মালদা, ১৩ ফেব্রুয়ারি : পুরাতন মালদার ঝাড়পুকুরিয়া গ্রামে চাষের জমি থেকে উদ্ধার হল এক মাসের শিশু। তাকে উদ্ধার করে এক স্থানীয় বাসিন্দা ধুমাদিঘি হেলথ সাবসেন্টারে নিয়ে যান। তারপর সেখান থেকে তাকে জেলা চাইল্ড লাইনের কর্মীরা মালদা পুলিশের সহযোগিতায় থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও ঝাড়পুকুরিয়া গ্রামে নিজের জমিতে চাষ করতে গেছিলেন পুরাতন মালদার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলঢাব গ্রামের কমলা কিসকু। চাষের কাজ করার সময় তাঁর কানে আসে শিশুর কান্নার আওয়াজ। সেই আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলে তিনি দেখেন এক শিশু জমিতে পড়ে আছে। তাকে কোলে নিয়ে তিনি গ্রাম ঘুরে বাবা-মা'র খোঁজ করেন। কিন্তু কেউই শিশুর বাবা-মা হিসেবে পরিচয় দেননি। তাই কী করবেন বুঝতে না পেরে তিনি শিশুকে নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে যান। পরে শিশুর কান্না না থামলে তাকে স্থানীয় ধুমাদিঘি হেলথ সাবসেন্টারে। সেখানে তিনি সব কথা জানান। তারপর সাবসেন্টারের কর্মীরা যোগাযোগ করেন জেলা চাইল্ড লাইনে। খবর পেয়ে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা মালদা থানার পুলিশের সহযোগিতায় দুপুরে ওই শিশুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। বিকেলে পুলিশ ও চাইল্ড লাইনের কর্মীরা চিকিৎসার জন্য শিশুকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করেন।
ঝাড়পুকুরিয়া ও শিমুলঢাব গ্রাম দু'টি আদিবাসী অধ্যুষিত। গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। আজ সকালে জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ভিতরে একটি চাষের জমিতে এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন কমলাদেবী। আদিবাসী এলাকায় ফর্সা ফুটফুটে বাচ্চাটিকে দেখে প্রথমেই তাঁর সন্দেহ হয়। শুধুমাত্র মেয়ে হওয়ার অপরাধে কেউ বা কারা মাত্র এক মাসের শিশুকে জমিতে ফেলে দিয়ে গেছে। তবুও তিনি বাচ্চাটির অভিভাবকদের খোঁজ করেন। কিন্তু সফল হননি।
খবর পেয়ে আজ দুপুরে যান জেলা চাইল্ড লাইনের দুই কর্মী স্বপ্না কর্মকার ও চিন্ময় দাস। তাঁরা মালদা থানার পুলিশের সহযোগিতায় ধুমাদিঘি সাবসেন্টার থেকে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। চিন্ময় দাস বলেন, "১০৯৮ নম্বর থেকে ফোন করে আমাদের বাচ্চা উদ্ধারের খবর জানানো হয়। সেই খবর পেয়েই আমরা পুলিশের সাহায্য নিয়ে ঘটনাস্থানে যাই। সেখান থেকে শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। তার বয়স প্রায় এক মাস। দেখে মনে হচ্ছে অসুস্থ। এখান থেকে ওকে আমরা মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেছি।"