কান্দি, 19 সেপ্টেম্বর: অত্যন্ত প্রাচীন কিছু পুজো রয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৷ এমনই এক 500 বছরেরও প্রাচীন পুজো এখনও অব্যাহত রয়েছে মুর্শিদাবাদের কান্দি শহরের বাঘডাঙা এলাকায় । যা বাঘডাঙা ভাঙাবাড়ির বুড়িমা নামে পরিচিত । সেই বাড়িতে প্রবেশ পথেই দরজার মাথার উপর লেখা কান্দির বাঘডাঙা ভাঙাবাড়ি পরিবারের পুজো ৷ দেবী এখানে বুড়িমা নামে পরিচিত ৷ বুড়িমা ছাড়াও সিনহা বাড়িতে নিত্য পুজো হয় জনার্দন প্রভু, তুলসী প্রভু, মা মনসা, জটাধারীদেব ও জিমূত বাহনের । দুর্গাপুজো হয় মানে এমন নয় যে কেবলমাত্র মা দুর্গারই আরাধনা করা হয় । তার আগে ধাপে ধাপে পুজো হয় বাড়িতে থাকা প্রাচীন দেবদেবীদের ।
প্রাচীনকাল থেকে এই পুজো প্রতিপদে ঘট ভরার পর থেকে শুরু হত । তবে 2000 সালের বন্যার পর থেকে ষষ্ঠীর দিনে সকালে ঘট ভরা হয় এবং ষষ্ঠীর রাতেই নবপত্রিকা স্থাপনের কাজ হয়ে যায় । সপ্তমীর সকালে শুধু নিয়ম অনুসারে ঘট ভরে পুজোর স্থানে নবপত্রিকা প্রবেশ করানো হয় । তবে দুর্গাপুজোর আগে সর্বপ্রথম নারায়ণের পুজো করা হয় ৷ তারপর সেই শিলামূর্তি ঘরের ভেতর রেখে দেওয়া হয় । জটাধারীতলায় এরপর শুরু হয় মা দুর্গার আরাধনা ।
সিনহা পরিবারের দুর্গা মা চতুর্ভূজা । সিনহা পরিবারের 16তম বংশধর অতনু সিনহার কথায়, "এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা বিকল সিংহ । ওনার নামে একটি পুকুর রয়েছে ৷ সেই পুকুরের মাটি দিয়েই প্রতিমা তৈরি হয় । চতুর্ভূজা দেবী বলে জগদ্ধাত্রী মন্ত্রে পুজো হয় ৷ সঙ্গে থাকে সাদা নরসিংহ । আগে মোষ বলি হত এখন তা বন্ধ । কেবলমাত্র ছাগ বলি হয় । সপ্তমীতে একটি, অষ্টমীতে দুটি এবং নবমীতে পাঁচটি মিলিয়ে মোট আটটি ছাগল বলি হয় । তার মধ্যে অষ্টমীতে যে ছাগল বলি হয় সেটি একেবারে সাদা ধবধবে হয় । ইষ্টমতে জগদ্ধাত্রী মন্ত্রে পূজিত হয় সিংহ বাড়ির দুর্গা এবং এই বলি যতক্ষণ চলে ততক্ষণ বাড়ির বউরা মাথায় জ্বলন্ত ধুনুচি নিয়ে থাকে ।"
বাড়ির কর্ত্রী তনুশ্রী সিনহার কথায়, "খুব ধুমধাম করে পুজো হয় ৷ সকলেই এই পুজোতে উপস্থিত থাকে । পুজোর শেষ দিনে চাল কুমড়ো বলি দেওয়া হয় । ষষ্ঠীর দিন থেকে রীতিমতো প্রতিটি নিয়ম মেনে দশমী পর্যন্ত পূজা অর্চনা হয় । এখানে একচালাতেই মায়ের সঙ্গে তার পুরো পরিবার থাকে ।
আরও পড়ুন : রাজ্যে চাকরি নেই, পলিটেকনিক ইঞ্জিনিয়ার হয়েও প্রতিমা তৈরি করে সংসার চালাচ্ছেন প্রদীপ