চাঁচল (মালদা), 23 মার্চ : গনি খানের সাম্রাজ্য কিছুতেই হাতছাড়া করতে রাজি নয় কংগ্রেস। আজ চাঁচলের কলমবাগান ময়দানে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাহুল গান্ধি। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন। তৃণমূলের ব্রিগেডে নিজের দলের প্রতিনিধি পাঠানোর পরেও আজ কংগ্রেসের সভাপতি যে ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, তা রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন তুলেছে।
আজকের সভায় সদ্য দলত্যাগী উত্তর মালদার সাংসদ মৌসম নুরের নাম মুখে আনেননি রাহুল। বলেন, "মালদার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র রাজনীতির নয়। এই সম্পর্ক হৃদয়ের সম্পর্ক, আত্মার সম্পর্ক, আত্মীয়তার সম্পর্ক। আর সেই সম্পর্কের জেরেই মালদার মানুষ বারবার আমাদের জিতিয়েছেন। কিন্তু গতবারের কংগ্রেস প্রার্থী আপনাদের ধোঁকা দিয়েছেন। সেকথা আপনারা কেউ ভুলে যাবেন না।"
রাহুল গান্ধি আজ নিজের বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদিকে তুলোধনা করেছেন। তিনি বলেন, "সামনে লোকসভা নির্বাচন। এবার লড়াই দুটি নীতির মধ্যে। একদিকে নরেন্দ্র মোদি, অন্যদিকে কংগ্রেস। মোদিজি যেখানে যাচ্ছেন, শুধুই মিথ্যে কথা বলছেন। 2014 সালে ভোটের পর তিনি বলেছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন না। চৌকিদার হতে চান। এখন বলছেন, গোটা দেশই নাকি চৌকিদার। সবাইকে মনে রাখতে হবে, গরিব মানুষের ঘরে চৌকিদার থাকে না। চৌকিদার থাকে অনিল আম্বানির ঘরে, নীরব মোদি, মেহুল চোকসি, বিজয় মালিয়ার ঘরে। মোদি বলেছিলেন, বছরে 2 কোটি বেকারের চাকরি হবে। প্রত্যেক দেশবাসীর অ্যাকাউন্টে 15 লাখ টাকা দেওয়া হবে। সেই সব প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল? উলটে গরিবের টাকা, কিষাণের টাকা আম্বানিদের পকেটে ভরে দিয়েছেন মোদি। অনিল আম্বানিদের মতো 15 জন ধনীর সাড়ে 3 লাখ কোটি টাকা ঋণ মকুব করেছেন মোদিজি। কিন্তু এই দেশের গরিব কৃষক, ছোটো ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষের কোনও ঋণ মকুব করা হয়নি। একই পরিস্থিতি এই রাজ্যেরও। এখানেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও কাজ না করে সারাক্ষণ শুধু ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন। CPI(M) সরকারের আমলে এখানে যা ছিল, এখনও সেটাই চলছে। CPI(M)-র আমলে একটি সংগঠনের সরকার চলত, আর এখন একনায়ক সরকার চলছে। এখানে শিক্ষা কিংবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। এই রাজ্যে যতক্ষণ না কংগ্রেসের সরকার তৈরি হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও উন্নতি হবে না। এখানকার কংগ্রেস কর্মীদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।"
রাহুল গান্ধি আরও বলেন, "দেশে এখন গব্বর সিং ট্যাক্স (GST) লাগু করা হয়েছে। এই ট্যাক্স আসলে কী, কেউ জানে না। কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে প্রথমেই এই গব্বর সিং ট্যাক্স বন্ধ করা হবে। দেশের সর্বত্র চালু করা হবে সাধারণ একটি ট্যাক্স। কোনও সরকারি দপ্তরে শূন্যপদ থাকলে দ্রুত তা পূরণ করা হবে। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় গরিবদের পকেটমারি করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতালের জাল তৈরি করে দেওয়া হবে। যতটা সম্ভব কম টাকায় এইসব পরিষেবা দেওয়া হবে। কোনও মানুষের আয় ন্যূনতম সীমার কম হলে সরাসরি তার অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মালদায় আম ও রেশমের কারখানা গড়ে তোলা হবে।"