মালদা, 23 নভেম্বর : বয়স মাত্র 1 সপ্তাহ ৷ তার মধ্যেই রাস্তার কঙ্কাল বেরিয়ে পড়তে শুরু করেছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল 1 ব্লকের মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বরূপগঞ্জ থেকে মল্লিকপাড়া যাওয়ার নবনির্মিত রাস্তায় ৷ এর প্রতিবাদে আজ তুমুল বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা ৷ স্বরূপগঞ্জ মোড়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধে শামিল হয় এলাকার মানুষজন ৷ প্রায় 5 ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখানোর পর ঘটনাস্থানে উপস্থিত হয় প্রশাসনের লোকজন ৷ নতুন তৈরি রাস্তার পরিস্থিতি দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা ৷ তারপরেই অবরোধ তুলে নেওয়া হয় ৷ তবে এই ঘটনায় স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য বন্দনা ঘোষ ও ঠিকাদার সংস্থার দিকেই আঙুল তুলেছে বিক্ষোভকারীরা ৷ বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে শাসকদল ৷
দীর্ঘ 14-15 বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিল স্বরূপগঞ্জ থেকে মল্লিকপাড়া যাওয়ার রাস্তাটির ৷ তার আগে এই রাস্তা পিচের ছিল বলে জানাচ্ছে স্থানীয়রা ৷ তারা বেশ কিছুদিন ধরেই রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছিল ৷ শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পে প্রায় 1 কিলোমিটার এই রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ ৷ তার জন্য বরাদ্দ হয় 9 লাখ 21 হাজার টাকা ৷ মাত্র 7 দিন আগে রাস্তায় কংক্রিট ঢালাই করা হয় ৷ কিন্তু এর মধ্যেই ওই রাস্তার কঙ্কাল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে ৷ ভেঙে যাচ্ছে কংক্রিট ৷ ফাটল ধরেছে বিভিন্ন জায়গায় ৷ এরই প্রতিবাদে আজ এলাকাবাসী বিক্ষোভে শামিল হয় ৷ তাদের দাবি, কংক্রিট আর নয়, আগের মতো এই রাস্তা পিচের করা হোক ৷
আজ পথ অবরোধে শামিল আসাদুল হক বলেন, “স্বরূপগঞ্জ থেকে মল্লিকপাড়ার হাড়িয়ান মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি 14-15 বছর ধরে কোনও সংস্কার করা হয়নি ৷ আগে এই রাস্তাটি পিচের ছিল ৷ রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য আমরা একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি ৷ আমাদের দাবি ছিল, রাস্তাটি ফের পিচেরই করে দেওয়া হোক ৷ কিছুদিন আগে পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় জেলা পরিষদ ৷ এর জন্য 9 লাখ 21 হাজার 174 টাকা বরাদ্দ করা হয় ৷ 7 দিন আগে রাস্তার ঢালাই হয়েছে ৷ কিন্তু এর মধ্যেই রাস্তা ভেঙে গিয়েছে ৷ পরিকল্পনা মতো রাস্তাটি চওড়া করা হয়নি ৷ ঢালাইয়ের মাপেও গরমিল রয়েছে ৷ অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে ৷ সিমেন্টের ভাগও সঠিক ছিল না ৷ অর্থাৎ এই রাস্তা নির্মাণে শুধুই দুর্নীতি আর কাটমানির খেলা চলেছে ৷ আমাদের দাবি, যারা এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক ৷”
আজ ওই এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য বন্দনা ঘোষকে পাওয়া যায়নি ৷ তবে এনিয়ে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু দাবি করেন, “মহানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পথশ্রী প্রকল্পে প্রায় 1 কিলোমিটার একটি রাস্তার কাজ নিয়ে স্থানীয় মানুষ অভিযোগ তুলেছে ৷ আমরা দলীয় স্তরে জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর সূত্রে জানতে পেরেছি, কাঁচা অবস্থায় ওই রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় নতুন রাস্তার এই পরিস্থিতি ৷ তবু জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও ইঞ্জিনিয়ারদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ৷ প্রয়োজনে ওই ঠিকাদার সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে ৷”