মালদা, 14 মে : গাছ থেকে আম পেড়েছিল যুবক । শাস্তি হিসেবে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরিয়েছিল গাছের মালিক । তারপর আজ ঘর থেকে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । মৃত যুবকের নাম সাহিন আক্তার(18) । উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী । রতুয়া 1 ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাকাইয়া গ্রামের 2 নম্বর কলোনি এলাকার ঘটনা ।
মঙ্গলবার স্থানীয় শামিম আক্তারের গাছ থেকে আম পেড়েছিল সাহিন । শাস্তি দিতে জুতোর মালা পরিয়ে গ্রাম ঘুরিয়েছিল শামিম । এখানেই শেষ নয় । অভিযোগ, সাহিনের মুখে চুন-কালি মাখিয়ে ফের গ্রাম ঘোরানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল শামিম । তাই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে সাহিন । তবে, সাহিনের পরিবারের একাংশ ও বন্ধুদের দাবি, মুখে চুন-কালি মাখিয়ে গ্রাম ঘোরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে আত্মহত্যা করেনি সে । আসলে সাহিনের সঙ্গে শামিমের মেয়ের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল ৷ সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি শামিম । তাই আম পাড়ার অছিলায় সাহিনকে অপদস্ত করে শামিম । সেই কারণেই আত্মঘাতী হয় সাহিন । এই ঘটনায় সাহিনের বাবা পুলিশের কাছে চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতালে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷
সাহিনের আব্বা লাল মহম্মদ রতুয়া থানার পুলিশকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তাঁর ছেলে শামিম আক্তারের গাছ থেকে দু’একটি আম খাওয়ার জন্য পাড়ে ৷ তখন সেখানে থাকা এক যুবক সাহিনকে বাধা দেয় । তখন সাহিন ওই যুবককে বলে, "এটা আমার শ্বশুরের গাছ ৷ তাই আম ভাঙছি ৷" সাহিনের এই কথা ওই যুবক শামিমকে জানায় । এরপর মঙ্গলবার রাতেই দলবল নিয়ে তাঁদের বাড়িতে আসে ৷ সাহিনকে বেধড়ক মারধর করে ৷ তারপর হুমকি দিয়ে তখনকার মতো চলে যায় ৷ পরের দিন সকালে সাহিনকে রাস্তা থেকে তুলে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায় শামিম ও তার দলবল৷ এরপর সাহিনের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে সারা গ্রাম ঘোরায়৷ পাশাপাশি হুমকি দেয়, এরপর মুখে চুনকালি লাগিয়ে গ্রাম ঘোরাবে তারা । এই মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তাঁর ছেলে আজ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে ।
সাহিনের এক বন্ধু মহম্মদ সাদিকুল ইসলাম বলেন, "শামিমের মেয়ের সঙ্গে সাহিনের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল৷ এই সম্পর্ক শামিম মেনে নিতে পারেনি ৷ তাই গাছ থেকে আম ভাঙার ছুতো পেয়ে তারা সাহিনকে নিজেদের বাড়িতে ডাকে ৷ তারপর সাহিন তাদের বাড়ি গেলে অত্যাচার করে ৷ সাহিনের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয় ৷ শামিমরা বড়লোক৷ সেই কারণেই সাহিনকে তারা এভাবে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে ৷ আমরা এর প্রকৃত বিচার চাই ৷"
রতুয়া থানার OC কুণালকান্তি দাস জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে ৷