মালদা, 27 নভেম্বর: ইটিভি ভারতে প্রকাশিত খবরের জেরে সরকারিভাবে চিকিৎসা শুরু হল মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বরুণ রামের ৷ বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর ৷ চিকিৎসায় ওই যুবক সাড়াও দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা-মা ৷ সরকারি উদ্যোগে দ্রুততার সঙ্গে ছেলের চিকিৎসা শুরুর জন্য ইটিভি ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা ৷ ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও ৷
20 বছরের বেশি সময় ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটাচ্ছিলেন 28 বছরের বরুণ ৷ তাঁর বাড়ি পুরাতন মালদার মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়ুইপাড়া গ্রামে ৷ মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বরুণের বাবা শিবশংকর রামের আর্থিক সামর্থ নেই ৷ ফলে দু’বছর পর ছেলের চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ৷ একমাত্র ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না মা সেমি রামেরও ৷ এই পরিস্থিতিতেই এগিয়ে এসেছিল ইটিভি ভারত ৷ আমাদের প্রতিনিধি বরুণের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গ্রামে যেতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ৷ এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ জেলাশাসক ইটিভি ভারতকে আশ্বস্ত করেন, সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় বরুণের চিকিৎসা করানো হবে ৷ মালদা মেডিক্যালেই তাঁর চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে ৷
জেলাশাসকের নির্দেশে বরুণের বাড়িতে যান পুরাতন মালদার বিডিও সেঁজুতি পাল মাইতি সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা ৷ রবিবার তাঁরা বরুণকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে আসতে চান ৷ কিন্তু শিবশংকরবাবু ও সেমিদেবী তাঁদের জানান, তাঁরা বাড়িতেই ছেলের চিকিৎসা করাতে চান ৷ কারণ, তাঁরা দু’জনেই শ্রমিক ৷ ছেলেকে মেডিক্যালে রেখে চিকিৎসা করানো হলে তাঁদের সংসারে হাঁড়ি চড়বে না ৷ বাড়িতে এক মেয়ে সহ নাতি-নাতনিরা না খেয়ে থাকবে ৷ কোনও সুযোগ পেলেই বরুণ মেডিক্যাল থেকে পালিয়ে যাবে ৷ সে এমনটাই করে ৷ আর সেখান থেকে পালিয়ে গেলে তাকে উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে ৷ তাঁদের কথা শুনে প্রশাসনিক কর্তারা বাড়িতেই বরুণের চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেন ৷
শিবশংকরবাবু সোমবার জানান,“ইটিভি ভারতের জন্যই সরকারিভাবে ছেলের চিকিৎসা করানোর সুযোগ এসেছে ৷ এর জন্য ইটিভি ভারতকে ধন্যবাদ জানাই ৷ বিডিও সহ একজন স্বাস্থ্যকর্তা বাড়িতে এসেছিলেন ৷ তাঁরা বরুণকে মালদা মেডিক্যালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু ছেলেকে সেখানে নিয়ে গেলে আমাদের পরিবারে সমস্যা বাড়বে ৷ বিষয়টি আমরা প্রশাসনিক কর্তাদের জানাই ৷ তাঁরাও আমাদের সঙ্গে একমত হন ৷ চিকিৎসককে ডেকে এনে বাড়িতেই ছেলের চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে ৷ অনেক ওষুধ দিয়েছে ৷ ওষুধ খেয়ে ছেলে এখন ভালোই রয়েছে ৷” এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মনোজ মণ্ডল জানান, যে কাজ ২০ বছরেও হয়নি, সেই কাজ করে দেখাল ইটিভি ভারত ৷ তার জন্য ধন্যবাদ ৷ বরুণের দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: