মালদা, ১৭ মে : ছাত্র ভরতি ইশুকে কেন্দ্র করে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা । রেজিস্ট্রারকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । ইংরেজবাজার থানায় পালটা এক ছাত্রীকে নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেছে অবস্থানকারী পড়ুয়ারা । উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সহ এক পড়ুয়া মালদা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন । বুধবার ওই পড়ুয়াকে মেডিকেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় । গতকাল উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকেও নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ।
ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগে স্নাতকোত্তরে এক ছাত্রকে ভরতি নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত । ওই ছাত্রের ভরতি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ । একজন ছাত্রের জন্য কেন EC বৈঠক ডাকা হল, তা নিয়েও তারা জবাব চায় । মঙ্গলবার সেই দাবি নিয়েই পড়ুয়াদের একাংশ উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে আসে । এদিকে, আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে সেই সময় উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে আসে উঁচু ক্লাসের কিছু পড়ুয়াও । প্রথমে ভরতি ইশু, তারপর উপাচার্যের কাছে দেখা করতে যাওয়ার সময় বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার দুপুর থেকে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ । মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে বাংলা বিভাগের M.Phil-এর ছাত্র মোহন ঘোষের বিরুদ্ধে । এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য স্বাগত সেন । তাঁকে এবং রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরিকে রাতেই ভরতি করা হয় মালদা মেডিকেলে । গোটা ঘটনায় ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । অবস্থানকারী এক ছাত্রীকে পালটা নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করে অবস্থানকারী পড়ুয়ারা ।
প্রসেনজিৎ ঘোষ নামে এক ছাত্র বলেন, "আমরা ৪৬ ঘণ্টা ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করছি । জানতে পেরেছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কয়েকজনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে । গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর CCTV-তে মোড়া রয়েছে । আমরা যদি উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার স্যারকে হেনস্থা করে থাকি তবে তা CCTV-তে ধরা পড়বে । যদি এধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তবে আমরাও তাদের শাস্তি চাই । কিন্তু অবস্থানকারী কোনও ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে হেনস্থা করেনি । আমাদের একটাই প্রশ্ন, দুর্নীতির মাধ্যমে কেন ওই ছাত্রকে ভরতি নেওয়া হল? আমাদের এক সহপাঠীকে হেনস্থা করা হয়েছে । আমাদের কাছে তার প্রমাণ রয়েছে । তার ভিত্তিতেই আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি । বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়ানো হচ্ছে, উপাচার্য স্যারকে নাকি আমরা শারীরিক নিগ্রহ করেছি । সমস্ত ঘটনা আমরা ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে রেখেছি । ঘরে CCTV-ও রয়েছে । রেজিস্ট্রার স্যার অভিযোগ করেছেন, আমরা তাঁকে মারধর করেছি । বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল আধিকারিক কী ভাবে প্রমাণ ছাড়া এই অভিযোগ করতে পারেন?"