মালদা, 26 জুলাই: পাকুয়াহাটের ঘটনায় মালদা জেলা পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৷ কমিশনের সেই নির্দেশ আসতেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিশ ৷ তবে এনিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি জেলার কোনও পুলিশকর্তা ৷ এদিকে ওই ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বামনগোলা থানার পুলিশ ৷ বুধবার জেলা আদালতের নির্দেশে ধৃতদের তিনদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ৷
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় তিন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে ৷ তবে তাঁদের মধ্যে বামনগোলা থানার আইসির নাম নেই বলেই জানা গিয়েছে ৷ এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, আইসি কোনও নির্দেশ দিলে তাঁর অধস্তন কর্মীরা কীভাবে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করতে পারেন ! পাকুয়াহাটের ঘটনা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন জেলা আদালতের আইনজীবী তথা বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত ৷
তিনি বলেন, “পাকুয়াহাটে ভরা হাটে যেভাবে পুলিশের সামনে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করা হয়েছে, সেই ঘটনায় গোটা দেশ স্তম্ভিত ৷ সেদিন পুলিশ ওই দুই মহিলাকে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় থানায় দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখে ৷ পুলিশের উচিত ছিল, সবার আগে ওই দুই মহিলার সম্ভ্রম রক্ষা করা ৷ ওই মহিলাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ৷ 164 ধারায় বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পেশ করা ৷ কারণ, সেদিন আদপে কী ঘটেছিল, তা নির্যাতিতারাই ভালো বলতে পারবেন ৷ পুলিশ এসব কিছুই করেনি ৷ এসবের মূল নায়ক বামনগোলা থানার আইসি ৷ তাঁর নির্দেশেই অধস্তন পুলিশকর্মীরা অমানবিক কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন ৷ নির্যাতিতাদের পাশে না-দাঁড়িয়ে মিথ্যে মামলায় তাঁদেরকেই জেলে পাঠানো হয়েছে ৷ এসব নিয়ে আমি 23 জুলাই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানাই ৷ কমিশন সেই অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখেছে ৷ মালদার পুলিশ সুপারের কাছে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে ৷ দু’সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ সুপারকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ নির্দেশিকার কপি রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকেও পাঠানো হয়েছে ৷”
আরও পড়ুন: ভাঙড় এবার কলকাতা পুলিশের অধীনে, ডিজিকে পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
দুই মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনায় এর আগেই তিন মহিলা-সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ ৷ পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনের খোঁজ চলছে ৷ অবশেষে পুলিশ পাকুয়াহাটের সঞ্জীব রায় ও স্বরূপ চক্রবর্তী নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে ৷ পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে ধৃতদের আজ মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক দু’জনের তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷