মালদা, 17 জানুয়ারি: স্কুলের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাচ্চাদের পিষে দিল পণ্যবাহী গাড়ি ৷ কেন স্কুলের সামনে স্পিড ব্রেকার নেই, এমনই প্রশ্ন তুলে শিক্ষকদের উপর চড়াও হলেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ ঘটনার ভিডিয়ো করতে গেলে মোবাইল ভাঙচুর করে শিক্ষককে মারধরও করা হয় (Malda Teacher Beaten UP)৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৷ এই নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইংরেজবাজারের (Malda News) বুধিয়া এলাকায় ৷
ইংরেজবাজারের বুধিয়া এলাকায় রয়েছে বুধিয়া হাইমাদ্রাসা ৷ পাশেই রয়েছে বুধিয়া ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুল ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো গতকালও পড়ুয়ারা স্কুলে গিয়েছিল ৷ কিন্তু দেরি হয়ে যাওয়ায় বুধিয়া ম্যানেজড প্রাইমারি স্কুলের গেট বন্ধ হয়ে যায় ৷ গেট খোলার অপেক্ষায় স্কুলের সামনে দাঁড়িয়েছিল কিছু খুদে পড়ুয়া ৷ সেই সময় পণ্যবাহী একটি ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই বাচ্চাগুলিকে ধাক্কা মারে ৷ হাইমাদ্রাসার সম্পাদক-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে পাঠান ৷
এদিকে, ঘটনার পর স্কুলের সামনে স্পিড ব্রেকার নেই কেন, এই প্রশ্ন তুলে অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ অভিযোগ, এরপরেই হাইমাদ্রাসায় ঢুকে পড়েন স্থানীয় পাঁচ যুবক ৷ তাঁদের মধ্যে তিনজন ওই হাইমাদ্রাসারই প্রাক্তন ছাত্র ৷ স্কুলের স্টাফ রুমে ঢুকে শিক্ষকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন ওই যুবকরা ৷ সেই ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করতে গেলে মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক তুষারকান্তি মণ্ডলকে বেধড়ক মারধর করা হয় ৷ এমনকী তাঁর ফোন ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ৷
আরও পড়ুন: 24 ঘণ্টার মধ্যে আত্মঘাতী 2 সিআইএসএফ জওয়ান !
এ নিয়ে গতকাল রাতে ইংরেজবাজার থানা ও বিডিওকে অভিযোগ জানিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষকরা ৷ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, “আমাদের স্কুলের পাশে একটি প্রাথমিক স্কুল আছে ৷ স্কুলের গেট বন্ধ থাকায় কিছু বাচ্চা স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ৷ গতকাল সকাল 10টা 20 নাগাদ মালদা থেকে একটি ছোট গাড়ি ডিম নিয়ে পুকুরিয়ার দিকে যাচ্ছিল ৷ ওই এলাকায় পৌঁছতেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাচ্চাদের ধাক্কা মারে ৷ একটি বাচ্চা গুরুতর আহত হয় ৷ আর দুটি বাচ্চার সামান্য আঘাত লাগে ৷ আমাদের স্কুলের সম্পাদক ওই বাচ্চাগুলোকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন ৷ গুরুতর আহত বাচ্চাটিকে সম্ভবত কলকাতায় রেফার করা হয়েছে ৷ এরপর স্কুলের সামনে কেন স্পিড ব্রেকার নেই এ নিয়ে স্থানীয় কিছু যুবক স্কুল চত্বরে চড়াও হয় ৷ সম্ভবত এলাকায় ওরা অবরোধও করেছিল ৷ তবে বিষয়টি আমার সঠিক জানা নেই ৷ ওরা যে কোনও সময় যে কোনো কারণ নিয়ে স্কুলের উপর ক্ষোভ দেখায় ৷ আমরা নিজেরা স্পিড ব্রেকার বসাতে পারি না ৷ এই নিয়ে আমরা থানার আইসি, ট্রাফিক ওসি থেকে সর্বস্তরে জানিয়েছিলাম ৷ চিঠি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে ৷"
শিক্ষকদের উপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষককে গলা টিপে ধরে মারধর করা হয় ৷ ওই শিক্ষকের মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয় ৷ অন্যান্য শিক্ষকরা কোনওমতে তাঁকে উদ্ধার করেন ৷ যাওয়ার সময় ওই যুবকরা ফের হুমকি দিয়ে যায় বলে অভিযোগ ৷ বর্তমানে আক্রান্ত শিক্ষক মালদা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ৷ এই ঘটনার পরে স্টাফ কাউন্সেলিংয়ের বৈঠক ডাকা হয় ৷ সেই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল রাতে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে ৷ অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিওকেও ৷ জেলাশাসকের সঙ্গেও দেখা করবেন শিক্ষকরা ৷