মালদা, 4 জানুয়ারি : জমি মাফিয়াদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক বৃদ্ধ ৷ মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার ঘটনা ৷ আক্রান্ত বৃদ্ধ একটি পেট্রল পাম্পের মালিক ৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷ যদিও তা অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ ঘটনার পরই হরিশচন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্তের পরিবার ৷
আক্রান্ত বৃদ্ধের নাম জগদীশ ভগত ৷ তিনি ক্যানসার আক্রান্ত ৷ বারোদুয়ারি এলাকায় তাঁর অনেক পুরনো পেট্রল পাম্প রয়েছে ৷ এখন সেই পাম্প দেখাশোনা করেন তাঁর ছেলে রাজীব ভগত ৷ অভিযোগ, কয়েকদিন আগে নিজেদের পাম্পের সামনের জমি টিন দিয়ে ঘিরে ফেলেন রাজীববাবু ৷ সম্প্রতি সেই জমি নিজের বলে দাবি করেন প্রেমলতা মণ্ডল নামে এক মহিলা ৷ অভিযোগ, এদিন প্রেমলতাদেবীর হয়ে ওই জমির টিনের বেড়া ভেঙে দেওয়া হয় ৷ এলাকার বাবুল কর্মকার, সাদ্দাম হোসেন সহ আরও কয়েকজন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেন প্রেমলতা দেবী ৷ এলাকায় তাঁরা তৃণমূল কর্মী বলেও দাবি করেন তিনি ৷
জানা গিয়েছে টিনের বেড়া ভেঙে দেওয়ার সময় তাঁদের বাধা দেন রাজীব ভগতরা ৷ সেই সময়ই তাঁদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷ খবর পেয়েই এলাকার বাসিন্দারা এলে পালিয়ে যায় বাবলু ও তাদের দলবল ৷ আহত অবস্থায় জগদীশবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মালদায় স্থানান্তরিত করা হয় ৷ তাঁকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে ৷
আরও পড়ুন : মালদায় বিজেপি মণ্ডল সভাপতিকে গুলি, অভিযুক্ত তৃণমূল
এবিষয়ে রাজীববাবু বলেন, “হামলাকারীরা সবাই তৃণমূল কর্মী ৷ এরা হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় জমির মাফিয়া ৷ কয়েকদিন আগে এমনই আর একটি ঘটনা ঘটিয়েছে এলাকায় ৷ এবার আমাদের জমির দিকে নজর দিয়েছে ৷ বাধা দেওয়ায় আমার ক্যানসার আক্রান্ত বাবাকে মারধর করেছে ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বাবাকে মালদা রেফার করে দিয়েছেন ৷ কিন্তু তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাচ্ছি ৷ গোটা ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি ৷ আমি বিষয়টি জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর, প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাব ৷ আমি সুবিচার চাই ৷”
এদিকে প্রেমলতা মণ্ডলের দাবি, “ওখানে আমার সাড়ে 11 বিঘা জমি ছিল ৷ তার মধ্যে কিছু জমি বিক্রি করা হয়েছে ৷ এখন সাড়ে 10 বিঘা জমি আছে ৷ আমার জমি জগদীশ ভগত, টিংকু ভগতরা জোর করে দখল করছে ৷ রাতের অন্ধকারে জমিতে মাটি ফেলে, টিন দিয়ে ঘিরে দিচ্ছে ৷ নিজের জমি উদ্ধার করার চেষ্টা করেছি ৷ আমি আমার জমি ফেরত চাই ৷”
এই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, “এসব মিথ্যে অভিযোগ ৷ তৃণমূলের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় ৷ ভোটের আগে এসব নিয়ে বিজেপি মিথ্যা প্রচার করার চেষ্টা করছে ৷ আমাদের দল এসব অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেয় না ৷ আইন আইনের পথে চলবে ৷” বিজেপির হরিশ্চন্দ্রপুর দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “কয়েকদিন আগেও হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় একটি দেওয়াল ভাঙা নিয়ে গোলমালের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল তৃণমূলের ৷ এই ঘটনাতেও তৃণমূলের লোকজন জড়িয়ে রয়েছে ৷ এরা হরিশ্চন্দ্রপুরে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দেবে না বলে ঠিক করেছে ৷ তবে আর মাত্র 3-4 মাস ৷ তারপর শুধু মালদা নয়, গোটা রাজ্য থেকেই এদের বিদায় ঘটবে৷ এই স্বৈরাচারী শাসন কেউ আর চাইছে না ৷”