ETV Bharat / state

মালদায় বাড়ছে অল্পবয়সীদের মধ্যে হেলমেট না পরার প্রবণতা, সচেতন করতে তৎপর পুলিশ - young people not wearing helmets

মালদার 34 নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে ৷ তারপরেও হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে অল্পবয়সী ছেলেদের মধ্যে ৷ সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে খোদ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ৷ তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে জেলা পুলিশের তরফে লাগাতার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷

Malda
মালদায় দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর পুলিশ
author img

By

Published : Jan 21, 2021, 9:14 PM IST

মালদা, 21 জানুয়ারি : শহরে বাড়ছে যানবাহন । চারচাকার গাড়ির তুলনায় মোটরবাইক ও স্কুটারের সংখ্যাটা অনেক বেশি ৷ গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দু'চাকার যান যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনাও । মালদাও তার ব্যতিক্রম নয়। তারপরেও হেলমেট পরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না অল্প বয়সীদের মধ্যে ৷

মালদা জেলায় তিনটি জাতীয় সড়ক। তার মধ্যে 81 ও 512 নম্বর জাতীয় সড়কে যানবাহনের চাপ খানিকটা কম থাকলেও 34 নম্বর জাতীয় সড়কের সেই চাপ অসম্ভব বেশি । এই জাতীয় সড়ক উত্তরবঙ্গ-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দক্ষিণের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম । এছাড়াও জেলায় রয়েছে একাধিক রাজ্য সড়ক । এই রাস্তাগুলিতে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের বিষয় হয়ে উঠেছে । প্রাণহানির সংখ্যাও নেহাত কম নয় । এমনকী, মালদা শহরের রাস্তাতেও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে শহরের ভিতর দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর তেমন একটা শোনা যায় না ।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, 2018 সালে এই জেলায় বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল 936 । সেবছর প্রায় 50 জন বাইকআরোহী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন । কিন্তু অদ্ভুতভাবে 2019 ও 2020 সালের বাইক দুর্ঘটনা কিংবা রাতে মৃত্যুর কোনও তথ্য জেলা পুলিশের কাছে নেই । এই ব্যাপারে জেলার পুলিশকর্তারাও কোনও পরিসংখ্যান দিতে পারেননি। তবে 2020 সালে কোরোনা এবং লকডাউনে জেলায় বাইক দুর্ঘটনা তেমন হয়নি বললেই চলে । এই বছর মালদা শহরে বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে মাত্র 10টি । তাতে কারও মৃত্যুর খবর নেই । পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর জেলায় ছোটো-বড় মিলিয়ে দেড়শোর বেশি বাইক দুর্ঘটনা ঘটেনি ।

তবে, এখন অনেকেই সচেতন হয়েছে বলে দাবি জেলা পুলিশের ৷ তবে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা যে অল্পবয়সী ছেলেদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে, সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছে পুলিশ ৷ তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে জেলা পুলিশের তরফে লাগাতার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ জেলার ট্রাফিক ওসি বিটুল পাল জানাচ্ছেন, "বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । হেলমেটবিহীন বাইকের বিরুদ্ধে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাচ্ছি । শহরে ঢোকার মুখগুলিতে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চলছে । কখনও হেলমেটবিহীন চালকদের হাতে ফুল কিংবা চকোলেট দিয়েও আমরা তাদের সতর্ক করছি । সম্প্রতি আমাদের কাছে খবর এসেছিল, সন্ধের দিকে বাঁধ রোডে অল্পবয়সী কিছু ছেলে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছে । সেখানেও অভিযান চালানো হয় । হেলমেটবিহীন চালকদের আমরা প্রথমে আইন অনুযায়ী ফাইন করি। তারপরেও যদি তারা ফের একই কারণে ধরা পড়ে তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। উৎসবের দিনগুলিতে যাতে কেউ মদ্যপান করে বাইক না চালায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয় । "

বাড়ছে অল্পবয়সীদের মধ্যে হেলমেট না পরার প্রবণতা, মালদায় দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর পুলিশ

অন্যদিকে, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার বলছেন, "বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে তা ঠিক । এর কিছু কারণও রয়েছে । মোটরবাইকের সংখ্যা আগের থেকে যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে রাস্তার অবস্থাও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী । বাইকচালকদের হেলমেট ব্যবহারের জন্য আমরা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্পে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলাম । এতে অনেক মানুষ নিশ্চিতভাবে সচেতন হয়েছে । তবে কমবয়সী অনেক ছেলেমেয়ে বাইক চালানোর সময় হেলমেট পরছে না । ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেও তাদের অনেককে বাঁচানো যাচ্ছে না ।"

আরও পড়ুন, রাজ্যের ভোটে মিম কোনও ফ্যাক্টর নয়, কর্মীদের আশ্বাস মমতার


তবে কোরোনা সংক্রমণের জন্য হেলমেটবিহীন চালকদের জন্য এইবছর সেরকম ব্যবস্থা নিতে পারেনি মালদা পুলিশ ৷ একথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ জেলা পুলিশ সুপার ৷ এই বিষয়ে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, "কোরোনার জন্য আমরা হেলমেটবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নিতে পারিনি । সংক্রমণের জন্যই আমাদের খানিকটা থমকে যেতে হয়েছিল । এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে ৷ আমরা এনিয়ে ফের জোরদার অভিযান চালাব । গত দু'বছরে জেলায় বাইক দুর্ঘটনা কিংবা তাতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না । তবে একটা কথা বলতে পারি, হেলমেট পরে বাইক চালালে দুর্ঘটনা ঘটলেও আমরা অনেককে বাঁচাতে পারব । তার জন্য আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব।"

মালদা, 21 জানুয়ারি : শহরে বাড়ছে যানবাহন । চারচাকার গাড়ির তুলনায় মোটরবাইক ও স্কুটারের সংখ্যাটা অনেক বেশি ৷ গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দু'চাকার যান যত বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনাও । মালদাও তার ব্যতিক্রম নয়। তারপরেও হেলমেট পরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না অল্প বয়সীদের মধ্যে ৷

মালদা জেলায় তিনটি জাতীয় সড়ক। তার মধ্যে 81 ও 512 নম্বর জাতীয় সড়কে যানবাহনের চাপ খানিকটা কম থাকলেও 34 নম্বর জাতীয় সড়কের সেই চাপ অসম্ভব বেশি । এই জাতীয় সড়ক উত্তরবঙ্গ-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দক্ষিণের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম । এছাড়াও জেলায় রয়েছে একাধিক রাজ্য সড়ক । এই রাস্তাগুলিতে দুর্ঘটনা নিত্যদিনের বিষয় হয়ে উঠেছে । প্রাণহানির সংখ্যাও নেহাত কম নয় । এমনকী, মালদা শহরের রাস্তাতেও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। তবে শহরের ভিতর দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর তেমন একটা শোনা যায় না ।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, 2018 সালে এই জেলায় বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল 936 । সেবছর প্রায় 50 জন বাইকআরোহী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন । কিন্তু অদ্ভুতভাবে 2019 ও 2020 সালের বাইক দুর্ঘটনা কিংবা রাতে মৃত্যুর কোনও তথ্য জেলা পুলিশের কাছে নেই । এই ব্যাপারে জেলার পুলিশকর্তারাও কোনও পরিসংখ্যান দিতে পারেননি। তবে 2020 সালে কোরোনা এবং লকডাউনে জেলায় বাইক দুর্ঘটনা তেমন হয়নি বললেই চলে । এই বছর মালদা শহরে বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে মাত্র 10টি । তাতে কারও মৃত্যুর খবর নেই । পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর জেলায় ছোটো-বড় মিলিয়ে দেড়শোর বেশি বাইক দুর্ঘটনা ঘটেনি ।

তবে, এখন অনেকেই সচেতন হয়েছে বলে দাবি জেলা পুলিশের ৷ তবে হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা যে অল্পবয়সী ছেলেদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে, সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছে পুলিশ ৷ তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে জেলা পুলিশের তরফে লাগাতার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ জেলার ট্রাফিক ওসি বিটুল পাল জানাচ্ছেন, "বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । হেলমেটবিহীন বাইকের বিরুদ্ধে আমরা ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাচ্ছি । শহরে ঢোকার মুখগুলিতে বিভিন্ন দিন বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চলছে । কখনও হেলমেটবিহীন চালকদের হাতে ফুল কিংবা চকোলেট দিয়েও আমরা তাদের সতর্ক করছি । সম্প্রতি আমাদের কাছে খবর এসেছিল, সন্ধের দিকে বাঁধ রোডে অল্পবয়সী কিছু ছেলে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছে । সেখানেও অভিযান চালানো হয় । হেলমেটবিহীন চালকদের আমরা প্রথমে আইন অনুযায়ী ফাইন করি। তারপরেও যদি তারা ফের একই কারণে ধরা পড়ে তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। উৎসবের দিনগুলিতে যাতে কেউ মদ্যপান করে বাইক না চালায় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয় । "

বাড়ছে অল্পবয়সীদের মধ্যে হেলমেট না পরার প্রবণতা, মালদায় দুর্ঘটনা রুখতে তৎপর পুলিশ

অন্যদিকে, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার বলছেন, "বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের থেকে অনেকটা বেড়েছে তা ঠিক । এর কিছু কারণও রয়েছে । মোটরবাইকের সংখ্যা আগের থেকে যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে রাস্তার অবস্থাও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী । বাইকচালকদের হেলমেট ব্যবহারের জন্য আমরা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রকল্পে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিলাম । এতে অনেক মানুষ নিশ্চিতভাবে সচেতন হয়েছে । তবে কমবয়সী অনেক ছেলেমেয়ে বাইক চালানোর সময় হেলমেট পরছে না । ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেও তাদের অনেককে বাঁচানো যাচ্ছে না ।"

আরও পড়ুন, রাজ্যের ভোটে মিম কোনও ফ্যাক্টর নয়, কর্মীদের আশ্বাস মমতার


তবে কোরোনা সংক্রমণের জন্য হেলমেটবিহীন চালকদের জন্য এইবছর সেরকম ব্যবস্থা নিতে পারেনি মালদা পুলিশ ৷ একথা স্বীকার করে নিয়েছেন খোদ জেলা পুলিশ সুপার ৷ এই বিষয়ে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, "কোরোনার জন্য আমরা হেলমেটবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নিতে পারিনি । সংক্রমণের জন্যই আমাদের খানিকটা থমকে যেতে হয়েছিল । এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে ৷ আমরা এনিয়ে ফের জোরদার অভিযান চালাব । গত দু'বছরে জেলায় বাইক দুর্ঘটনা কিংবা তাতে কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না । তবে একটা কথা বলতে পারি, হেলমেট পরে বাইক চালালে দুর্ঘটনা ঘটলেও আমরা অনেককে বাঁচাতে পারব । তার জন্য আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নেব।"

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.