মালদা, 28 জানুয়ারি: হাওড়াতে মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে খুন হতে হয়েছে বাবাকে ৷ এ নিয়ে তোলপাড় রাজ্যজুড়ে ৷ এরই মধ্যে সরস্বতী পুজোর মেলায় দশম শ্রেণির ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ মালদায় ৷ প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত দাদা ও কাকিমা ৷ এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য-সহ চার জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হবিবপুরে (Molestation Allegation in Malda) ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে হবিবপুরের একটি গ্রামে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে মেলা বসে। গতকাল রাতে বান্ধবীদের সঙ্গে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিল এক দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযোগ, মেলায় চার যুবক ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে। মেলায় দাদাকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি জানায় ওই ছাত্রী। এরপর ওই ছাত্রীর দাদা, বোনের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে এগিয়ে আসে। সেই সময় অভিযুক্তরা ওই ছাত্রীর দাদাকে মারধর করে ৷
কোনওরকমে সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে সমস্ত ঘটনা জানায় ওই ছাত্রীর দাদা ৷ আবার প্রতিবাদ করতে এসে আক্রান্ত হন ওই ছাত্রীর কাকিমাও ৷ এই ঘটনায় মেলার উদ্যোক্তা তথা পঞ্চায়েত সদস্য নিমাই সিংঘ-সহ চারজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আক্রান্ত দাদা বলেন, "মেলায় কয়েকজন আমার বোনের শ্লীলতাহানি করে ৷ বোন বিষয়টি আমাকে জানালে, আমি ওদের বলি দাদা মেয়েদের গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? ওরা আমাকে হুমকি দেয় ওরা কমিটির লোক ৷ এরপরে আমি বোনকে নিয়ে ওখান থেকে সরে যাই ৷ পরে একটি দোকানে আমরা খাচ্ছিলাম ৷ সেই সময় ওদেরই একজন আমাকে ডাকে ৷"
এরপর তিনি আরও বলেন, "আমি সেখানে গেলে ওরা আমার মাথায় চাটি মারতে মারতে বলে, আমাদের চিনিস ? এরপরে সেখানে নিমাই সিংহ নামে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য এসে উলটে আমাকে বলতে থাকে, তুই মেলায় দাদাগিরি করছিস ৷ এরপর আমাকে মারধর করতে থাকে ৷ আমি কোনওরকমে পালিয়ে আসি ৷ বিষয়টি বাড়িতে বলতেই পরিবারের লোকজন ওদের বলতে যান ৷ সেই সময় কাকিমাকেও মারধর করা হয় ৷ পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ডিং হয়েছে ৷ আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি ৷ কিন্তু এখনও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি ৷"
আরও পড়ুন: আঠারোর তরুণীকে 'যৌন নির্যাতন', কাঠগড়ায় বিবাহিতা দিদি !
নিমাই সিংহ বলেন, "এখানে এই মেলা আমরা দীর্ঘদিন ধরে আয়োজন করে আসছি ৷ মেলাতে কে কি করেছে জানা নেই ৷ মেলাতে একটা গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ আমরা মেলা থেকে দূরে সরিয়ে ওদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম ৷ দুইবার ওদের বুঝিয়ে পাঠানোর পর আমি মেলা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলাম ৷ তৃতীয়বার কী ঘটনা ঘটেছে তা আমার জানা নেই ৷ আমার বিরুদ্ধে মারধরের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন ৷ এখানে ব্যাংকের সামনে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে ৷"