ETV Bharat / state

আমানবিক! নার্সিংহোমের বিল মেটাতে পারেনি রোগীর পরিবার, আটকে রাখার অভিযোগ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে - পরিযায়ী শ্রমিক

Migrant Labour in Trouble: মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের গণেশ দাস ৷ চিকিৎসার জন্য পূর্ণিয়া গিয়েছিলেন ৷ মাসখানেকের চিকিৎসায় আপাতত সুস্থ তিনি ৷ চিকিৎসক তাঁকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছেন ৷ কিন্তু বিলের টাকা না পেলে রোগীকে ছাড়তে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 12, 2023, 11:04 PM IST

Updated : Dec 13, 2023, 7:39 PM IST

বিলের টাকা না পেলে রোগীকে ছাড়তে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ

মালদা, 12 ডিসেম্বর: চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পা পিছলে লাইনে পড়ে গিয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিক ৷ তাঁর পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে ৷ কাটা পড়ে দু’টি আঙুল ৷ প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, সেখান থেকে তাঁকে চাঁচল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয় মালদা মেডিক্যালে ৷ সেখানেও চিকিৎসা না পেয়ে পূর্ণিয়ার একটি নার্সিংহোমে যান ৷ মাসখানেকের চিকিৎসায় আপাতত সুস্থ তিনি৷ চিকিৎসক তাঁকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু বিলের টাকা না পেলে রোগীকে ছাড়তে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ৷ লাখখানেক টাকা কোথায় থেকে জোগাড় হবে, তা ভেবেই অকূল পরিবারের লোকজন৷ টাকা জোগাড় করতে এখন দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করছেন মা ও শাশুড়ি ৷

গণেশবাবুর স্ত্রী ও এক সন্তান এই মুহূর্তে পূর্ণিয়াতেই রয়েছেন ৷ আরেক ছেলে বাড়িতে ৷ তাঁর শাশুড়ি মৃদুলা দাস বলেন, "জামাই বাইরে কাজ করতে গিয়েছিল ৷ ফেরার সময় হরিশ্চন্দ্রপুরে দুর্ঘটনা ঘটে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে ৷ এখানে চিকিৎসা না হওয়ায় ওকে পূর্ণিয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ চিকিৎসায় সব টাকাপয়সা শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ ডাক্তার ছুটিও দিয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু নার্সিংহোমের বিলের টাকা না মিটিয়ে ওকে আসতে দিচ্ছে না ৷ 15 দিন আগে মেয়ে বলেছিল, নার্সিংহোমে 70 হাজার টাকা বিল বাকি আছে ৷ আর কত টাকা বিল হয়েছে জানি না ৷ এখন আমরা টাকা জোগাড় করে যাচ্ছি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কাগজ জমা দিয়েছি ৷ এখনও কার্ড হয়নি ৷ হাতজোড় করে সবাইকে বলছি, জামাই যখন প্রাণে বেঁচেই গিয়েছে তখন সবাই ওকে ঘরে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন ৷"

বিজেপির জেলা এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য রীতেশ আগরওয়ালার বক্তব্য, "স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এই রাজ্যের বাইরে অচল ৷ সারা ভারতের মানুষের জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হয়েছে ৷ এই কার্ড থাকলে আজ গণেশের এই অবস্থা হত না ৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়ুষ্মান ভারত কার্ড রাজ্যে চালু হতে দেয়নি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রাজ্যের বাইরে তো দূরের কথা, পশ্চিমবঙ্গেও চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় না ৷ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কার্ড চালু করেছেন ৷ বিজেপি গণেশ দাসের পাশে সবসময় রয়েছে ৷"

প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের গণেশ দাস ৷ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ কিছুদিন আগে দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷ কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার ট্রেনে চেপে বসেন৷ খেয়াল করেননি, যে ট্রেনে তিনি চেপেছেন সেটা হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে দাঁড়ায় না৷ একেবারে মালদা টাউন স্টেশনে তার স্টপেজ৷ তাই হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে গতি কমতেই তিনি চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দেন ৷ তাতেই ঘটে বিপত্তি ৷

আরও পড়ুন:

  1. মালদায় বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে লরির ধাক্কা বাইকে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু দম্পতির
  2. মালদায় বার্ধক্য ভাতা করে দেওয়ার নামে কাটমানি, অভিযুক্ত সিপিএম নেতা
  3. 15 বছরের পুরনো বাস বাতিল করছে এনবিএসটিসি, পথে নামছে 73টি অত্যাধুনিক বাস

বিলের টাকা না পেলে রোগীকে ছাড়তে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ

মালদা, 12 ডিসেম্বর: চলন্ত ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে পা পিছলে লাইনে পড়ে গিয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিক ৷ তাঁর পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে ৷ কাটা পড়ে দু’টি আঙুল ৷ প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, সেখান থেকে তাঁকে চাঁচল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয় মালদা মেডিক্যালে ৷ সেখানেও চিকিৎসা না পেয়ে পূর্ণিয়ার একটি নার্সিংহোমে যান ৷ মাসখানেকের চিকিৎসায় আপাতত সুস্থ তিনি৷ চিকিৎসক তাঁকে ছুটিও দিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু বিলের টাকা না পেলে রোগীকে ছাড়তে নারাজ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ৷ লাখখানেক টাকা কোথায় থেকে জোগাড় হবে, তা ভেবেই অকূল পরিবারের লোকজন৷ টাকা জোগাড় করতে এখন দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষা করছেন মা ও শাশুড়ি ৷

গণেশবাবুর স্ত্রী ও এক সন্তান এই মুহূর্তে পূর্ণিয়াতেই রয়েছেন ৷ আরেক ছেলে বাড়িতে ৷ তাঁর শাশুড়ি মৃদুলা দাস বলেন, "জামাই বাইরে কাজ করতে গিয়েছিল ৷ ফেরার সময় হরিশ্চন্দ্রপুরে দুর্ঘটনা ঘটে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে ৷ এখানে চিকিৎসা না হওয়ায় ওকে পূর্ণিয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ চিকিৎসায় সব টাকাপয়সা শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ ডাক্তার ছুটিও দিয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু নার্সিংহোমের বিলের টাকা না মিটিয়ে ওকে আসতে দিচ্ছে না ৷ 15 দিন আগে মেয়ে বলেছিল, নার্সিংহোমে 70 হাজার টাকা বিল বাকি আছে ৷ আর কত টাকা বিল হয়েছে জানি না ৷ এখন আমরা টাকা জোগাড় করে যাচ্ছি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কাগজ জমা দিয়েছি ৷ এখনও কার্ড হয়নি ৷ হাতজোড় করে সবাইকে বলছি, জামাই যখন প্রাণে বেঁচেই গিয়েছে তখন সবাই ওকে ঘরে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন ৷"

বিজেপির জেলা এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য রীতেশ আগরওয়ালার বক্তব্য, "স্বাস্থ্যসাথী কার্ড এই রাজ্যের বাইরে অচল ৷ সারা ভারতের মানুষের জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হয়েছে ৷ এই কার্ড থাকলে আজ গণেশের এই অবস্থা হত না ৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়ুষ্মান ভারত কার্ড রাজ্যে চালু হতে দেয়নি ৷ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রাজ্যের বাইরে তো দূরের কথা, পশ্চিমবঙ্গেও চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যায় না ৷ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কার্ড চালু করেছেন ৷ বিজেপি গণেশ দাসের পাশে সবসময় রয়েছে ৷"

প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামের বাসিন্দা বছর চল্লিশের গণেশ দাস ৷ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ৷ কিছুদিন আগে দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷ কাজ শেষ করে ঘরে ফেরার ট্রেনে চেপে বসেন৷ খেয়াল করেননি, যে ট্রেনে তিনি চেপেছেন সেটা হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে দাঁড়ায় না৷ একেবারে মালদা টাউন স্টেশনে তার স্টপেজ৷ তাই হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে গতি কমতেই তিনি চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দেন ৷ তাতেই ঘটে বিপত্তি ৷

আরও পড়ুন:

  1. মালদায় বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে লরির ধাক্কা বাইকে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু দম্পতির
  2. মালদায় বার্ধক্য ভাতা করে দেওয়ার নামে কাটমানি, অভিযুক্ত সিপিএম নেতা
  3. 15 বছরের পুরনো বাস বাতিল করছে এনবিএসটিসি, পথে নামছে 73টি অত্যাধুনিক বাস
Last Updated : Dec 13, 2023, 7:39 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.