মালদা, 2 নভেম্বর : সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরে ছ’মাসের অন্তঃসত্তাকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে ৷ মারধর করা হয় ওই গৃহবধূর শাশুড়িকেও ৷ মালদার গাজোল ব্লকের আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের মুরিয়াকুণ্ডু গ্রামে ক’দিন আগে এই ঘটনা ঘটলেও সোমবার রাতেই তা প্রকাশ্যে এসেছে ৷ এই ঘটনায় গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ ৷ অন্তঃসত্ত্বা ওই বধূ বর্তমানে মালদা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ৷ প্রাণের ভয়ে বাড়িছাড়া তাঁর শাশুড়ি ও স্বামী ৷ তবে গোটা ঘটনা জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি ৷ দলীয়ভাবে এই অভিযোগের তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন : Minor Rape: শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে, সালিশি সভায় নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি
মুরিয়াকুণ্ডু গ্রামটি 81 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ৷ এই গ্রামের বাসিন্দা নিসাদ সেলিম রেজার বাড়ি জাতীয় সড়কের ধারেই ৷ তাঁর বাবা প্রায় 20 বছর আগে মারা গিয়েছেন ৷ বিধবা মা আর স্ত্রীকে নিয়েই তাঁর সংসার ৷ বাড়ির পাশেই রয়েছে তাঁর কম্পিউটারের দোকান ৷ নিসাদের অভিযোগ, তাঁদের জায়গার উপর নজর পড়েছে জমি মাফিয়াদের ৷ এই জমি মাফিয়ারা আবার নিসাদেরই আত্মীয় ৷ তাদের দখলে থাকা অনেকটা জমির মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নিসাদের বাড়ি ৷ তাই তারা নিসাদের বাড়ি কব্জা করতে চায় ৷ এর জন্য নিসাদকে কিছু টাকাও দিতে চেয়েছিল জমি মাফিয়ারা ৷ কিন্তু নিসাদ তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর উপর আগেও হামলা চালানো হয় ৷
কিন্তু, সবথেকে বড় ঘটনাটি ঘটে গত 28 অক্টোবর ৷ থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে নিসাদ জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না ৷ তখনই অভিযুক্তরা তাঁর মাকে দিয়ে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করানোর চেষ্টা করে ৷ প্রৌঢ়া তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করে হামলাকারীরা ৷ শাশুড়িকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন নিসাদের স্ত্রীও ৷ তাঁকে মাটিতে ফেলে পেটে লাথি মারা হয় ৷ পরে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ এই ঘটনায় কামরুজ্জামান, মণিরুজ্জামান, আহসানুল ইসলাম ও করিমুস হাসানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন নিসাদ ৷
আরও পড়ুন : Communal Harmony : ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু, চাঁদা তুলে দেহ ফিরিয়ে সম্প্রীতির নজির মালদায়
এ নিয়ে গাজোল থানার পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “এই ঘটনায় আমরা দলীয়ভাবে তদন্ত করছি ৷ ব্লক নেতৃত্বকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিতে বলছি ৷ এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে তা খুবই দুঃখজনক ৷ তৃণমূল দল এমন কাজ কখনও সমর্থন করে না ৷’’