মালদা, 23 জানুয়ারি: 'দিদির সুরক্ষাকবচ' কর্মসূচিতে (Didir Suraksha Kavach) গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন 'দিদির দূত' জেলা পরিষদের সভাধিপতি । তাঁকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে দেখানো হল একাধিক রাস্তাঘাট । চোর চোর বলে ক্ষোভের সুরও শোনা গেল ক্ষিপ্ত জনতার গলায় । "চোরেদের টিকিট দেওয়া হবে না । আমি কথা দিচ্ছি ।" পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এমনই মন্তব্য করতে হল খোদ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকে ।
আজ দুপুরে ইংরেজবাজারের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাট্টারি এলাকায় দিদির রক্ষাকবচ কর্মসূচিতে যান জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন । সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ প্রতিভা সিংহ-সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা । ওই এলাকায় দিদির সুরক্ষাকবচের কথা বলতে গিয়েই সাধারণ মানুষ 'দিদির দূত' জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন । একগুচ্ছ অভিযোগের মধ্যে 'চোর' বলেও কটাক্ষ করতেও শোনা যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের । বিক্ষুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই আবার নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেন ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এগিয়ে আসতে হয় জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ প্রতিভা সিংহকে । গ্রামবাসীদের শান্ত করতে তিনি বলেন, "যারা চোর আছে, তারা টিকিট পাবে না ।" কিন্তু তাঁর এই কথাতেও শান্ত হননি স্থানীয় বাসিন্দারা । পরে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা জেলা সভাধিপতিকে ঘেরাও করে একের পর রাস্তা দেখাতে নিয়ে যান । আবাস যোজনার নথিপত্র নিয়ে এসেও দেখান । বিকেলে ফিরে এসে একসঙ্গে বসার কথা বলে কোনোরকমে এলাকা থেকে বেড়িয়ে আসেন তাঁরা ।
এটিএম রফিকুল হোসেন বলেন, “"এখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছু দাবি ছিল । হয়তো তা পূরণ হয়নি । এ নিয়ে তারা আমাকে জানালেন । অনেক অংশ নিজেও ঘুরে দেখেছি । ফের বিকেলে আমি এই এলাকার আসার কথা স্থানীয় বাসিন্দাদের জানিয়েছি । তাদের সঙ্গে বসে ওনাদের কী কী সমস্যা আছে, কেন তা সমাধান হয়নি তা দেখব । স্থানীয় আবাস যোজনার তালিকায় থাকা এক ব্যক্তির পাকা বাড়ি রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছে । স্থানীয়দের থেকে ওই ব্যক্তির আইডি নম্বর নিয়ে নিয়েছি । বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । যারা এই প্রকল্পের সুবিধে পাওয়ার যোগ্য অবশ্যই তাঁরা পরবর্তীতে এই সুবিধে পাবেন ।"
ঘটনার প্রসঙ্গে বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা পশ্চিমবঙ্গে পাঠাচ্ছে । কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, 100 দিনের কাজ থেকে শুরু করে সমস্ত প্রকল্পের টাকা মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না । তৃণমূলের লোকজন এই টাকা নয়ছয় করছে মানুষ তা বুঝে ফেলেছে । স্বাভাবিকভাবেই দিদির দূত রূপে নতুন কিছু চোরেদের এলাকায় পাঠিয়ে তৃণমূল মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে । মানুষ তা বুঝে ফেলেছে । সেই কারণে মানুষ তাদের গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না । ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে । কোনও কোনও এলাকায় এমন বিক্ষোভ হচ্ছে যেখানে পুলিশকে এসে তৃণমূলের লোকজনকে উদ্ধার করতে হচ্ছে । গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে একই ছবি দেখা যাচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে 'দিদির দূত' শতাব্দী রায়, নামলেনই না গাড়ি থেকে