ETV Bharat / state

সুজাপুরে গাড়ি ভাঙচুর পুলিশের, নিন্দা রাজনৈতিক মহলে

আজ বনধে অগ্নিগর্ভ সুজাপুরে পুলিশ গাড়ি ভাঙচুর করে । পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে ।

image
গাড়ি ভাঙচুর করছে পুলিশ
author img

By

Published : Jan 8, 2020, 10:56 PM IST

মালদা, ৮ জানুয়ারি : বনধে অগ্নিগর্ভ সুজাপুরে ভিলেন হল পুলিশ ৷ আজ সেখানে গাড়িতে ভাঙচুর করতে দেখা যায় পুলিশকে ৷ সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল ৷ পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷ যদিও জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বিদেশে থাকায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন তৃণমূলের কোনও নেতা ৷ তবে পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷

NRC ও CAA সহ একাধিক ইশুতে ডাকা বনধ গোটা দেশের সঙ্গে আজ সুজাপুরেও পালিত হয় । যদিও সকাল ৬টা থেকে ঘণ্টাখানেক সেখানে ধর্মঘটের আহ্বায়ক, বাম ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছিল ৷ তারপর সেই আন্দোলনের রাশ চলে যায় সাধারণ মানুষের হাতে ৷ প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় অবরোধকারীদের ৷ এই ঝামেলা একসময় রণক্ষেত্রের আকার নেয় ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে উত্তেজিত জনতা ৷ বোমা ফাটতে শুরু করে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ ৷ এরপর পুলিশ রবার বুলেট ও শূন্যে গুলি চালাতে শুরু করে ৷ এরই মধ্যে পুলিশের ৫টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয় ৷ সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সুজাপুর নয়মৌজা ইদগাহ মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা আরও কয়েকটি গাড়িতে ৷ মোট ৮টি গাড়ি পুড়ে যায় ৷ ঘণ্টা দুয়েক ধরে এই ছবি দেখে সুজাপুরের মানুষ ৷ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ও পুলিশের জলকামান ৷ দমকলকর্মীরা বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ৷ এসব ঝামেলার মধ্যেই একসময় দেখা যায়, কাঁধে কাঁদানে গ্যাসের শেলবক্স নিয়ে এক পুলিশকর্মী জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাধারণ গাড়ি ভাঙচুর করছেন ৷ একই ঘটনা ঘটছে জাতীয় সড়কের উলটোদিকেও ৷ খাকি উর্দিধারীদের পাশাপাশি গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায় সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও ৷ সেই ছবি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ৷ এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে উত্তেজনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলে অনেকে ৷ পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷

এ প্রসঙ্গে CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “আজ গোটা মালদা জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে ৷ এবারের ধর্মঘটের চেহারা অনেক ভালো ছিল ৷ সমস্ত প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল ৷ হঠাৎ শোনা গেল, সুজাপুরে লাঠিচার্জ হচ্ছে, কাঁদানে গ্যাস চলছে ৷ পুলিশের গুলি চলছে ৷ আমরা সেকথা শুনে খোঁজখবর নিই ৷ আমরা জানতে পারি, পুলিশ সেখানকার ধর্মঘট সমর্থকদের প্ররোচনা দিয়েছে ৷ শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটে সুজাপুরে এমন অশান্তি হল কেন, তার জবাব পুলিশকেই দিতে হবে ৷ এর দায়ও পুলিশকে নিতে হবে ৷ আমরা ছবিতে দেখছি, কাঁধে টিয়ার গ্যাসের শেলের ব্যাগ, হাতে রাইফেল নিয়ে পুলিশই গাড়ি ভাঙছে ৷ সাধারণ পুলিশের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও গাড়ি ভাঙতে দেখা যাচ্ছে ৷ নয়মৌজার মাঠে বছরের প্রতিটি দিন অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে ৷ সেখানে একজন বিক্ষোভকারীকেও দেখা যাচ্ছে না ৷ শুধু পুলিশকেই সেখানে দেখা যাচ্ছে ৷ এটা ভয়ঙ্কর ৷ প্রশাসনের এনিয়ে তদন্ত করা উচিত ৷ সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ করার জন্য আজ পুলিশ নিজেরা এই ইশু তৈরি করেছে ৷ আমরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি দাবি করছি ৷”

জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় এনিয়ে বলেন, “এর আগে কালিয়াচক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ যারা সেই কাজ করেছিল তারা সবাই তৃণমূলের ৷ সেই ঘটনায় পুলিশ নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রচুর তোলাবাজি করেছে ৷ সেই ঘটনা থেকে কালিয়াচকের মানুষ আগে থেকেই ভীত সন্ত্রস্ত ছিল ৷ আজ পর্যন্ত কালিয়াচকের মানুষ NRC র বিরুদ্ধে কোনও অশান্তি সৃষ্টি করেননি ৷ সারা রাজ্যের তুলনায় কালিয়াচকের মানুষ অনেক বেশি ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে ৷ তারা এলাকার সুস্থিতি বজায় রেখেছে৷ আজও তারা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেয় ৷ তখনই জামিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা JNU এর কায়দায় পুলিশ সেখানে অশান্তি তৈরি করে ৷ পুলিশের প্ররোচনায়, পুলিশ ও তৃণমূলের আঁতাতে আজ সেখানে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ৷ পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে ৷ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর জন্য পুলিশ আজ এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি ৷ এই ঘটনায় কোনও নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হলে কংগ্রেস অন্য দলগুলিকে নিয়ে কালিয়াচক-সুজাপুরে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলবে ৷”

পুলিশের এহেন কাজের নিন্দা করেছেন BJP র জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলও ৷ তিনি বলেন, “NRC ও CAA ইশুতে যারা বনধ ডেকেছিল, সুজাপুরের ঘটনায় তাদের কোনও চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়নি ৷ ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গেছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও ঝান্ডা নেই ৷ সেখানে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে ৷ স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করার চেষ্টা করে ৷ পুলিশ কি জানত না, সুজাপুরের মতো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে? না হলে পুলিশ আগাম কোনও ব্যবস্থা কেন নেয়নি ? এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা স্টেশন আগুন লাগিয়ে, ভাঙচুর করা হয়েছে, আজ সুজাপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়িতেও তেমনভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরের বৃষ্টি করা হয়েছে ৷ ঠিক কাশ্মীরের কায়দায় ৷ এসব ঘটনা কোন দিকে ইঙ্গিত করছে, মানুষ তা বুঝতে পারছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর বোঝা উচিত, যাদের নিয়ে তিনি আন্দোলন করছেন, সেটা কতটা বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ পুলিশও আজ সেখানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করেছে ৷ পুলিশের এই আচরণের নিন্দা করছি ৷”

জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বিদেশে থাকায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তাঁর অবর্তমানে জেলা তৃণমূলের কেউ কিছু বলতে রাজি হননি ৷ তবে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়ো ফুটেজ তিনি দেখেছেন ৷ তাঁরা ওই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়াররদের চিহ্নিত করছেন ৷ এই ঘটনার জন্য ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷

মালদা, ৮ জানুয়ারি : বনধে অগ্নিগর্ভ সুজাপুরে ভিলেন হল পুলিশ ৷ আজ সেখানে গাড়িতে ভাঙচুর করতে দেখা যায় পুলিশকে ৷ সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল ৷ পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷ যদিও জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বিদেশে থাকায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন তৃণমূলের কোনও নেতা ৷ তবে পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷

NRC ও CAA সহ একাধিক ইশুতে ডাকা বনধ গোটা দেশের সঙ্গে আজ সুজাপুরেও পালিত হয় । যদিও সকাল ৬টা থেকে ঘণ্টাখানেক সেখানে ধর্মঘটের আহ্বায়ক, বাম ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছিল ৷ তারপর সেই আন্দোলনের রাশ চলে যায় সাধারণ মানুষের হাতে ৷ প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় অবরোধকারীদের ৷ এই ঝামেলা একসময় রণক্ষেত্রের আকার নেয় ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে উত্তেজিত জনতা ৷ বোমা ফাটতে শুরু করে ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ ৷ এরপর পুলিশ রবার বুলেট ও শূন্যে গুলি চালাতে শুরু করে ৷ এরই মধ্যে পুলিশের ৫টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয় ৷ সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সুজাপুর নয়মৌজা ইদগাহ মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা আরও কয়েকটি গাড়িতে ৷ মোট ৮টি গাড়ি পুড়ে যায় ৷ ঘণ্টা দুয়েক ধরে এই ছবি দেখে সুজাপুরের মানুষ ৷ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ও পুলিশের জলকামান ৷ দমকলকর্মীরা বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ৷ এসব ঝামেলার মধ্যেই একসময় দেখা যায়, কাঁধে কাঁদানে গ্যাসের শেলবক্স নিয়ে এক পুলিশকর্মী জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাধারণ গাড়ি ভাঙচুর করছেন ৷ একই ঘটনা ঘটছে জাতীয় সড়কের উলটোদিকেও ৷ খাকি উর্দিধারীদের পাশাপাশি গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায় সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও ৷ সেই ছবি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ৷ এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে উত্তেজনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলে অনেকে ৷ পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷

এ প্রসঙ্গে CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “আজ গোটা মালদা জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে ৷ এবারের ধর্মঘটের চেহারা অনেক ভালো ছিল ৷ সমস্ত প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল ৷ হঠাৎ শোনা গেল, সুজাপুরে লাঠিচার্জ হচ্ছে, কাঁদানে গ্যাস চলছে ৷ পুলিশের গুলি চলছে ৷ আমরা সেকথা শুনে খোঁজখবর নিই ৷ আমরা জানতে পারি, পুলিশ সেখানকার ধর্মঘট সমর্থকদের প্ররোচনা দিয়েছে ৷ শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটে সুজাপুরে এমন অশান্তি হল কেন, তার জবাব পুলিশকেই দিতে হবে ৷ এর দায়ও পুলিশকে নিতে হবে ৷ আমরা ছবিতে দেখছি, কাঁধে টিয়ার গ্যাসের শেলের ব্যাগ, হাতে রাইফেল নিয়ে পুলিশই গাড়ি ভাঙছে ৷ সাধারণ পুলিশের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও গাড়ি ভাঙতে দেখা যাচ্ছে ৷ নয়মৌজার মাঠে বছরের প্রতিটি দিন অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে ৷ সেখানে একজন বিক্ষোভকারীকেও দেখা যাচ্ছে না ৷ শুধু পুলিশকেই সেখানে দেখা যাচ্ছে ৷ এটা ভয়ঙ্কর ৷ প্রশাসনের এনিয়ে তদন্ত করা উচিত ৷ সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ করার জন্য আজ পুলিশ নিজেরা এই ইশু তৈরি করেছে ৷ আমরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি দাবি করছি ৷”

জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় এনিয়ে বলেন, “এর আগে কালিয়াচক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ যারা সেই কাজ করেছিল তারা সবাই তৃণমূলের ৷ সেই ঘটনায় পুলিশ নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রচুর তোলাবাজি করেছে ৷ সেই ঘটনা থেকে কালিয়াচকের মানুষ আগে থেকেই ভীত সন্ত্রস্ত ছিল ৷ আজ পর্যন্ত কালিয়াচকের মানুষ NRC র বিরুদ্ধে কোনও অশান্তি সৃষ্টি করেননি ৷ সারা রাজ্যের তুলনায় কালিয়াচকের মানুষ অনেক বেশি ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে ৷ তারা এলাকার সুস্থিতি বজায় রেখেছে৷ আজও তারা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেয় ৷ তখনই জামিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা JNU এর কায়দায় পুলিশ সেখানে অশান্তি তৈরি করে ৷ পুলিশের প্ররোচনায়, পুলিশ ও তৃণমূলের আঁতাতে আজ সেখানে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে ৷ পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে ৷ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর জন্য পুলিশ আজ এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি ৷ এই ঘটনায় কোনও নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হলে কংগ্রেস অন্য দলগুলিকে নিয়ে কালিয়াচক-সুজাপুরে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলবে ৷”

পুলিশের এহেন কাজের নিন্দা করেছেন BJP র জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলও ৷ তিনি বলেন, “NRC ও CAA ইশুতে যারা বনধ ডেকেছিল, সুজাপুরের ঘটনায় তাদের কোনও চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়নি ৷ ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গেছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও ঝান্ডা নেই ৷ সেখানে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে ৷ স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করার চেষ্টা করে ৷ পুলিশ কি জানত না, সুজাপুরের মতো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে? না হলে পুলিশ আগাম কোনও ব্যবস্থা কেন নেয়নি ? এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা স্টেশন আগুন লাগিয়ে, ভাঙচুর করা হয়েছে, আজ সুজাপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়িতেও তেমনভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরের বৃষ্টি করা হয়েছে ৷ ঠিক কাশ্মীরের কায়দায় ৷ এসব ঘটনা কোন দিকে ইঙ্গিত করছে, মানুষ তা বুঝতে পারছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর বোঝা উচিত, যাদের নিয়ে তিনি আন্দোলন করছেন, সেটা কতটা বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ পুলিশও আজ সেখানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করেছে ৷ পুলিশের এই আচরণের নিন্দা করছি ৷”

জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বিদেশে থাকায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তাঁর অবর্তমানে জেলা তৃণমূলের কেউ কিছু বলতে রাজি হননি ৷ তবে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়ো ফুটেজ তিনি দেখেছেন ৷ তাঁরা ওই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়াররদের চিহ্নিত করছেন ৷ এই ঘটনার জন্য ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷

Intro:মালদা, ০৮ জানুয়ারি : ধর্মঘটের বাজারে অগ্নিগর্ভ সুজাপুরে ভিলেন হল পুলিশ৷ আজ সেখানে বেশ কিছু গাড়িতে ভাঙচুর করতে দেখা যায় পুলিশকে৷ সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল৷ পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি৷ যদিও দলের জেলা সভানেত্রী বিদেশে থাকায় এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন তৃণমূলের কোনও নেতা৷ তবে পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷


Body:         এনআরসি, সিএএ ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে গোটা দেশের সঙ্গে আজ সুজাপুরেও বনধ্‌ পালিত হয়৷ যদিও সকাল ৬টা থেকে ঘণ্টাখানেক সেখানে ধর্মঘটের আহ্বায়ক, বাম ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের দেখা গিয়েছিল৷ তারপর সেই আন্দোলনের রাশ চলে যায় সাধারণ মানুষের হাতে৷ প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক৷ তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় অবরোধকারীদের৷ এই ঝামেলা একসময় রণক্ষেত্রের আকার নেয়৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে উত্তেজিত জনতা৷ মুড়ি মুড়কির মতো বোমা ফাটতে শুরু করে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ৷ এরপর পুলিশ রবার বুলেট ও শূন্যে গুলি চালাতে শুরু করে৷ এরই মধ্যে পুলিশের ৫টি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়৷ সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে সুজাপুর নয়মৌজা ইদগাহ মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা আরও কয়েকটি গাড়িতে৷ মোট ৮টি গাড়ি পুড়ে যায়৷ ঘণ্টা দুয়েক ধরে এই ছবি দেখে সুজাপুরের মানুষ৷ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে৷ ঘটনাস্থলে আসে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ও পুলিশের জলকামান৷ দমকলকর্মীরা বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন৷
         এসব ঝামেলার মধ্যেই একসময় দেখা যায়, কাঁধে কাঁদানে গ্যাসের শেলবক্স নিয়ে এক পুলিশকর্মী জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাধারণ গাড়ি ভাঙচুর করছেন৷ একই ঘটনা ঘটছে জাতীয় সড়কের উলটোদিকেও৷ খাকি উর্দিধারীদের পাশাপাশি গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায় সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও৷ সেই ছবি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়৷ প্রশ্ন ওঠে, তবে কি এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মামলার ধার ধারালো করতেই পুলিশ এই কাজ করল? এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে উত্তেজনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলে অনেকে৷ পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে জেলার রাজনৈতিক মহলে৷
         এপ্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “আজ গোটা মালদা জেলায় শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক ধর্মঘট হয়েছে৷ এবারের ধর্মঘটের চেহারা অনেক ভালো ছিল৷ সমস্ত প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল৷ হঠাৎ শোনা গেল, সুজাপুরে লাঠিচার্জ হচ্ছে, কাঁদানে গ্যাস চলছে৷ পুলিশের গুলি চলছে৷ আমরা সেকথা শুনে খোঁজখবর নিই৷ আমরা জানতে পারি, পুলিশ সেখানকার ধর্মঘটী মানুষদের প্ররোচনা দিয়েছে৷ পুলিশ কেন মানুষকে প্ররোচনা দেবে? শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটে সুজাপুরে এমন অশান্তি হল কেন, তার জবাব পুলিশকেই দিতে হবে৷ এর দায়ও পুলিশকে নিতে হবে৷ আমরা ছবিতে দেখছি, কাঁধে টিয়ার গ্যাসের শেলের ব্যাগ, হাতে রাইফেল নিয়ে পুলিশই গাড়ি ভাঙছে৷ সাধারণ পুলিশের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও গাড়ি ভাঙতে দেখা যাচ্ছে৷ নয়মৌজার মাঠে বছরের প্রতিটি দিন অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে৷ সেখানে একজন বিক্ষোভকারীকেও দেখা যাচ্ছে না৷ শুধু পুলিশকেই সেখানে দেখা যাচ্ছে৷ এটা ভয়ঙ্কর৷ পুলিশ এভাবে গাড়ি ভাঙচুর করতে পারে? প্রশাসনকে এনিয়ে তদন্ত করা উচিত৷ সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ করার জন্য আজ পুলিশ নিজেরা এই ইশ্যু তৈরি করেছে৷ আমরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি দাবি করছি৷”
         জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় এনিয়ে বলেন, “এর আগে কালিয়াচক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ যারা সেই কাজ করেছিল তারা সবাই তৃণমূলের৷ সেই ঘটনায় পুলিশ নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রচুর তোলাবাজি করেছে৷ সেই ঘটনা থেকে কালিয়াচকের মানুষ আগে থেকেই ভীত সন্ত্রস্ত ছিল৷ আজ পর্যন্ত কালিয়াচকের মানুষ এনআরসি’র বিরুদ্ধে কোনও অশান্তি সৃষ্টি করেনি৷ সারা রাজ্যের তুলনায় কালিয়াচকের মানুষ অনেক বেশি ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে৷ তারা এলাকার সুস্থিতি বজায় রেখেছে৷ আজও তারা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নেয়৷ তখনই জামিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা জেএনইউ-এর কায়দায় পুলিশ সেখানে অশান্তি তৈরি করে৷ পুলিশের প্ররোচনায়, পুলিশ ও তৃণমূলের আঁতাতে আজ সেখানে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে৷ পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে৷ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর জন্য পুলিশ আজ এসব কাণ্ড ঘটিয়েছে৷ আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি৷ এই ঘটনায় কোনও নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হলে কংগ্রেস অন্যান্য দলগুলিকে নিয়ে কালিয়াচক-সুজাপুরে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলবে৷”
         পুলিশের এহেন কাজের নিন্দা করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলও৷ তিনি বলেন, “এনআরসি ও সিএএ ইশ্যুতে যারা বনধ্‌ ডেকেছিল, সুজাপুরের ঘটনায় তাদের কোনও চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়নি৷ ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গেছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও ঝান্ডা নেই৷ সেখানে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে৷ স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করার চেষ্টা করে৷ পুলিশ কি জানত না, সুজাপুরের মতো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে? নইলে পুলিশ আগাম কোনও ব্যবস্থা কেন নেয়নি৷ এর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর ও ভালুকা স্টেশন আগুন লাগিয়ে, ভাঙচুর করা হয়েছে, আজ সুজাপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের গাড়িতেও তেমনভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরের বৃষ্টি করা হয়েছে৷ ঠিক কাশ্মীরের কায়দায়৷ এসব ঘটনা কোন দিকে ইঙ্গিত করছে, মানুষ তা বুঝতে পারছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর বোঝা উচিত, যাদের নিয়ে তিনি আন্দোলন করছেন, সেটা কতটা ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ পুলিশও আজ সেখানে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করেছে৷ পুলিশের এই আচরণের নিন্দা করছি৷”


Conclusion:         জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর বিদেশে থাকায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ তাঁর অবর্তমানে জেলা তৃণমূলের কেউ কিছু বলতে রাজি হননি৷ তবে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই ভিডিয়ো ফুটেজ তিনি দেখেছেন৷ তাঁরা ওই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়াররদের চিহ্নিত করছেন৷ এই ঘটনার জন্য ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.