জঙ্গিপুর, 30 মে: সাগরদিঘি উপনির্বাচনে রাজ্যের শাসকদলকে ধরাশায়ী করার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস। জেলা পুলিশের কাছে বারবার নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তিনি। জেলা পুলিশ বা রাজ্য সরকার উদাসীন থাকায় হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন বাইরন । রাতেও বাড়েনি নিরাপত্তারক্ষীর বহর ।
অবশেষে তৃণমূলের ঝান্ডা ধরতেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপ মিলল। বাড়ি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী পেলেন বাইরন বিশ্বাস। যদিও জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ডিজি সতীশ পশুমার্থী বলেন । এখনও আমার কাছে এমন কোনও নির্দেশ আসেনি । বর্তমানে বিধায়ক হিসাবে যে নিরাপত্তা রয়েছে সেটাই আছে ।
বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস । রাজ্য রাজনীতিতে বৃহস্পতিবার এটাই ছিল পালাবদলের অন্যতম ছবি । দলবদলের 24 ঘণ্টা যেতে না-যেতেই রাজ্য সরকারের কাছে উপঢৌকনও পেয়ে গেলেন বাইরন বিশ্বাস। আজ থেকেই বাড়ল তাঁর বিশ্বাসের নিরাপত্তা। বাড়িতে থাকবে আটজন সশস্ত্র পুলিশ। পাশাপাশি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেবে রাজ্য পুলিশের দু'জন দেহরক্ষী ।
মাত্র দিনকয়েক আগে 11 মে কলকাতা হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন বাইরন বিশ্বাস । যুক্তি হিসাবে দেখানো হয়েছিল, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিভিন্ন দিক থেকে আসছিল হুমকি ফোন। তার আগে জেলা পুলিশ ও রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে । এবার সেই রাজ্য সরকারই 'বিনিময় প্রথায়' তাঁকে উপহার হিসাবে নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিল ।
তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের দাবি, দলত্যাগ করার পরই বাইরনের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার ভেবেই সঠিক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কারণ কংগ্রেস ছাড়ায় এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় বাইরন নিরাপদ নয় । ফলে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন : বাইরনের বিশ্বাসঘাতকতায় শক্তি ক্ষয় হবে না, বিশ্বাস মুর্শিদাবাদ কংগ্রেস নেতৃত্বের
প্রসঙ্গত, বাইরন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরই সাগরদিঘির এক কংগ্রেস নেতা যিনি বাইরনের হয়ে নির্বাচনে প্রচার করায় জেল খেটেছেন তিনি কংগ্রেস কার্যালয়ে টাঙানো বাইরনের ছবি পুড়িয়ে প্রতিবাদ করেন । সাগরদিঘির কংগ্রেস শিবির বাইরন বিশ্বাসের উপর এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে যে নিরাপত্তার ঘেরাটোপ ছাড়া এই বিধায়কের সাগরদিঘি ঢোকাই মুশকিল। এমনটাই দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের। যদিও তৃণমূল শিবির বাইরন বিশ্বাসকে সাদরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য মুখিয়ে রয়েছে । যদিও জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এখনও তাঁর কাছে নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি ৷