মালদা, 9 নভেম্বর : বিয়ের সময় পূরণ হয়নি পাত্রপক্ষের দাবি ৷ সঙ্গে পুত্রসন্তান জন্ম দিতে পারায় বাড়ছিল ক্ষোভ। ফের গর্ভে সন্তান আসতেই শুরু হয়েছিল শারীরিক অত্যাচার। সেই অত্যাচার থেকে বাঁচতেই চাঁচল থানার মোবারকপুর গ্রামের গৃহবধূ পিঙ্কি খাতুন চলে আসেন বাপের বাড়িতে। কিন্তু সেখান থেকে ফের তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় স্বামী। অভিযোগ, এরপর স্ত্রী যাতে পালাতে না পারে সেজন্য হাতে শিকল বেঁধে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা বেধড়ক মারধর করে ওই গৃহবধূকে। খবর পেয়ে গতকাল রাতে তাঁকে উদ্ধার করেন বাপের বাড়ির লোকজন। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। মঙ্গলবার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতা বধূ।
বছর পাঁচেক আগে মোবারকপুরে পেশায় দিনমজুর সাহেব আলির সঙ্গে বিয়ে হয় পিঙ্কির । দম্পতির দুই কন্যাসন্তানও রয়েছে। বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিঙ্কি । তাঁর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য তাঁর উপর চাপ দিত স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৷ টাকা না পেয়ে প্রায়ই মারধর চলত। দুই মেয়ে হওয়ার পর টাকার দাবি সঙ্গে অত্যাচারের মাত্রা দুইই বাড়ে। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশি সভা হলেও কোনও লাভ হয়নি। কয়েকদিন আগে অত্যাচার চরমে ওঠে।
আরও পড়ুন : 2 কোটি টাকার গাঁজা উদ্ধার চোপড়ায়
অভিযোগ, পিঙ্কি যাতে পালাতে না পারে সেজন্য তালা মেরে তাকে বেঁধে রাখা হয়। সংসার চালানোর কোনও খরচ তো তাঁকে দেওয়া হতই না, উলটে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দেওয়া হত। তাঁর স্বামী অন্যের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও পিঙ্কির আশঙ্কা। গৃহবধূর কথায়, "ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। গতকাল রাতে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই মিলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আজ আমি ওদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছি।”
মঙ্গলবার চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে চাঁচল থানায় স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পিঙ্কি । অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে চাঁচল থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। যদিও পিঙ্কির শ্বশুর মফিজুর রহমান সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ৷