মালদা, 5 ডিসেম্বর: মালদা জেলার একমাত্র শিল্পাঞ্চল পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে ৷ সেই শিল্পতালুকের গা ঘেঁষে রয়েছে ভাবুক, আমতলা, বিষ্ণুপুর -সহ কয়েকটি গ্রাম ৷ গ্রামগুলিতে বসবাস করে অন্তত দেড় হাজার পরিবারের ৷ গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সম্প্রতি শিল্পতালুকে একটি স্টার্চ তৈরির কারখানা খুলেছে অম্বুজা গোষ্ঠী ৷ মাসখানেক ধরে সেই কারখানার চিমনি দিয়ে উড়ে আসছে ছাই ৷ যার ফলে সুস্থভাবে বসবাস করাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ ক্ষতি হচ্ছে কৃষিজমিরও ৷ এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল এলসাকাবাসী ৷
আমতলা গ্রামের বাসিন্দা বিশু মণ্ডল বলেন, "হাজার পাঁচেক পরিবারের বসবাস এই গ্রামে ৷ মাসখানেক ধরে অম্বুজা গোষ্ঠীর কারখানার চিমনি থেকে বেরিয়ে আসা ছাইয়ের কারণে সমস্যায় পড়েছি ৷ এত ছাই উড়ছে যে ঠিকমতো চলাফেরা করা যাচ্ছে না ৷ এই ছাই চোখে একবার পড়লে 3-4 দিনের আগে জ্বালা কমে না ৷ রান্না করা খাবার, পানীয় জল খোলা থাকলেও ছাই পড়ছে ৷ বাড়ির খাবারটুকুও খাওয়া যাচ্ছে না ৷ এর আগেও একবার একই সমস্যা হয়েছিল ৷ পরে চিমনি পালটে ফেললে সমস্যার সমাধান করেছিল ৷ দ্রুত সমস্যার সমাধান না-হলে আমরা কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখাব ৷" ওই বাসিন্দার বক্তব্যের রেশ টেনেই গ্রামবাসী রীতা মণ্ডল বলেন, "দিন-রাত ছাই উড়ছে ৷ এমনকী শীতের সকালেও নিস্তার নেই ৷ রান্না করা সমস্যা হয়ে গিয়েছে ৷ কাপড় শুকোতে দিলে কালো হয়ে যাচ্ছে ৷ জল রাখলে মুহূর্তের মধ্যে ছাই পড়ছে ৷ ঠিকমতো নিঃশ্বাস নিতে পারছি না ৷ বাচ্চারা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না ৷ আমরা চাই, ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোনও ব্যবস্থা নিক ৷"
মালদা ইন্ডাস্ট্রিয়াল চেম্বার অফ কমার্সের প্রাক্তন সম্পাদক সুভাষ হালদারের কারখানাও এই শিল্পতালুকে ৷ তাঁর কথায়, "বিষয়টি আমাদের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি ৷ তারাও পদক্ষেপ নিচ্ছে ৷ শুধু আমতলা নয়, আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে ছাই উড়ে পড়ছে বলে খবর পেয়েছি ৷ এতে চাষেরও ক্ষতি হচ্ছে ৷ এই ঘটনায় মানুষের যে সমস্যা হচ্ছে, তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই ৷ তবে আশা করছি, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ৷"
অম্বুজা গোষ্ঠীর যে কারখানা থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত, তার ম্যানেজার রঞ্জন নিয়োগীও সমস্ত বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন ৷ তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন কারখানার চিমনিতেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে 80 শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে ৷ টেকনিশিয়ানরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন ৷ সাত-আটদিনের মধ্যে সমস্যা পুরোপুরি মিটে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: