ETV Bharat / state

Bird Watching Tourism: পাখি দেখতে গ্রামে আসুন পর্যটকরা, চাইছে সিতনটোলা

মালদার (Malda) হবিবপুর ব্লকের ধুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিতনটোলা গ্রাম ৷ গ্রামে পৌঁছয়নি উন্নয়নের ছিটেফোঁটা ৷ রয়েছে তিনটি বিরাট বিল ৷ সেগুলিতে প্রচুর পাখি আসে ৷ বিল তিনটি ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র (Bird Watching Tourism) গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
ফাইল ছবি ৷
author img

By

Published : Dec 19, 2022, 6:40 PM IST

পাখি পর্যটন কেন্দ্র চাইছে সিতনটোলা গ্রাম

মালদা, 19 ডিসেম্বর: প্রকৃতির সম্ভার অপার ৷ রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা ৷ তারপরও সুদিনের মুখ দেখেনি মালদার (Malda) হবিবপুর ব্লকের ধুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিতনটোলা গ্রাম ৷ 100 শতাংশ আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামের সর্বত্রই দারিদ্র্যের ছাপ ভীষণ স্পষ্ট ৷ অথচ, এই গ্রামেই রয়েছে তিনটি বিরাট জলাশয় ৷ তার টানে ভিড় জমায় পাখির ঝাঁক ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রশাসন উদ্যোগী হলে এই তিনটি জলাশয়কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র (Bird Watching Tourism) ৷ তাতে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন হবে ৷ কিন্তু, প্রশাসন দায় সেরেছে শুধুমাত্র একটি সাইন বোর্ড লাগিয়ে ৷

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সবমিলিয়ে এই গ্রামে প্রায় 30 ঘর মানুষের বাস ৷ পেট চলে ক্ষেতমজুরি করে ৷ পেটের টানে অনেকেই পাড়ি দেন ভিনরাজ্যে ৷ মালদা শহর থেকে এই গ্রামটির দূরত্ব প্রায় 30 কিলোমিটার ৷ গ্রামে ঢোকার মুখে খানিকটা পাকা রাস্তা থাকলেও তারপরই শুরু হয় বেহাল মেঠো পথ ৷ গ্রামের প্রান্তের দিকে শেষের তিন কিলোমিটারে অবশ্য সেই পথেরও লেশমাত্র নেই ৷ এবড়ো-খেবড়ো জমির উপর দিয়েই হোঁচট খেতে খেতে যাতায়াত করতে হয় ৷ প্রত্যেকবার পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজনীতির কারবারিরা গ্রামে ঢোকেন ৷ ভোট চেয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দেন ৷ তারপর সব ভোঁ-ভাঁ !

আরও পড়ুন: নেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য, জেলায় পোস্তচাষ বন্ধ করতে উদ্যোগী মালদা প্রশাসন

এই গ্রামে যে তিনটি বিল রয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে বড়টি হল, নয়াবাঁধ ৷ গ্রামের মানুষ বলছেন, সারা বছর বিলগুলিতে হরেক কিসিমের পাখি দেখা যায় ৷ শীতের সময় পরিযায়ী পাখিরাও দূর-দূরান্ত থেকে উড়ে আসে ৷ বসে যায় রঙের মেলা ৷ যাঁরা পাখি দেখতে ভালোবাসেন, তাঁদের কাছে এই গ্রাম সেই সময় স্বর্গ ! কিন্তু, পাকা রাস্তা না-থাকায় সেভাবে পর্যটকদের ভিড় হয় না ৷ অল্প যে ক'জন বিলের ধারে আসেন, তাঁরা ক্য়ামেরাবন্দি করে নিয়ে যান রঙিন স্মৃতি ৷

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
পরিযায়ীর পাখির আবাস্থলের সরকারি ব্যবস্থাপনা বলতে রয়েছে শুধু এই সাইন বোর্ড !

গ্রামবাসীর বক্তব্য, পাখি আর বিলগুলিকে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন গড়ে উঠলে তাঁদের রাস্তার সমস্যা যেমন মিটে যাবে ৷ কারণ, সেক্ষেত্রে গ্রামের রাস্তা পাকা করা হবে ৷ যাতায়াত হবে সহজ ৷ পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতেই বন্দোবস্ত করা যাবে ৷ বিনিময়ে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নেবেন তাঁরা ৷ অনেকটা হোম স্টে-র ধাঁচে একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যাবে ৷ তৈরি হবে নতুন দোকান, বাজার ৷ তাতেও কর্মসংস্থান হবে ৷

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
বসত ৷

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুলাল হেমব্রম এই প্রসঙ্গে বললেন, "গ্রামে ঢোকার কোনও রাস্তা নেই ৷ তার জন্য ভীষণ সমস্যা হয় ৷ নয়াবাঁধে প্রচুর পাখি আসে ৷ এই বাঁধকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে আমাদের সকলেরই ভালো হবে ৷ রাস্তাটাও ভালো হয়ে যাবে ৷ পুরো গ্রামের উন্নতি হবে ৷"

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
এই ঝিলের টানেই আসে অসংখ্য পাখি ৷

গ্রামের আর এক বাসিন্দা বিমল মুর্মু বলছেন, "আমার বাপ-দাদারা এই রাস্তা দেখতে দেখতে মরে গেল ৷ আমিও বুড়ো হয়ে গেলাম ৷ রাতে কেউ অসুস্থ হলে ঘাড়ে চাপিয়ে নিয়ে যেতে হয় ৷ রাস্তার জন্য প্রধান, বিডিওকে বলেছি ৷ কোনও কাজ হয়নি ৷ এখানে নয়াবাঁধে প্রচুর পাখি আসে ৷ বিল ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র বানালে রাস্তার সঙ্গে গ্রামটারও উন্নতি হবে ৷"

সিতনটোলা গ্রামেই জমি রয়েছে ঋষিপুর গ্রামের বাসিন্দা নিখিল মণ্ডলের ৷ তিনি জানান, "40 বছর ধরে এই রাস্তা দিয়েই সবাইকে যাতায়াত করতে হয় ৷ এই ব্যবস্থাটুকুও আমরাই করেছি ৷ সরকার কোনওদিন এদিকে নজর দেয়নি ৷ এখানে পাখি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে খুবই ভালো হয় ৷ তাহলে বাইরের প্রচুর লোক আসবে ৷ রাস্তাটাও পাকা হয়ে যাবে ৷ সিতনটোলা গ্রামটার সবদিক থেকে উন্নতি হবে ৷"

পাখি পর্যটন কেন্দ্র চাইছে সিতনটোলা গ্রাম

মালদা, 19 ডিসেম্বর: প্রকৃতির সম্ভার অপার ৷ রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা ৷ তারপরও সুদিনের মুখ দেখেনি মালদার (Malda) হবিবপুর ব্লকের ধুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিতনটোলা গ্রাম ৷ 100 শতাংশ আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামের সর্বত্রই দারিদ্র্যের ছাপ ভীষণ স্পষ্ট ৷ অথচ, এই গ্রামেই রয়েছে তিনটি বিরাট জলাশয় ৷ তার টানে ভিড় জমায় পাখির ঝাঁক ৷ স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রশাসন উদ্যোগী হলে এই তিনটি জলাশয়কে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠতে পারে পর্যটনকেন্দ্র (Bird Watching Tourism) ৷ তাতে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন হবে ৷ কিন্তু, প্রশাসন দায় সেরেছে শুধুমাত্র একটি সাইন বোর্ড লাগিয়ে ৷

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সবমিলিয়ে এই গ্রামে প্রায় 30 ঘর মানুষের বাস ৷ পেট চলে ক্ষেতমজুরি করে ৷ পেটের টানে অনেকেই পাড়ি দেন ভিনরাজ্যে ৷ মালদা শহর থেকে এই গ্রামটির দূরত্ব প্রায় 30 কিলোমিটার ৷ গ্রামে ঢোকার মুখে খানিকটা পাকা রাস্তা থাকলেও তারপরই শুরু হয় বেহাল মেঠো পথ ৷ গ্রামের প্রান্তের দিকে শেষের তিন কিলোমিটারে অবশ্য সেই পথেরও লেশমাত্র নেই ৷ এবড়ো-খেবড়ো জমির উপর দিয়েই হোঁচট খেতে খেতে যাতায়াত করতে হয় ৷ প্রত্যেকবার পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজনীতির কারবারিরা গ্রামে ঢোকেন ৷ ভোট চেয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দেন ৷ তারপর সব ভোঁ-ভাঁ !

আরও পড়ুন: নেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য, জেলায় পোস্তচাষ বন্ধ করতে উদ্যোগী মালদা প্রশাসন

এই গ্রামে যে তিনটি বিল রয়েছে, তার মধ্যে সবথেকে বড়টি হল, নয়াবাঁধ ৷ গ্রামের মানুষ বলছেন, সারা বছর বিলগুলিতে হরেক কিসিমের পাখি দেখা যায় ৷ শীতের সময় পরিযায়ী পাখিরাও দূর-দূরান্ত থেকে উড়ে আসে ৷ বসে যায় রঙের মেলা ৷ যাঁরা পাখি দেখতে ভালোবাসেন, তাঁদের কাছে এই গ্রাম সেই সময় স্বর্গ ! কিন্তু, পাকা রাস্তা না-থাকায় সেভাবে পর্যটকদের ভিড় হয় না ৷ অল্প যে ক'জন বিলের ধারে আসেন, তাঁরা ক্য়ামেরাবন্দি করে নিয়ে যান রঙিন স্মৃতি ৷

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
পরিযায়ীর পাখির আবাস্থলের সরকারি ব্যবস্থাপনা বলতে রয়েছে শুধু এই সাইন বোর্ড !

গ্রামবাসীর বক্তব্য, পাখি আর বিলগুলিকে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন গড়ে উঠলে তাঁদের রাস্তার সমস্যা যেমন মিটে যাবে ৷ কারণ, সেক্ষেত্রে গ্রামের রাস্তা পাকা করা হবে ৷ যাতায়াত হবে সহজ ৷ পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার জন্য গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতেই বন্দোবস্ত করা যাবে ৷ বিনিময়ে পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নেবেন তাঁরা ৷ অনেকটা হোম স্টে-র ধাঁচে একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা যাবে ৷ তৈরি হবে নতুন দোকান, বাজার ৷ তাতেও কর্মসংস্থান হবে ৷

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
বসত ৷

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুলাল হেমব্রম এই প্রসঙ্গে বললেন, "গ্রামে ঢোকার কোনও রাস্তা নেই ৷ তার জন্য ভীষণ সমস্যা হয় ৷ নয়াবাঁধে প্রচুর পাখি আসে ৷ এই বাঁধকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে আমাদের সকলেরই ভালো হবে ৷ রাস্তাটাও ভালো হয়ে যাবে ৷ পুরো গ্রামের উন্নতি হবে ৷"

people want Bird Watching Tourism for development in a remote village of Malda
এই ঝিলের টানেই আসে অসংখ্য পাখি ৷

গ্রামের আর এক বাসিন্দা বিমল মুর্মু বলছেন, "আমার বাপ-দাদারা এই রাস্তা দেখতে দেখতে মরে গেল ৷ আমিও বুড়ো হয়ে গেলাম ৷ রাতে কেউ অসুস্থ হলে ঘাড়ে চাপিয়ে নিয়ে যেতে হয় ৷ রাস্তার জন্য প্রধান, বিডিওকে বলেছি ৷ কোনও কাজ হয়নি ৷ এখানে নয়াবাঁধে প্রচুর পাখি আসে ৷ বিল ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র বানালে রাস্তার সঙ্গে গ্রামটারও উন্নতি হবে ৷"

সিতনটোলা গ্রামেই জমি রয়েছে ঋষিপুর গ্রামের বাসিন্দা নিখিল মণ্ডলের ৷ তিনি জানান, "40 বছর ধরে এই রাস্তা দিয়েই সবাইকে যাতায়াত করতে হয় ৷ এই ব্যবস্থাটুকুও আমরাই করেছি ৷ সরকার কোনওদিন এদিকে নজর দেয়নি ৷ এখানে পাখি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে খুবই ভালো হয় ৷ তাহলে বাইরের প্রচুর লোক আসবে ৷ রাস্তাটাও পাকা হয়ে যাবে ৷ সিতনটোলা গ্রামটার সবদিক থেকে উন্নতি হবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.