মালদা, 1 অক্টোবর : টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের নম্বর দেওয়া হচ্ছে। চাঁচল কলেজের দুটি বিভাগের শিক্ষকদের একাংশের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। একই অভিযোগ তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরও ৷ এ নিয়ে আজ চার ঘণ্টা ধরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল কলেজে ৷ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ৷ আশ্বাস পাওয়ার পর এদিনের মতো আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে ৷
কলেজের ছাত্র অঙ্কুর দাস বলেন, "কলেজের বাংলা ও আরবি বিভাগের শিক্ষকরা টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের নম্বর বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা ৩০০-৪০০ টাকা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নম্বর বাড়িয়ে দিয়েছেন। যাঁরা টাকা দিতে পারেনি, তাঁদের নম্বর বাড়েনি। এর প্রতিবাদে আজ আমরা অধ্যক্ষের ঘরে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। অধ্যক্ষ-সহ অন্যান্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে এনিয়ে তাঁরা আলোচনা করবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
আরেক ছাত্র রানা অধিকারী বলেন, "কলেজের কয়েকজন শিক্ষক প্রকাশ্যেই বলছেন, যাঁরা তাঁদের কাছে টিউশন পড়ছেন, তাঁদের তাঁরা নম্বর দেবেন। কিন্তু যাঁরা তাঁদের কাছে টিউশন পড়ছেন না, তাঁদের টাকার বিনিময়ে নম্বর নিতে হবে। যে পড়ুয়ারা টাকা দিতে পারছে না, প্র্যাকটিক্যালে তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কিছু ছাত্র ও তাঁদের অভিভাবকরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন। বিশেষত বাংলা ও আরবি বিভাগে এই ঘটনা ঘটে চলেছে। ওই শিক্ষকরা সাবজেক্ট পিছু ৩০০-৪০০ টাকা দাবি করছেন। এর প্রতিবাদেই আজ আমরা আন্দোলনে নেমেছি।"
আরও পড়ুন : অক্টোবর থেকে জরুরি ভিত্তিতে স্কুল পড়ুয়াদের আধার নথিভুক্তিকরণ শুরু রাজ্যে
টিএমসিপি-র চাঁচল 1 নম্বর ব্লক সভাপতি গোলাম মোস্তাফা বলছেন, "আমরা জানতে পেরেছি, এই কলেজের অধ্যাপক সিরাজুল সাহেব টাকার বিনিময়ে পড়ুয়াদের নম্বর বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তার জন্য আমরা আজ বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছি। এভাবে তিনি পড়ুয়াদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করেছেন। যে ছাত্রছাত্রীরা তাঁর কাছে পড়েন, তাঁদের নম্বরই বাড়ানো হয়েছে। তবে অধ্যক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ৷"
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অজিত বিশ্বাস বলেন, "এ নিয়ে আজ ছাত্রছাত্রীরা আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ জানিয়েছে। কোনও লিখিত অভিযোগ জমা দেয়নি। তবে এই অভিযোগ মারাত্মক। যে ছাত্রটি মূলত এই অভিযোগ করেছে, তাঁকে কলেজে নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে ৷ কারণ, ও অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম জানে। তারপর কলেজের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।"