মালদা, 16 মে : লকডাউনে ঘরে অর্থের সংকট ৷ তার উপর বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকপক্ষ ৷ এনিয়ে আগেই আন্দোলন শুরু করেছিলেন পুরাতন মালদার একটি কারখানার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা ৷ শ্রমিকদের সেই আন্দোলনে সরাসরি জড়িয়ে পড়ল CPI(M)-র শ্রমিক সংগঠন, CITU ৷ কারখানার সামনে আজ বিক্ষোভ দেখায় তারা ৷ দ্রুত সমস্ত শ্রমিককে পুরো বেতন না দেওয়া হলে এবং সব শ্রমিককে কাজে নিয়োগ না করা হলে অনশন আন্দোলনে শ্রমিকরা শামিল হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন CITU নেতৃত্ব৷ তবে এনিয়ে মালিকপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷
পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে গড়ে ওঠা শিল্পতালুকে 2004 সালে ওই কারখানাটি স্থাপিত হয় ৷ এখানে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে প্রায় 550 শ্রমিক কাজ করেন ৷ লকডাউনের মধ্যেও কারখানায় উৎপাদন চালু রয়েছে ৷ তবে সরকারি নির্দেশিকা মেনে মাত্র 15 শতাংশ শ্রমিককে নিয়ে উৎপাদন চালু রাখা হয়েছে ৷ অভিযোগ, এপ্রিল মাসে যাঁদের কারখানায় কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের পুরো বেতন দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু যে স্থায়ী শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের পুরো বেতন দেওয়া হয়নি ।
কারখানার স্থায়ী কর্মী সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, " কোরোনা আবহে এমনিতেই পরিবারের অন্ন সংস্থান করতে পারছি না ৷ লকডাউনে কারখানায় কাজ চলছে ৷ অল্প কিছু শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়েছে ৷ তাঁরা এপ্রিল মাসের পুরো বেতন পেয়েছেন ৷ কিন্তু আমাদের 50 শতাংশ বেতন দেওয়া হয়েছে ৷ অথচ মালিকপক্ষই আমাদের লকডাউনে বাড়িতে পাঠিয়েছেন ৷ আমাদের দাবি, লকডাউনের মধ্যে আমাদের পুরো বেতন দিতে হবে ৷ 16 বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করছি ৷ তবু কম্পানি আমাদের কথা ভাবছে না ৷ আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা পরবর্তীতে আরও বড় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ৷"
এই জেলার CITU-র অন্যতম শীর্ষনেতা প্রণব দাস বলেন, " কোরোনার প্রেক্ষিতে গোটা দেশে লকডাউন চলছে ৷ কলকারখানা, যানবাহন সবই বন্ধ ৷ সরকার আরও ঘোষণা করেছে, বিভিন্ন কলকারখানা কিংবা বেসরকারি ক্ষেত্রে নিযুক্ত শ্রমিকদের পুরো বেতন দিতে হবে ৷ এই শিল্পতালুকে অনেক কারখানা রয়েছে ৷ প্রচুর শ্রমিক এখানে কাজ করেন ৷ শুধুমাত্র এই কারখানাতেই স্থায়ী শ্রমিকদের অর্ধেক বেতন দেওয়া হয়েছে ৷ চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের কোনও বেতন দেওয়া হয়নি ৷ অথচ এই শ্রমিকদের কারখানা কর্তৃপক্ষই লকডাউনে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ ভিতরে কিছু শ্রমিকদের দিয়ে মালিকপক্ষ কাজ করাচ্ছেন ৷ কারখানার সব শ্রমিকই কাজ করতে চান ৷ তাই সমস্ত শ্রমিককে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কাজ দেওয়ার জন্য আমরা মালিকপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি ৷ বেতন সবাইকে দিতে হবে ৷ এনিয়ে আমরা ইতিমধ্যে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এখন সব শ্রমিককে বেতন দিতে তাঁরা অপারগ ৷ আমরা গোটা বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এনেছি ৷ আমাদের দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ৷ প্রয়োজনে এই আন্দোলন অনশনের দিকে এগোবে ৷ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়েই আমরা সেই আন্দোলন সংগঠিত করব ৷"