কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি: গোডাউন থেকে সরকারি বই চুরির ঘটনায় পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট নয় কলকাতা হাইকোর্ট । সিআইডিকে দিয়ে বৃহস্পতিবার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । দু'বছর ধরে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত করে মাত্র দু'জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে । এটা কখনওই সম্ভব নয় বলে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির ।
উত্তর দিনাজপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শকের গোডাউন থেকে প্রায় 2 লক্ষ প্রাথমিকের বই চুরি যায় । 2022 সালের 2 ডিসেম্বর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ওই দফতরের দুই চুক্তিভিত্তিক কর্মী ভিম মণ্ডল ও রফিক ইসলামের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করে । অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত করে চুরি যাওয়া কোনও বই উদ্ধার করতে পারেনি ।
দেবব্রত ঘোষ-সহ 18 জন স্থানীয় বাসিন্দা কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে । এই বিষয়ে আবেদনকারীদের আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুলিশ দু'বছর ধরে তদন্ত করে চুরি যাওয়া কোনও বই উদ্ধার করতে পারেনি । ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে । আর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অভিযোগ অনুযায়ী দু'জনের পক্ষে দু'লক্ষ বই চুরি করা সম্ভব নয় ।
চলতি বছরের 2 জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নির্দেশ দেন, কত বই চুরি গিয়েছে, কত বই উদ্ধার হয়েছে ও ছাত্রছাত্রীদের কত পরিষেবা দেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করতে হবে ।
আদালতের নির্দেশ মতো বৃহস্পতিবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আদালতে রিপোর্ট জমা করে । সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় - 1 লক্ষ 58 হাজার বই চুরি গিয়েছে । 40 হাজার বই গোডাউনে পড়েছিল । নভেম্বর 2024-এ পুলিশ দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে ।
এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য করেন, 1 লক্ষ 58 হাজার বই যার মূল্য প্রায় 3 কোটি টাকা । এত বই চুরির কাজ 2 জনের পক্ষে করা সম্ভব নয় । এর পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে । তাই নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে পুনরায় তদন্তের প্রয়োজন ।
এরপর বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়:
- এডিজি সিআইডি এই তদন্তে একজন দক্ষ অফিসার নিয়োগ করবেন ।
- ঘটনার পুনরায় তদন্ত করে নিম্ন আদালতে রিপোর্ট জমা করবে সিআইডি ৷
- 12 সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা করতে হবে ।
- সিআইডিকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করবে জেলা শিক্ষা দফতর ।