস্তাতেই কাটাতে হয় তাঁকে । বর্তমানে তিনিও সুকুমারবাবুর সঙ্গে ওই পরিত্যক্ত পার্টি অফিসেই থাকছেন । বর্তমানে তাঁরা খুবই কষ্টের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান । নূন্যতম সুযোগ-সুবিধা বিহীন পরিত্যক্ত এই বাড়িটিতে দিনযাপন কার্যত দুঃসহ হয়ে উঠছে । সরকারি সাহায্য না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা ।