মালদা, 20 ডিসেম্বর : দলবদলের জেরে পঞ্চায়েতের রং বদল বর্তমানে এ রাজ্যের চেনা ট্রেন্ড ৷ এবার সেই তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলল পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ৷ বিজেপির হাত থেকে এই পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সোমবার ছিল পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান নির্বাচন ৷ সেই পদে দায়িত্ব পেলেন তৃণমূলের অনীককুমার ঘোষ (Sahapur New Panchayat Pradhan) ৷ প্রসঙ্গত, এই প্রথম মালদা সাহাপুর পঞ্চায়েতের দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷
আরও পড়ুন : Siliguri TMC Joining : শিলিগুড়িতে বিজেপির ভাঙন, তৃণমূলে যোগ কর্মী-সহ একাধিক নেতার
সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন 23 ৷ গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি 13টি, কংগ্রেস ও তৃণমূল চারটি করে এবং সিপিএম ও নির্দল একটি করে আসনে জয়লাভ করে ৷ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে পঞ্চায়েত বোর্ড গড়ে বিজেপি ৷ প্রধান পদে নির্বাচিত হন উকিল মণ্ডল ৷ সম্প্রতি বিজেপি ও কংগ্রেসের তিনজন করে মোট ছ’জন সদস্য শাসকদলে যোগ দেন ৷ সিপিএম ও নির্দলের দুই সদস্যও নাম লেখান তৃণমূলে ৷ ফলে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা বেড়ে হয় 12 ৷ বিজেপি ও কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব কমে হয় যথাক্রমে 10 ও এক ৷
এরপর একক সংখ্যা গরিষ্ঠতার জেরে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল ৷ প্রশাসনিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জেলা ছাড়তে না ছাড়তেই গত 10 ডিসেম্বর সেই প্রক্রিয়া সেরে ফেলে ঘাসফুল শিবির ৷ 11-12 ভোটে হেরে যান উকিল মণ্ডল ৷ সোমবার তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে বেছে নেওয়া অনীককুমার ঘোষকে ৷ এতদিন তিনি ছিলেন পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা ৷
এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছে গেরুয়া শিবির ৷ এনিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষও করেছে তারা ৷ বিজেপির অভিযোগ, গত 10 ডিসেম্বর আস্থাভোটের সময় তাদের সদস্যদের ‘হাইজ্যাক’ করেছিল তৃণমূল ৷ মানতে নারাজ শাসকপক্ষ ৷ এই প্রসঙ্গে নতুন পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘সাহাপুর বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ছিল ৷ সেই ঘাঁটি থেকে তাদের সরাতে পেরে আমরা খুবই খুশি ৷ মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে, কোনও কাজ না করে বিজেপি ভুল করেছিল ৷ তাই ওদের প্রতি মানুষের ঘৃণা জন্মে গিয়েছে ৷ আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব ৷ যাতে মানুষ আগামী অন্তত 25-30 বছর তৃণমূলকেই জয়যুক্ত করেন ৷’’
আরও পড়ুন : Surajit Saha Joins TMC : তৃণমূলে যোগ হাওড়া সদরের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতির
অন্যদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি তাপসকুমার গুপ্ত বলেন, “সাহাপুরের মানুষের কাছ থেকে তৃণমূল তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিল ৷ এটা গণতন্ত্রকে হত্যা করা ছাড়া আর কিছু নয় ৷ বাংলাজুড়েই এসব চলছে ৷ রবিবার কলকাতা পৌর নির্বাচনে বিরোধীদের কীভাবে মারা হয়েছে, ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তা সবাই দেখেছেন ৷ তবে যাই হোক না কেন, সাহাপুরের মানুষ আগামী দিনে তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দিতে আমাদের সঙ্গেই থাকবেন বলে আশা রাখি ৷’’