মালদা, 2 মে: কোচবিহার থেকে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ৷ তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে দলের উচ্ছৃঙ্খল ছবিটা ভালোই নজরে এসেছে দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ গণভোটে অশান্তির ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে ৷ হিতে বিপরীত পরিস্থিতি বুঝেই কি তিনি একের পর এক জনসভা বাতিল করছেন ? ইটাহার, গঙ্গারামপুরের পর এবার মালদা জেলাতেও চারটি জনসভা বাতিল করা হয়েছে অভিষেকের ৷
রাজনৈতিক মহল বলছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শাসকদলের এই কর্মসূচি যত উত্তরবঙ্গ থেকে নীচের দিকে নামছে, ততই দলের অন্দরের হাড়-কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ছে ৷ সম্ভবত সে কারণেই ঘাসফুল শিবিরের নিয়োগ করা সংস্থা আইপ্যাক কিংবা দলের নেতৃত্ব চাইছে, আর বেশি জনসভা না করতে ৷ তাতে ভালোর থেকে খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ৷ তাই নমো নমো করে কয়েকটি জনসভা করেই এই কর্মসূচি শেষ করতে চাইছে শাসক শিবির ৷ যদিও মালদা জেলা তৃণমূলের সভাপতির দাবি, জনসভার বদলে রোড শো করে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছোনো যাবে ৷ সেকারণেই সভার সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে ৷
আগে বলা হয়েছিল, 3 মে গঙ্গারামপুর থেকে মালদার জেলায় প্রবেশ করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বুধবার তাঁর জনসভা করার কথা ছিল হবিবপুরের কেন্দপুকুর, গাজোলের দেওতলা এবং রতুয়ার সামসীতে৷ পরদিন তাঁর সভা হওয়ার কথা ছিল মানিকচকের এনায়েতপুর, কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি এবং কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের সুজাপুরে ৷ কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর যে চূড়ান্ত সফরসূচি এসেছে, তাতে এই জেলার চারটি জনসভাই উধাও ৷
বুধবার শুধুমাত্র রতুয়ার সামসী এবং পরদিন মানিকচকের এনায়েতপুরে জনসভা করবেন তিনি ৷ বাকি সবটাই রোড শো ৷ বিরোধীদের কটাক্ষ,এই জেলায় শাসকদলের যত উপদল রয়েছে এবং তাদের মধ্যে এখন যে সংঘাত চলছে, তাতে জনসভার মাঠ ভরানোটাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ৷ টানা ক’দিন ধরে এই জেলায় ঘাসফুলের খেত চষে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে আইপ্যাক ৷ তাই তারা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জনসভা কমিয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন: 24-এর লোকসভা নির্বাচন 'পরিবর্তনের ভোট', বিরোধীদের জোটবার্তা মমতার
শুধু বিরোধীরাই নয়, একথা জানাচ্ছে খোদ তৃণমূলের একাংশ ৷ তাদের আরও বক্তব্য, শুধু সভার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়াই নয়, অভিষেকের সভার সময়সীমাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ যদিও জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বকসি বলছেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও জনসভার সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়নি ৷ তিনি 25 থেকে 30 মিনিট বক্তব্য দেবেন ৷ বাকি সময় আমরা বক্তব্য রাখব ৷ এত জনসভায় বক্তব্য দিয়ে তাঁর গলার পরিস্থিতি ভালো নেই ৷ ফলে তিনি বেশি সময় ধরে বক্তব্য রাখতে পারবেন না ৷ আর ছ’টি জনসভার আয়োজন করার ভুলটা ছিল মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ৷ তিনি বলেছিলেন, জনজোয়ার জনসংযোগ যাত্রা হচ্ছে ৷ অর্থাৎ মানুষের কাছে বেশি পৌঁছতে হবে ৷ এটা রোড শোয়ের মাধ্যমেই করা সম্ভব৷ তাই যেসব জায়গায় তাঁর জনসভা ছিল, তার প্রতিটি জায়গাতেই বড় রোড শো হচ্ছে ৷ কর্মসূচির কোনও কাটছাঁট হয়নি ৷ তাঁর নির্দেশেই রোড শো বাড়ানো হয়েছে ৷"