মালদা, 5 সেপ্টেম্বর: জল কমছে গঙ্গার ৷ ফের বাড়ছে ভাঙন ৷ তবে বিপদ এখনও কাটেনি ৷ সেপ্টেম্বরে উত্তর ভারতের জল নীচে নেমে আসলে আরও একবার নদীর জলস্তর বাড়বে ৷ আবারও গঙ্গাতীরের বেশ কিছু গ্রামে নদীর জল ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে ৷ এ দিকে ভাঙনের আতঙ্কে নদীর ধারে থাকা নিজেদের তৈরি ঘরবাড়ি ভাঙার কাজ চালিয়েই যাচ্ছেন বিপন্নরা ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে মানিকচক, সব জায়গায় এক ছবি ৷ অনেকে বাড়িঘর হারিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন ৷ অনেকে আবার নদীবাঁধের উপর মাথা গোঁজার সাময়িক আস্তানা বানিয়েছেন ৷ তাঁরা চাইছেন, প্রশাসন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক ৷ মাথার উপর ছাদ তৈরির সরকারি জায়গা দিক ৷ জেলাশসাক জানিয়েছেন, দুর্গতদের কথা প্রশাসনের মাথায় রয়েছে ৷ ভাঙনে বিপন্ন মানুষের পাশে প্রশাসন সবসময় রয়েছে ৷
রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের কান্তটোলার বাসিন্দা নিরঞ্জন মণ্ডল বলছেন, "একটা সময় গঙ্গা 37 কিলোমিটার দূরে মহারাজপুরের পাশ দিয়ে বইত ৷ এখন সেই নদী আমাদের গ্রামে ঢোকার জায়গা খুঁজছে ৷ এই মুহূর্তে গ্রামের বাড়িঘর থেকে মাত্র 10 মিটার দূরে নদীর জল ৷ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের ঘর সরিয়ে নিয়েছে ৷ যারা এখনও ঘর সরায়নি, তারা সরানোর চিন্তাভাবনা করছে ৷ গোটা ঘটনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে ৷ কিন্তু কারও কোনও হেলদোল নেই ৷ আমরা কোথায় যাব, তার কোনও ঠিকানা নেই ৷ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, ঘর বাঁধার জন্য আমাদের সরকারি খাস জমি দেওয়া হোক ৷"
একই বক্তব্য মানিকচকের গোপালপুরের জাহিরুদ্দিন শেখের ৷ তাঁর কথায়, "গঙ্গার দাপটে এর আগে চারবার ভিটেহারা হয়েছি ৷ পঞ্চমবারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ৷ এই নদীর ভাঙন নিয়ে শুধু রাজনীতি চলে ৷ ঠিকাদারের পকেট ভরে ৷ আমাদের দুর্ভাগ্য বাড়তে থাকে ৷ খেটে খাই ৷ পয়সা জমে না ৷ তাই উঁচু জায়গায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করা আমাদের মতো মানুষের স্বপ্ন ৷ এখন প্রশাসন যদি আমাদের পুনর্বাসনের জন্য তেমন জায়গা দেয়, তাহলে অন্তত ছেলে-নাতিদের আমার মতো প্রাণ বাঁচাতে ছুটে বেড়াতে হবে না ৷"
আরও পড়ুন: ঘরের নীচে গঙ্গা, আতঙ্কে অন্তত একশো বাড়ি ভেঙে দিলেন গ্রামবাসীরাই
জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, ভাঙন উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের জন্য খাস জমি খোঁজা হচ্ছে ৷ এখনও পর্যন্ত তেমন খাস জমি প্রশাসনের নজরে আসেনি ৷ বিপন্ন মানুষজনের পাশে প্রশাসন সবসময় রয়েছে ৷ একইসঙ্গে ভাঙনের গতিপ্রকৃতির উপর সেচ দফতর নজর রেখে চলেছে ৷