ETV Bharat / state

Malda Murder : চার মাস আগে পরিবারের চারজনকে খুন, বাড়িতে পুঁতে রেখে বাস ছেলের - খুন করে ঘরে পুঁতে রাখল ছেলে

পরিবারের চার সদস্যকে খুন করে বাড়ির মধ্যে পুঁতে রেখেছিল ছোট ছেলে ৷ মুখ খুললে দাদাকেও প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল সে ৷

malda
malda
author img

By

Published : Jun 19, 2021, 9:49 AM IST

Updated : Jun 19, 2021, 12:24 PM IST

মালদা, 19 জুন : মা, বাবা, ঠাকুমা ও বোন ৷ পরিবারের চারজনকে খুন করে বাড়িতেই পুঁতে দিয়েছিল বাড়ির ছোট ছেলে ৷ তারপর সেই বাড়িতেই বহাল তবিয়তে বাস করছিল আসিফ মেহবুব নামে ওই অভিযুক্ত ৷ এক বা দুদিন নয়, এভাবে চারটা মাস কেটে যায় ৷ কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন দাদা ৷ কিন্তু ভয়ে এতদিন মুখ খুলতে পারেননি ৷ অবশেষে গতকাল সাহস জুগিয়ে স্থানীয় থানায় গিয়ে গোটা ঘটনা খুলে বলেন ৷ শুনে অবাক পুলিশ ৷ প্রথমে বিশ্বাসই করতে চায়নি তারা ৷ অবশেষে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে খুনি ভাইকে ধরিয়ে দিলেন দাদা ৷ গায়ে কাঁটা দেওয়া এই ঘটনা মালদার কালিয়াচকের ৷ জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে আসিফ ৷

কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের বীরনগর 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরানো 16 মাইল এলাকার বাসিন্দা জাওয়াদ আলি (53) ৷ কৃষিকাজের পাশাপাশি দুটি ডাম্পারও ছিল তাঁর ৷ এনটিপিসিতে ছাইয়ের ব্যবসা ছিল ৷ এলাকায় তোলাবাজ হিসাবেও কুখ্যাত ছিলেন ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী আনসারির দলের সদস্য ছিলেন জাওয়াদ ৷ যিনি এলাকায় রুনু নামে পরিচিত ছিলেন ৷

সেই জাওয়াদের পরিবারে ছিল মা আলেকজান বিবি (72), স্ত্রী ইরা বিবি (38), দুই ছেলে ও এক মেয়ে ৷ বড় ছেলে রাহুল শেখ সেভাবে কাজকর্ম করেন না ৷ পারিবারিক জমিজায়গার দেখাশোনা করেন ৷ বাড়ির ছোট ছেলে আসিফ মেহবুব ওরফে আন্নান স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ৷ মেয়ে আরিফা খাতুন (13) গ্রামেরই একটি স্কুলের ছাত্রী ৷ গত 18 ফেব্রুয়ারি আন্নান বাড়িতেই জলের মধ্যে শ্বাসরোধ করে মা-বাবা, ঠাকুমা ও বোনকে খুন করে খুন করে ৷ এরপর বাড়িতেই দেহগুলি পুঁতে দেয় ৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার পরই বাড়ি থেকে কোথাও চলে যায় আন্নান ৷ বাইরে থেকে মাঝেমধ্যেই টাকার দাবি করে বাবাকে ফোন করত ৷ বাবা তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করলে নিজের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে সেই টাকা তুলে নিত সে ৷ এনিয়ে পরিবারের তরফে কালিয়াচক থানায় যোগাযোগও করা হয়েছিল ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একেক সময় একেক জায়গায় থাকছে আন্নান ৷ নিজের মোবাইলের সিম কার্ডও সে মাঝেমধ্যেই পালটে ফেলে ৷

আরও পড়ুন : মহিলাকে নগ্ন করে মারধর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো ভাইরালের অভিযোগ

এর থেকে পুলিশের ধারণা হয় সম্ভবত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর পাল্লায় পড়েছে আন্নান ৷ কিন্তু একদিন আন্নান বাড়ি ফিরে আসে ৷ বাড়ি ফেরার পরপরই বিভিন্ন ধরনের গ্যাজেট কিনে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দিতে শুরু করে সে ৷ নতুন কেনা গ্যাজেট নিয়ে নিজের ঘরে একাই থাকত সে ৷ আচরণ সন্দেহজনক হলেও কেউ তেমন কিছু বলত না ৷ কারণ এসব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে লোকজন দিয়ে সবাইকে খুন করে ফেলার হুমকি দিত সে ৷

নিহত জাওয়াদ আলি ওরফে রুনু ছিল বিশাল সম্পত্তির মালিক ৷ অভিযোগ, বাবাকে খুন করার পর আন্নান অন্তত সওয়া কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে ৷ গোটা বাড়িতে লাগিয়েছে 16টি সিসিটিভি ক্যামেরা ৷ বাবার পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি না হওয়ায় ঠাকুমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে তার কাকার অংশও ৷ 18 ফেব্রুয়ারি একইদিনে বাড়ির চারজনকে খুন করে ৷ ভাইকে আটকানোর চেষ্টা করেন দাদা রাহুল ৷ কিন্তু তাঁকেও খুন করার হুমকি দেয় আন্নান ৷

সম্প্রতি বাড়ি বিক্রি করার তোড়জোড় শুরু করেছিল আন্নান ৷ বাড়িতে রাজমিস্ত্রি কাজে লাগায় সে ৷ উপায় না দেখে সাহস করে অবশেষে শুক্রবার মাঝরাতে কালিয়াচক থানায় গিয়ে উপস্থিত হন আসিফের দাদা রাহুল ৷ গোটা ঘটনাটা খুলে বলেন ৷ ভাইয়ের বিরুদ্ধে পরিবারের চারজনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ৷ পুলিশ যখন সেই বাড়িতে যায় তখন ঘরেই ছিল আন্নান ৷ পুলিশ জেরা করতেই দোষ স্বীকার করে সে ৷ দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আন্নানকে গ্রেফতার করেছে ৷

আরও পড়ুন : ব্যাঙ্ক কর্মী সেজে ফোন, প্রতারকের ফাঁদে পড়ে জমানো টাকা খোয়ালেন ছাত্রী

গোটা বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে ৷ জাওয়াদ সাহেবের দাদা মুকলেসুর রহমান ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৷ তিনি বলেন, "আমি মা-ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করায় আমাকে বলেছিল, তারা নাকি রাজ্যের বাইরে গিয়েছে ৷ পুলিশ আসার পর গোটা ঘটনা জানতে পারি ৷ তবে আমার ভাই নিজেই আমার ভাগের সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছিল ৷ ভাইপো চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছিল কিনা জানি না ৷"

জাওয়াদের আরও এক দাদা মর্তুজা রহমান বলেন, "ছেলেটির ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরেই অন্যরকম ৷ ওর কাছে পিস্তলও ছিল ৷ ওর দাদা খুন করতে দেখে ফেলেছিল ৷ তাই দাদাকেও খুন করার হুমকি দিত সে ৷ এত কিছু ঘটে গিয়েছে আমরা কেউ বুঝতে পারিনি ৷ কয়েকদিন ধরে আন্নান বাড়ি বিক্রি করার কথা বলছিল ৷ তখনই আমরা ওর বাবার খোঁজ করি ৷ আন্নানের দাদা কলকাতায় থাকত ৷ কয়েকদিন আগে সে গ্রামে ফিরে আসে ৷ গতকাল রাতে সে কালিয়াচক থানায় গিয়ে সব ঘটনা জানায় ৷"

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্নানের বয়স এখনও 18 বছর হয়নি ৷ তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া কিংবা অন্য কোনও আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷

মালদা, 19 জুন : মা, বাবা, ঠাকুমা ও বোন ৷ পরিবারের চারজনকে খুন করে বাড়িতেই পুঁতে দিয়েছিল বাড়ির ছোট ছেলে ৷ তারপর সেই বাড়িতেই বহাল তবিয়তে বাস করছিল আসিফ মেহবুব নামে ওই অভিযুক্ত ৷ এক বা দুদিন নয়, এভাবে চারটা মাস কেটে যায় ৷ কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন দাদা ৷ কিন্তু ভয়ে এতদিন মুখ খুলতে পারেননি ৷ অবশেষে গতকাল সাহস জুগিয়ে স্থানীয় থানায় গিয়ে গোটা ঘটনা খুলে বলেন ৷ শুনে অবাক পুলিশ ৷ প্রথমে বিশ্বাসই করতে চায়নি তারা ৷ অবশেষে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে খুনি ভাইকে ধরিয়ে দিলেন দাদা ৷ গায়ে কাঁটা দেওয়া এই ঘটনা মালদার কালিয়াচকের ৷ জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে আসিফ ৷

কালিয়াচক 3 নম্বর ব্লকের বীরনগর 2 গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরানো 16 মাইল এলাকার বাসিন্দা জাওয়াদ আলি (53) ৷ কৃষিকাজের পাশাপাশি দুটি ডাম্পারও ছিল তাঁর ৷ এনটিপিসিতে ছাইয়ের ব্যবসা ছিল ৷ এলাকায় তোলাবাজ হিসাবেও কুখ্যাত ছিলেন ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী আনসারির দলের সদস্য ছিলেন জাওয়াদ ৷ যিনি এলাকায় রুনু নামে পরিচিত ছিলেন ৷

সেই জাওয়াদের পরিবারে ছিল মা আলেকজান বিবি (72), স্ত্রী ইরা বিবি (38), দুই ছেলে ও এক মেয়ে ৷ বড় ছেলে রাহুল শেখ সেভাবে কাজকর্ম করেন না ৷ পারিবারিক জমিজায়গার দেখাশোনা করেন ৷ বাড়ির ছোট ছেলে আসিফ মেহবুব ওরফে আন্নান স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ৷ মেয়ে আরিফা খাতুন (13) গ্রামেরই একটি স্কুলের ছাত্রী ৷ গত 18 ফেব্রুয়ারি আন্নান বাড়িতেই জলের মধ্যে শ্বাসরোধ করে মা-বাবা, ঠাকুমা ও বোনকে খুন করে খুন করে ৷ এরপর বাড়িতেই দেহগুলি পুঁতে দেয় ৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার পরই বাড়ি থেকে কোথাও চলে যায় আন্নান ৷ বাইরে থেকে মাঝেমধ্যেই টাকার দাবি করে বাবাকে ফোন করত ৷ বাবা তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করলে নিজের এটিএম কার্ড ব্যবহার করে সেই টাকা তুলে নিত সে ৷ এনিয়ে পরিবারের তরফে কালিয়াচক থানায় যোগাযোগও করা হয়েছিল ৷ তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একেক সময় একেক জায়গায় থাকছে আন্নান ৷ নিজের মোবাইলের সিম কার্ডও সে মাঝেমধ্যেই পালটে ফেলে ৷

আরও পড়ুন : মহিলাকে নগ্ন করে মারধর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো ভাইরালের অভিযোগ

এর থেকে পুলিশের ধারণা হয় সম্ভবত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর পাল্লায় পড়েছে আন্নান ৷ কিন্তু একদিন আন্নান বাড়ি ফিরে আসে ৷ বাড়ি ফেরার পরপরই বিভিন্ন ধরনের গ্যাজেট কিনে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দিতে শুরু করে সে ৷ নতুন কেনা গ্যাজেট নিয়ে নিজের ঘরে একাই থাকত সে ৷ আচরণ সন্দেহজনক হলেও কেউ তেমন কিছু বলত না ৷ কারণ এসব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে লোকজন দিয়ে সবাইকে খুন করে ফেলার হুমকি দিত সে ৷

নিহত জাওয়াদ আলি ওরফে রুনু ছিল বিশাল সম্পত্তির মালিক ৷ অভিযোগ, বাবাকে খুন করার পর আন্নান অন্তত সওয়া কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে ৷ গোটা বাড়িতে লাগিয়েছে 16টি সিসিটিভি ক্যামেরা ৷ বাবার পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি না হওয়ায় ঠাকুমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে তার কাকার অংশও ৷ 18 ফেব্রুয়ারি একইদিনে বাড়ির চারজনকে খুন করে ৷ ভাইকে আটকানোর চেষ্টা করেন দাদা রাহুল ৷ কিন্তু তাঁকেও খুন করার হুমকি দেয় আন্নান ৷

সম্প্রতি বাড়ি বিক্রি করার তোড়জোড় শুরু করেছিল আন্নান ৷ বাড়িতে রাজমিস্ত্রি কাজে লাগায় সে ৷ উপায় না দেখে সাহস করে অবশেষে শুক্রবার মাঝরাতে কালিয়াচক থানায় গিয়ে উপস্থিত হন আসিফের দাদা রাহুল ৷ গোটা ঘটনাটা খুলে বলেন ৷ ভাইয়ের বিরুদ্ধে পরিবারের চারজনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ৷ পুলিশ যখন সেই বাড়িতে যায় তখন ঘরেই ছিল আন্নান ৷ পুলিশ জেরা করতেই দোষ স্বীকার করে সে ৷ দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আন্নানকে গ্রেফতার করেছে ৷

আরও পড়ুন : ব্যাঙ্ক কর্মী সেজে ফোন, প্রতারকের ফাঁদে পড়ে জমানো টাকা খোয়ালেন ছাত্রী

গোটা বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে ৷ জাওয়াদ সাহেবের দাদা মুকলেসুর রহমান ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি ৷ তিনি বলেন, "আমি মা-ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করায় আমাকে বলেছিল, তারা নাকি রাজ্যের বাইরে গিয়েছে ৷ পুলিশ আসার পর গোটা ঘটনা জানতে পারি ৷ তবে আমার ভাই নিজেই আমার ভাগের সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছিল ৷ ভাইপো চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছিল কিনা জানি না ৷"

জাওয়াদের আরও এক দাদা মর্তুজা রহমান বলেন, "ছেলেটির ব্যবহার দীর্ঘদিন ধরেই অন্যরকম ৷ ওর কাছে পিস্তলও ছিল ৷ ওর দাদা খুন করতে দেখে ফেলেছিল ৷ তাই দাদাকেও খুন করার হুমকি দিত সে ৷ এত কিছু ঘটে গিয়েছে আমরা কেউ বুঝতে পারিনি ৷ কয়েকদিন ধরে আন্নান বাড়ি বিক্রি করার কথা বলছিল ৷ তখনই আমরা ওর বাবার খোঁজ করি ৷ আন্নানের দাদা কলকাতায় থাকত ৷ কয়েকদিন আগে সে গ্রামে ফিরে আসে ৷ গতকাল রাতে সে কালিয়াচক থানায় গিয়ে সব ঘটনা জানায় ৷"

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্নানের বয়স এখনও 18 বছর হয়নি ৷ তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া কিংবা অন্য কোনও আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷

Last Updated : Jun 19, 2021, 12:24 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.