মালদা, 9 অক্টোবর: কোজাগরীর সকালেই পুকুর থেকে উদ্ধার হল এক 'লক্ষ্মীর' দেহ (Man Kills Wife)। শ্বাসরোধ করে খুনের পর হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র করে স্ত্রীর দেহ পুকুর পাড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে । শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচলের বিরস্থলি গ্রামে । অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে চাঁচল থানার পুলিশ (Malda news)।
মৃত গৃহবধূর নাম রুকসানা বিবি । বাড়ি চাঁচলের বিরস্থলি গ্রামে । পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় 6 বছর আগে গ্রামেরই যুবক রাজা খানের সঙ্গে বিয়ে হয় রুকসানার । রাজা ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে । তাঁদের 5 বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । বিয়ের পর থেকে ঘরজামাই থাকত রাজা । পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে জায়গা-জমি নিয়ে রুকসানার সঙ্গে ঝামেলা করত রাজা । মাঝেমধ্যেই রুকসানার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হত । গতকাল রাতে জালসা দেখতে গিয়েছিলেন রুকসানা । বাড়ি ফিরে ঘরে শুয়ে পড়েন তিনি । রাত একটা নাগাদ রাজা পরিবারের সকলকে ঘুম থেকে তুলে জানায় ঘরে রুকসানা নেই । এরপরেই স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে খোঁজ চলতে থাকে রুকসানার । ঘণ্টা খানেক পর রক্তের দাগ দেখে পুকুর পাড় থেকে হাত-পা বাঁধা, বিবস্ত্র অবস্থায় রুকসানার দেহ উদ্ধার হয় । খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চাঁচল থানার পুলিশ । মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: অয়নের দেহ উদ্ধারের তথ্য কেন নজর এড়িয়ে গেল, অভ্যন্তরীণ তদন্ত লালবাজারের
মৃতার মা আনো বিবি জানান, “রাত এগারোটা নাগাদ মেয়ে-জামাই নিজেদের ঘরে ঘুমোতে চলে যায় । আমরাও নিজেদের ঘরে ঘুমোতে চলে যাই । রাত একটা নাগাদ জামাই উঠে জানায়, ঘরে মেয়ে নেই । চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে গ্রামের লোকজনও জমায়েত করে । এরপর সকলে মিলে মেয়ের খোঁজ শুরু করে । ঘণ্টা খানেক পর পুকুরের ধার থেকে মেয়ের হাত-পা বাঁধা দেহ উদ্ধার হয় । আমাদের অনুমান, জামাই মেয়েকে খুন করেছে । এর আগেও একাধিকবার জায়গা-জমি নিয়ে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে অশান্তি হয়েছিল ।”
রুকসানার বোন রোজি খাতুন জানান, “গতকাল রাতে আমাদের এলাকায় জালসা হচ্ছিল । রাত এগারোটা নাগাদ জালসা থেকে ফিরে এসে দিদি-জামাইবাবু ঘরে শুয়ে পড়ে । সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি দিদি ঘরে নেই । মা বসে কাঁদছেন । জানতে পারি, জামাইবাবু রাতে দিদির মুখ চেপে ঘর থেকে টেনে বাগানে নিয়ে গিয়ে বেঁধে বাঁশ দিয়ে মেরে খুন করে । জামাইবাবু নিজের পরিবারের কথা শুনে দিদির সঙ্গে প্রায়শই ঝামেলা করত ।”
চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব হবে । আপাতত অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।