মালদা, 30 এপ্রিল : বৃদ্ধ বাবা-মা । কোনও কাজকর্ম করার ক্ষমতা নেই । তবে সরকারি ভাতার হাজার টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে নিয়মিত ঢোকে । সেটাই এখন পেট চালানোর ভরসা । কিন্তু সেই টাকায় মানসিকভাবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছেলের সুচিকিৎসা করাতে পারেন না তাঁরা । গ্রামে রয়েছেন তাঁদের মেয়ে । তিনিও গরিব । এদিকে এর আগে ছেলে একবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল । অনেক খোঁজখবর করে তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে এনেছেন । তারপর থেকে বাড়ির সামনে আমগাছের নীচে মাচা বেঁধে ছেলেকে শিকলবন্দি করে রেখেছেন তাঁরা । এভাবেই বছরের পর বছর বন্দিদশা কাটাচ্ছেন 28 বছরের যুবক বরুণ রাম । বিষয়টি জানতে পেরে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান (Specially abled 28 years old Varun Ram been chained for years in Malda village) ।
পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়ইপাড়া গ্রাম । এই গ্রামেই দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে বরুণের পরিবার । বাবা নগেন রাম একসময় শ্রমিকের কাজ করতেন । বয়স তাঁর কর্মক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে । বরুণের দিদি জুলি রায় জানাচ্ছেন,"ভাই মানসিকভাবে অসুস্থ । পাগলের মতো আচরণ করে । কাউকে মারধর না করলেও খোলা পেলেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় । একবার বাড়ি থেকে পালিয়ে ও হারিয়ে গিয়েছিল । বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করে দু’দিন পর ওর সন্ধান পেয়েছিলাম । তারপর থেকে ওকে তালাবন্দি করে রাখি । তাও প্রায় 10 বছর হয়ে গেল । অনেক চিকিৎসা করিয়েছি । এখনও চিকিৎসা চলছে । কিন্তু আমরা গরিব মানুষ । টাকার অভাবে বড় কোনও জায়গায় ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না । সরকারি ভাতার হাজার টাকায় বাবা-মা বেঁচে আছে । ভাইকে আমিই দেখাশোনা করি । সরকার যদি ভাইয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয় তবে খুব ভালো হয় । আমরাও তো চাই, ভাই তাড়াতাড়ি ভাল হোক। ওকে তালা বন্ধ করে রাখতে কি আমাদেরও ভাল লাগে ?"
মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মৌসুমি সরকার বিশ্বাস বলেন, "সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই বিষয়টি জানতে পারলাম । আমি ওই যুবককে দেখতে যাব । ঘটনা যদি সত্যি হয়, তবে ওই যুবক ও তাঁর পরিবারকে যেন সরকারি সুযোগ সুবিধে পাইয়ে দেওয়া যায়, তার সবরকম চেষ্টা করব ।"
আরও পড়ুন : Laccha-Semai Business : মূল্যবৃদ্ধির প্রকোপ লাচ্ছা-সিমাইয়ের ব্যবসায়, একলাফে দ্বিগুণ বাড়ল দাম