জলঙ্গি, 29 জানুয়ারি : NRC-বিরোধী অবরোধকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থানার সাহেবনগর । অবরোধকারীদের উপর চলল গুলি ৷ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুইজনের ৷ জখম প্রায় 20 জন ৷ এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ৷ অবরোধকারীদের অভিযোগ, জলঙ্গি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তাহিরুদ্দিন মণ্ডলের নেতৃত্বে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা ৷ অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ৷
আজ সকালে ভারতীয় নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে সাহেবনগরে রাস্তা অবরোধ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ৷ অভিযোগ, সেই অবরোধ কর্মসূচিতে হামলা চালায় তৃণমূল নেতা তাহিরুদ্দিন মণ্ডল ও তার দলবল ৷ তারা এলোপাথাড়ি গুলি চালায় অবরোধকারীদের উপর ৷ গুলিবিদ্ধ হন একাধিকজন ৷ জখমদের ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে আনারুল বিশ্বাস (62) ও মকবুল সেখ (23)-কে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ গুরুতর জখমদের ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক । গুরুতর জখমদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল নেতা তাহিরুদ্দিনের ভাইও ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছে, তারও গুলি লেগেছে ৷
অবরোধকারীরা জানিয়েছে, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ করছিল ৷ অভিযোগ, সেখানে তাহিরুদ্দিন ও তার দলবল আচমকা হামলা করে ৷ তাদের কাছে বন্দুক ছিল ৷ দফায় দফায় বোমাবাজিও করে ৷ পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে ৷ অথচ পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ এলাকাবাসীদের অভিযোগ, মিছিলে হামলার পাশাপাশি এলাকার একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ৷ যদিও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে ৷
যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ দলের সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, "আমাদের কেউ এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয় ৷ আমাদের দলের তরফে রাজ্যজুড়ে CAA ও NRC-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে ৷ সাহেবনগরের লোকজন আমাদের মতোই একই ইশুতে প্রতিবাদ করছিল ৷ তাহলে আমরা কেন হামলা করতে যাব ? আমাদের নাম কেন জড়াল বুঝতে পারছি না ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ যারা দোষী তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে ৷"
জলঙ্গি থানার তরফে জানা গেছে, অশান্তির খবর পেয়ে সাহেবনগরে প্রচুর পুলিশ পাঠানো হয় ৷ এখনও সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে ৷ কারা এই হামলা করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভারতীয় নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে অবরোধ চললেও প্রতিবাদীরা আসলে AIMIM-র সদস্য ৷ এলাকায় AIMIM প্রভাব বিস্তারও করেছে ৷ এই বিষয়টি তৃণমূল কংগ্রেস ভালোভাবে নেয়নি ৷ সেই কারণেই এই হামলা ৷