ETV Bharat / state

Pradhan Mantri Awas Yojana: কংগ্রেস করার 'অপরাধে' জোটেনি সরকারি ঘর, প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায় - মালদা

কংগ্রেস (Congress) করার 'অপরাধে' সরকারি ঘর (Pradhan Mantri Awas Yojana) পাচ্ছে না মালদার (Malda) একটি দুস্থ পরিবার ! কাঠগড়ায় শাসকদল ৷

poor family from Malda does not get Home under Pradhan Mantri Awas Yojana as they support Congress
Pradhan Mantri Awas Yojana: কংগ্রেস করার 'অপরাধে' জোটেনি সরকারি ঘর, প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায়
author img

By

Published : Dec 7, 2022, 9:40 PM IST

মালদা, 7 ডিসেম্বর: রাত হলেই লড়ঝড়ে 'বাড়ি'র দাওয়ায় স্ত্রী আনোয়ারার পাশে শুয়ে টালির চালের ফাঁকফোকর দিয়ে আকাশের তারা দেখেন পঁচাত্তরের বৃদ্ধ সইদুল রহমান ! এখনও সরকারি ঘরটা (Pradhan Mantri Awas Yojana) তাঁদের হল না ! বৃ্দ্ধের অভিযোগ, চিরকাল কংগ্রেস (Congress) করেন বলেই যাবতীয় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাঁদের পরিবার ৷ একই অভিযোগ পরিবারের বাকি সদস্যদেরও ৷

মালদার (Malda) চাঁচল-1 ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দিঘা বসতপুর গ্রামের বাসিন্দা সইদুল ৷ এই বয়সেও রোজ বের হন দিনমজুরের কাজ করতে ৷ না-হলে দু'বেলার খোরাক জোটে না ! তাই দুই জোয়ান ছেলের পাশাপাশি তাঁদের বুড়ো বাপকেও কাজে বেরোতে হয় ! সেই কোন কালে তিন কামরার একটা কুঁড়ে তৈরি করেছিলেন সইদুল ৷ তখন তাঁর যুবা বয়স ৷ আজও গোটা পরিবারের ঠাঁই বলতে সেটুকুই ৷ এদিকে, দুই ছেলে বড় হয়েছে ৷ তাঁদের বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে ৷ বহরে বেড়েছে সংসার ৷ এই অবস্থায় দুই ছেলে আর তাঁদের পরিবারের জন্য তিনটে খুপরি ঘর ছেড়ে দিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি ৷ ভাঙা টালিতে ছাওয়া মাটির খোলা দাওয়াই এখন সম্বল সইদুল ও তাঁর স্ত্রী আনোয়ারার ৷

আরও পড়ুন: 'মানবিকতার স্বার্থে' উপেক্ষিত আদালতের নির্দেশ ! 'বেআইনি নির্মাণে' অভিযুক্ত কাউন্সিলর

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সরকারি পাকা ঘরের জন্য 2018 সাল থেকেই হত্যে দিচ্ছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তথা উপপ্রধানের দরজায় ৷ তিনবার আবেদনও করেছেন ৷ কিন্তু কংগ্রেস করলে নাকি এসব সুবিধা পাওয়া যায় না ! উপপ্রধানই তাঁদের এই বাণী শুনিয়েছেন বলে দাবি হতদরিদ্র এই পরিবারের সদস্যদের ৷

ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বিবি যেমন বলছেন, "বাড়িতে তিনটে ঘর থাকলেও সেগুলো খুব ছোট ৷ তাই দুই ছেলে আর বউমাদের ঘরগুলো ছেড়ে দিয়েছি ৷ আমরা স্বামী-স্ত্রী এই বারান্দাতেই পড়ে থাকি ৷ গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে খুব কষ্ট হয় ৷ সবচেয়ে ভয়ের কথা, এখানে শিয়ালের উপদ্রব রয়েছে ৷ খোলা বারান্দায় যে কোনও সময় শিয়াল কামড়াতে পারে ৷ ঘরগুলোও একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা মজুরি করে খাই ৷ ঘর সারানোর টাকা কোথায় পাব ? 2018 সাল থেকে সরকারি ঘরের জন্য আবেদন জানাচ্ছি ৷ কিন্তু তালিকায় নাম ওঠেনি ৷ অথচ, যাঁদের পাকা ঘর আছে, তাঁরা সরকারি ঘর পাচ্ছেন ৷ কিন্তু, আমরা পাচ্ছি না ৷ সরকারি কোনও সুবিধাই পাই না ৷ কংগ্রেস করি বলে আমাদের কিছু দেওয়া হচ্ছে না ৷ তাই ঠিক করেছি, এবার আর আমরা কেউ ভোট দেব না ৷"

প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায়

মায়ের সুরে সুর মিলিয়ে ছেলে আনোয়ারউল হকও জানাচ্ছেন, "আমরা খাটলে তবেই খেতে পাই, নইলে নয় ৷ আমাদের পক্ষে বাড়িঘর তৈরি করা সম্ভব নয় ৷ সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে দু'বার, পঞ্চায়েতে একবার আবেদন জানিয়েছি ৷ কিন্তু, ঘর হয়নি ৷ ভোট এলেই পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধানরা বলেন, এবার ঘর হবেই ৷ ভোট মিটলে তাঁরাও দূরে সরে যান ৷ করোনার সময় আমাদের সরকারি চালও জোটেনি ৷ আসলে কংগ্রেস করি বলেই আমরা বঞ্চিত ৷ উপপ্রধান পিঙ্কি খাতুন সাফ বলে দিয়েছেন, তৃণমূল করলেই এসব সুবিধা পাওয়া যাবে ৷ আমরা চাই, সরকারি আবাস যোজনার আসল ছবি তদন্ত করে দেখা হোক ৷"

কংগ্রেসের মতিহারপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি শেখ কামালুদ্দিন বলেন, "ওই পরিবারটি সত্যিই খুব গরিব ৷ ওঁদের সরকারি ঘর খুব প্রয়োজন ৷ ওঁরা সেই ঘর পাওয়ার উপযুক্তও ৷ কিন্তু কংগ্রেস করেন বলেই ওঁরা সরকারি কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না ৷ সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেলা খুবই দুঃখজনক বিষয় ৷ বিডিওকে আমি অনুরোধ করব, যাতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তিনি ব্যবস্থা নেন ৷"

যদিও উপপ্রধান পিঙ্কি খাতুনের স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ সইদ আখতার বলছেন, "আবাস যোজনার ঘরের জন্য 2018 সালে সমীক্ষা করা হয়েছিল ৷ সেই সমীক্ষায় ওই পরিবারের নাম রয়েছে ৷ আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি ওই পরিবারটি তাদের প্রাপ্য ঘর পেয়ে যাবে ৷ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন ৷ ওই ব্যক্তির ছেলে তৃণমূলই করেন ৷ এ নিয়ে কংগ্রেস মিথ্যে অপবাদ ছড়াচ্ছে ৷"

মালদা, 7 ডিসেম্বর: রাত হলেই লড়ঝড়ে 'বাড়ি'র দাওয়ায় স্ত্রী আনোয়ারার পাশে শুয়ে টালির চালের ফাঁকফোকর দিয়ে আকাশের তারা দেখেন পঁচাত্তরের বৃদ্ধ সইদুল রহমান ! এখনও সরকারি ঘরটা (Pradhan Mantri Awas Yojana) তাঁদের হল না ! বৃ্দ্ধের অভিযোগ, চিরকাল কংগ্রেস (Congress) করেন বলেই যাবতীয় সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাঁদের পরিবার ৷ একই অভিযোগ পরিবারের বাকি সদস্যদেরও ৷

মালদার (Malda) চাঁচল-1 ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দিঘা বসতপুর গ্রামের বাসিন্দা সইদুল ৷ এই বয়সেও রোজ বের হন দিনমজুরের কাজ করতে ৷ না-হলে দু'বেলার খোরাক জোটে না ! তাই দুই জোয়ান ছেলের পাশাপাশি তাঁদের বুড়ো বাপকেও কাজে বেরোতে হয় ! সেই কোন কালে তিন কামরার একটা কুঁড়ে তৈরি করেছিলেন সইদুল ৷ তখন তাঁর যুবা বয়স ৷ আজও গোটা পরিবারের ঠাঁই বলতে সেটুকুই ৷ এদিকে, দুই ছেলে বড় হয়েছে ৷ তাঁদের বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে ৷ বহরে বেড়েছে সংসার ৷ এই অবস্থায় দুই ছেলে আর তাঁদের পরিবারের জন্য তিনটে খুপরি ঘর ছেড়ে দিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি ৷ ভাঙা টালিতে ছাওয়া মাটির খোলা দাওয়াই এখন সম্বল সইদুল ও তাঁর স্ত্রী আনোয়ারার ৷

আরও পড়ুন: 'মানবিকতার স্বার্থে' উপেক্ষিত আদালতের নির্দেশ ! 'বেআইনি নির্মাণে' অভিযুক্ত কাউন্সিলর

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সরকারি পাকা ঘরের জন্য 2018 সাল থেকেই হত্যে দিচ্ছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তথা উপপ্রধানের দরজায় ৷ তিনবার আবেদনও করেছেন ৷ কিন্তু কংগ্রেস করলে নাকি এসব সুবিধা পাওয়া যায় না ! উপপ্রধানই তাঁদের এই বাণী শুনিয়েছেন বলে দাবি হতদরিদ্র এই পরিবারের সদস্যদের ৷

ষাটোর্ধ্ব আনোয়ারা বিবি যেমন বলছেন, "বাড়িতে তিনটে ঘর থাকলেও সেগুলো খুব ছোট ৷ তাই দুই ছেলে আর বউমাদের ঘরগুলো ছেড়ে দিয়েছি ৷ আমরা স্বামী-স্ত্রী এই বারান্দাতেই পড়ে থাকি ৷ গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতে খুব কষ্ট হয় ৷ সবচেয়ে ভয়ের কথা, এখানে শিয়ালের উপদ্রব রয়েছে ৷ খোলা বারান্দায় যে কোনও সময় শিয়াল কামড়াতে পারে ৷ ঘরগুলোও একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা মজুরি করে খাই ৷ ঘর সারানোর টাকা কোথায় পাব ? 2018 সাল থেকে সরকারি ঘরের জন্য আবেদন জানাচ্ছি ৷ কিন্তু তালিকায় নাম ওঠেনি ৷ অথচ, যাঁদের পাকা ঘর আছে, তাঁরা সরকারি ঘর পাচ্ছেন ৷ কিন্তু, আমরা পাচ্ছি না ৷ সরকারি কোনও সুবিধাই পাই না ৷ কংগ্রেস করি বলে আমাদের কিছু দেওয়া হচ্ছে না ৷ তাই ঠিক করেছি, এবার আর আমরা কেউ ভোট দেব না ৷"

প্রবীণ দম্পতির রাত কাটে মাটির দাওয়ায়

মায়ের সুরে সুর মিলিয়ে ছেলে আনোয়ারউল হকও জানাচ্ছেন, "আমরা খাটলে তবেই খেতে পাই, নইলে নয় ৷ আমাদের পক্ষে বাড়িঘর তৈরি করা সম্ভব নয় ৷ সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে দু'বার, পঞ্চায়েতে একবার আবেদন জানিয়েছি ৷ কিন্তু, ঘর হয়নি ৷ ভোট এলেই পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধানরা বলেন, এবার ঘর হবেই ৷ ভোট মিটলে তাঁরাও দূরে সরে যান ৷ করোনার সময় আমাদের সরকারি চালও জোটেনি ৷ আসলে কংগ্রেস করি বলেই আমরা বঞ্চিত ৷ উপপ্রধান পিঙ্কি খাতুন সাফ বলে দিয়েছেন, তৃণমূল করলেই এসব সুবিধা পাওয়া যাবে ৷ আমরা চাই, সরকারি আবাস যোজনার আসল ছবি তদন্ত করে দেখা হোক ৷"

কংগ্রেসের মতিহারপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি শেখ কামালুদ্দিন বলেন, "ওই পরিবারটি সত্যিই খুব গরিব ৷ ওঁদের সরকারি ঘর খুব প্রয়োজন ৷ ওঁরা সেই ঘর পাওয়ার উপযুক্তও ৷ কিন্তু কংগ্রেস করেন বলেই ওঁরা সরকারি কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না ৷ সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেলা খুবই দুঃখজনক বিষয় ৷ বিডিওকে আমি অনুরোধ করব, যাতে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তিনি ব্যবস্থা নেন ৷"

যদিও উপপ্রধান পিঙ্কি খাতুনের স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ সইদ আখতার বলছেন, "আবাস যোজনার ঘরের জন্য 2018 সালে সমীক্ষা করা হয়েছিল ৷ সেই সমীক্ষায় ওই পরিবারের নাম রয়েছে ৷ আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি ওই পরিবারটি তাদের প্রাপ্য ঘর পেয়ে যাবে ৷ উপপ্রধানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন ৷ ওই ব্যক্তির ছেলে তৃণমূলই করেন ৷ এ নিয়ে কংগ্রেস মিথ্যে অপবাদ ছড়াচ্ছে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.