মালদা, 27 নভেম্বর: স্কুল রয়েছে 1984 সাল থেকে ৷ তবে এখনও সরকারি অনুমোদন মেলেনি ৷ বাম বা তৃণমূল, কোনও সরকারই গ্রামবাসী এবং স্কুল পরিচালন কমিটির আবেদনে কর্ণপাত করেনি ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশও উপেক্ষিত বলে অভিযোগ ৷ ইতিমধ্যেই স্কুলের জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন জমিদাতার উত্তরসূরীরা ৷ তার বায়নাও হয়ে গিয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে এলাকার ছেলেমেয়েদের স্বার্থে রুখে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ৷ স্কুলের জমি বিক্রি রুখতে তাঁরা প্রশাসনের সব মহলে আবেদন জানিয়েছেন ৷ নিজেদের দাবির সমর্থনে সোমবার তাঁরা স্কুলের সামনে বিক্ষোভও দেখান ৷ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও ৷
ঘটনাটি পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলদিঘি গ্রামের ৷ স্কুলের নাম কমলদিঘি সরকারু সরকার জুনিয়র হাইস্কুল ৷ ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলদিঘি মৌজায় অবস্থান ৷ এলাকাটি 12 নম্বর জাতীয় সড়কের চেঁচু মোড়ে ৷ মূলত আদিবাসী ও রাজবংশী সমাজের ছেলেমেয়েরাই এই স্কুলে পড়াশোনা করে ৷
এলাকাবাসী সঞ্জীব রাজবংশী বলেন, "জন্মের পর থেকে এই স্কুল আমরা দেখে আসছি ৷ স্কুলের জন্য গ্রামের একজন জমি দান করেছিলেন ৷ সেই জমি স্কুলের নামেই আছে ৷ কিন্তু স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, জমিদাতার ওয়ারিশদের সঙ্গে কিছু প্রোমোটার স্কুলের জায়গা বিক্রি করতে চায় ৷ তারা স্কুল ভবন ভাঙছে, চত্বরের গাছ কেটে দিয়েছে, এমনকী স্কুলের পিছনে থাকা পুকুরের অর্ধেক অংশ ভরাট করে দিয়েছে ৷ আমরা প্রশাসনের আট জায়গায় শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ মালদা থানার পুলিশ ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে ৷ স্কুলে যাবতীয় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ৷ স্কুলে পুলিশ রয়েছে ৷ আমরা এই স্কুল কিছুতেই বিক্রি করতে দেব না ৷ প্রয়োজনে আরও বড় আন্দোলনে নামব ৷"
স্কুলের জমিদাতার ওয়ারিশ দীপঙ্কর সরকারের বক্তব্য, "এতদিনেও স্কুলটি সরকারি অনুমোদন পায়নি ৷ তাই ম্যানেজিং কমিটিকে আমরা বলি, তারা স্কুলের সরকারি অনুমোদন করাতে না-পারলে জমি যেন সরকারু সরকারের ওয়ারিশদের ফেরত দেওয়া হয় ৷ ম্যানেজিং কমিটি আমাদের জানায়, তারা সেটা পারবে না ৷ তাই আমরা এই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই ৷ এটা রায়তি সম্পত্তি ৷ খাস জমি নয় ৷ ফলে আমরা নিজেদের রায়তি সম্পত্তি ফেলে রাখতে পারি না৷ তবে এখনও জমি বিক্রি করা হয়নি ৷"
ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক শ্রীদাম সরকার বলেন, "আমাদের পক্ষে স্কুল চালানো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ তাই আমরা স্কুলের জমি ফেরৎ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই ৷ তাঁরা এই জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৷ বায়নাও হয়ে গিয়েছে ৷" বিষয়টি জানানো হলে পুরাতন মালদার বিডিও সেঁজুতি পাল মাইতি জানান, এ নিয়ে কিছুই জানা নেই তাঁর ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: