মালদা, 24 ফেব্রুয়ারি: প্রকাশ্য রাস্তায় মেয়েদের নাইটি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ৷ সোশাল মিডিয়ায় সেই দৃশ্য মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল ৷ যে জনপ্রতিনিধি কিছুদিন আগে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, রতুয়া কেন্দ্রে শাসকদলের প্রার্থী হতে চলেছেন তিনি, ভোটের মুখে তাঁর কি তবে কোনও মানসিক সমস্যা দেখা দিল? দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সেই জল্পনা ৷
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এই ভিডিও ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মালদা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সামসুল হক জামার উপর মেয়েদের নাইটি পরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ সেই অবস্থায় তিনি একটি চায়ের দোকানেও বসেছেন ৷ সেখানেই তাঁর ভিডিও শুট করা হয় ৷ যিনি সেই ভিডিও শুট করেন, তিনি সামসুল সাহেবকে বারবার বলছেন, ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড করা হবে ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ভিডিও দেখবেন ৷ তাতেও কোনও ভ্রূক্ষেপ দেখা যায়নি সামসুল সাহেবের ৷ উলটে তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়েন ৷ ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় আপলোড হতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে জেলাজুড়ে ৷
সামসুল সাহেব রতুয়ার বাসিন্দা ৷ রতুয়া থেকেই জেলা পরিষদ আসনে নির্বাচিত হন তিনি ৷ দীর্ঘদিন ধরে জেলার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এই প্রবীণ রাজনীতিক ৷ কিছুদিন আগেই তিনি একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়েছিলেন, একুশের ভোটে রতুয়া কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে গিয়েছে ৷ কিন্তু ভোটের মুখে তাঁর এহেন আচরণে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷ তবে এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই তিনি সংবাদমাধ্যমের ফোন ধরেননি ৷ তিনি কোথায় আছেন, তাও কেউ বলতে পারছেন না ৷ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি রতুয়া-1 ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হকও ৷
তবে ভোটের আগে এমন খোরাক হাতছাড়া করতে রাজি নন বিরোধীরা ৷ সিপিএমের রতুয়া-1 ব্লকের লোকাল কমিটির সম্পাদক জুহুর আলম বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোটা আমাদের রুচিতে বাধে ৷ এই আমলে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি যে শেষ হয়ে গিয়েছে, শাসকদলের নেতাদের কার্যকলাপেই তা ফুটে উঠছে ৷ আমরা আলকাপ, পঞ্চরস গান দেখেছি ৷ সার্কাসের জোকারও দেখেছি ৷ মানুষের হাসির খোরাক হিসাবে অস্বাভাবিক কিছু পোশাক পরিয়ে জোকারদের হাজির করা হত। এই নেতারাও এখন হাস্যকৌতুকের জায়গায় চলে গিয়েছেন ৷ এঁরা এখন শেষ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন ৷ মানুষ এঁদের উৎখাত করবে ৷ রাজনৈতিক দলের কার্যকলাপ সাধারণ মানুষকে নিয়ে হতে পারে ৷ কিন্তু এই দলের নেতারা এখন মেয়েদের পোশাক পরে রাস্তায় ঘুরছেন ৷ এঁদের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে রুচিতে বাধছে ৷’’
বিষয়টি নিয়ে বিজেপির 21 নম্বর জেলা পরিষদ মণ্ডল কমিটির সভাপতি সুকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘একজন জনপ্রতিনিধি নাইটি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ এনিয়ে কিছু না বলাই ভালো ৷ এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় ৷ তবে এখন তৃণমূলের বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে ৷ আগামীতে তিনি কীভাবে কাটাবেন, সেটাই আজ পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নাইটি পরে ঘুরে বেড়িয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ৷’’