মালদা, 15 জানুয়ারি : পড়ুয়াদের নম্বর বৃদ্ধির দাবিতে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল শাসকদলের ছাত্র সংগঠন, টিএমসিপি৷ গতকাল,ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল কলেজে৷ দীর্ঘ বিক্ষোভের পর টিএমসিপি সদস্যরা নিজেদের সাত দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাতে তুলে দেয়৷ এই বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক বাবু সরকার৷ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন টিএমসিপির চাঁচল 1 নম্বর ব্লক সহ চাঁচল কলেজ ইউনিটের নেতা-কর্মীরা ৷ দুপুর থেকে শুরু হওয়া টিএমসিপির এই বিক্ষোভ সন্ধে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চলে৷
বাবু সরকারের অভিযোগ, “কলেজের প্রথম বর্ষের প্রথম সেমেস্টারে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টে পড়ুয়াদের খুব কম নম্বর দেওয়া হয়েছে৷ কাউকে তিন, কাউকে পাঁচ নম্বর দেওয়া হয়েছে৷ অনেকে পরীক্ষা দিলেও তাদের অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে৷ আমাদের দাবি, ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টে প্রত্যেক পড়ুয়াকে 60 থেকে 80 শতাংশ নম্বর দিতে হবে৷ এছাড়া 2018, 19 ও 20 সালে অনেক পড়ুয়া প্রথমে পাস কোর্সে ভরতি হয়েছেন ৷ পরে অনার্সের তালিকায় নাম উঠলে তাঁরা অনার্সে ভরতি হয়েছেন৷ অর্থাৎ তাঁদের দু’দফায় ভরতির টাকা কলেজে জমা দিতে হয়েছে৷ এই কলেজে মূলত গরিব ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করেন ৷ কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রথম ভরতির টাকা এখনও ফেরত দেয়নি৷ এমনকী সেই কয়েক লাখ টাকা কোন ফান্ডে জমা রয়েছে তাও জানা যাচ্ছে না৷ কেন সেই টাকা পড়ুয়াদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে না, তা কাউকে জানানো হচ্ছে না৷ এই কলেজে আগে এনসিসি চালু ছিল৷ এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ কলেজে এনসিসি ফিরিয়ে আনতে হবে৷ এমনই সাত দফা দাবিতে আজ আমরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেছি৷ কলেজের প্রশাসক না আসা পর্যন্ত আমাদের বিক্ষোভ চলতে থাকবে৷ সেকথা আমরা অধ্যক্ষকেও জানিয়ে দিয়েছি৷ তিনি তিন বছর ধরে আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আসছেন৷ তাই মহকুমাশাসক না আসা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরছি না৷”
অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, “আজ ছাত্র সংগঠনের তরফে যে দাবিগুলি করা হয়েছে তা খুব একটা অসঙ্গত নয়৷ আমিও তাদের দাবিগুলির সঙ্গে সহমত৷ এর মধ্যে যে দাবিগুলি আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব, তা পূরণ করব৷ তবে ভরতির হওয়া পড়ুয়াদের টাকা ফেরতের জন্য প্রয়োজনীয় নথি এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর আমাদের দিতে হবে৷ আমরা এর আগেও সেটা জানিয়েছিলাম৷ ভরতি সংক্রান্ত দাবিতে আমার কিছু করার নেই৷ রাজ্য সরকার 15 ডিসেম্বরের পর কলেজে ভরতি বন্ধ করে দিয়েছে৷ তবু আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব৷”
যদিও সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ কলেজের প্রশাসক, চাঁচলের মহকুমাশাসক ফোন মারফত বিক্ষোভকারীদের জানান, ছাত্র সংগঠনের দাবি নিয়ে তিনি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন৷ এরপরেই টিএমসিপি সদস্যরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের হাতে নিজেদের দাবিপত্র তুলে দেয়৷ ঘোরাওমুক্ত হন অধ্যক্ষ৷ মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল জানান, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে৷ ছাত্রদের দাবি নিয়ে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলব৷ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে৷”