ETV Bharat / state

University of Gour Banga: প্রাক্তন উপাচার্য-রেজিস্ট্রারকে সাসপেনশনের নোটিশ রাজ্যপাল মনোনীত নয়া উপাচার্যের

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 13, 2023, 1:02 PM IST

রাজ্যপাল মনোনীত নয়া উপাচার্য সাসপেনশনের নোটিশ ধরালেন রেজিস্ট্রারকে ৷ সেইসঙ্গে নোটিশ দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন উপাচার্যকেও ৷ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দায়িত্ব নিয়েই সাসপেনশনের চিঠি দেওয়া নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে জেলার শিক্ষক মহলে ৷

University of Gour Banga
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়

মালদা, 13 সেপ্টেম্বর: দায়িত্ব নিয়েই প্রাক্তন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে সাসপেনশনের নোটিশ ধরালেন রাজ্যপাল মনোনীত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য রজতকিশোর দে ৷ গত সোমবার তাঁর স্বাক্ষরিত সাসপেনশনের চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য চঞ্চল চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে জেলার শিক্ষক মহলে ৷ বিষয়টি নিয়ে সাসপেন্ড হওয়া চঞ্চলবাবু ও বিপ্লববাবু সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি না-হলেও উপাচার্য জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই ওই দু'জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷

যদিও এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে উপাচার্যকে কার্যত রাজ্যপালের ছাত্র বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ 2020 সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়োগ করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ সেই সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক বিপ্লব গিরি ৷ চঞ্চলবাবু মুর্শিদাবাদের লালবাগের বাসিন্দা ৷ বিপ্লববাবুর বাড়ি দমদমে ৷ দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন ৷ তাঁদের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে 54 জন শিক্ষক-সহ কয়েকজন আধিকারিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ৷

যদিও তার কিছুদিন পরেই বিধানসভা নির্বাচন চলে আসে ৷ থমকে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ অবশ্য ওই সময়ের মধ্যেই 11 জন শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যায় ৷ পরবর্তীতে এই প্রক্রিয়া নিয়েই বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করে ৷ এনিয়ে উপাচার্য-সহ উচ্চশিক্ষা দফতরেও অভিযোগ জমা পড়ে ৷ তার ভিত্তিতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয় ৷ শান্তি ছেত্রী উপাচার্য থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সভাতেও বেশ কয়েকবার এনিয়ে ঝড় ওঠে ৷

রোস্টার এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মে বারবার অভিযুক্ত হয়েছেন তৎকালীন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ৷ শেষ পর্যন্ত উপাচার্য শান্তি ছেত্রীর আমলে বিষয়টি নিয়ে ফের তদন্ত শুরু হয় ৷ শান্তি ছেত্রীর অবসর গ্রহণের পর সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক রজতকিশোর দে'কে নিযুক্ত করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ শেষ পর্যন্ত রজতবাবুর হাত ধরেই চঞ্চল চৌধুরী ও বিপ্লব গিরির উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসল ৷ দুই অধ্যাপককে তাঁদের সাসপেনশনের নোটিশ ধরানো হয়েছে ৷ তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷

এনিয়ে উপাচার্য রজতকিশোর দে জানিয়েছেন, 2020 সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও আধিকারিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে ৷ এনিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয় ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আগের উপাচার্যের আমলেই এই দু'জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ গত 9 সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের 38 নম্বর এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে তদন্ত কমিটির সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় ৷ আমি শুধু এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছি ৷

এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি চঞ্চলবাবু কিংবা বিপ্লববাবু ৷ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে দু'জনেই জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রোস্টারের অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকারের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্ট (বিসিডব্লিউডি) দফতর ৷ তাই রোস্টার বিতর্কের দায় তাঁদের কাঁধে চাপানো যায় না ৷ তাছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়নি ৷ তাঁদের শোকজও করা হয়নি ৷ সুতরাং এই সাসপেনশন নোটিশ সঠিক নয় ৷ তবে তাঁরা আরও কয়েকদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ দেখতে চাইছেন ৷

নয়া উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য এসব করে রাজ্যপালের কাছে নিজের নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন ৷ উপাচার্য পদে তাঁর নিয়োগ কতটা বৈধ, তা নিয়েও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে ৷ এই মুহূর্তে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধ চরম আকার নিয়েছে ৷ প্রায় প্রতিদিনই চলছে কথা চালাচালি ৷ তার মধ্যে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তন পদাধিকারীকে সাসপেনশনের নোটিশ ওই আগুনে ঘি ঢালল বলেই মনে করা হচ্ছে ৷

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে গতি আনতে 'স্পিড প্রোগ্রাম' চালু রাজ্যপালের

মালদা, 13 সেপ্টেম্বর: দায়িত্ব নিয়েই প্রাক্তন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে সাসপেনশনের নোটিশ ধরালেন রাজ্যপাল মনোনীত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য রজতকিশোর দে ৷ গত সোমবার তাঁর স্বাক্ষরিত সাসপেনশনের চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য চঞ্চল চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে জেলার শিক্ষক মহলে ৷ বিষয়টি নিয়ে সাসপেন্ড হওয়া চঞ্চলবাবু ও বিপ্লববাবু সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি না-হলেও উপাচার্য জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই ওই দু'জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷

যদিও এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে উপাচার্যকে কার্যত রাজ্যপালের ছাত্র বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ 2020 সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়োগ করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ সেই সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ছিলেন ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক বিপ্লব গিরি ৷ চঞ্চলবাবু মুর্শিদাবাদের লালবাগের বাসিন্দা ৷ বিপ্লববাবুর বাড়ি দমদমে ৷ দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন ৷ তাঁদের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে 54 জন শিক্ষক-সহ কয়েকজন আধিকারিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয় ৷

যদিও তার কিছুদিন পরেই বিধানসভা নির্বাচন চলে আসে ৷ থমকে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া ৷ অবশ্য ওই সময়ের মধ্যেই 11 জন শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যায় ৷ পরবর্তীতে এই প্রক্রিয়া নিয়েই বিস্তর অভিযোগ উঠতে শুরু করে ৷ এনিয়ে উপাচার্য-সহ উচ্চশিক্ষা দফতরেও অভিযোগ জমা পড়ে ৷ তার ভিত্তিতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয় ৷ শান্তি ছেত্রী উপাচার্য থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সভাতেও বেশ কয়েকবার এনিয়ে ঝড় ওঠে ৷

রোস্টার এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মে বারবার অভিযুক্ত হয়েছেন তৎকালীন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ৷ শেষ পর্যন্ত উপাচার্য শান্তি ছেত্রীর আমলে বিষয়টি নিয়ে ফের তদন্ত শুরু হয় ৷ শান্তি ছেত্রীর অবসর গ্রহণের পর সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক রজতকিশোর দে'কে নিযুক্ত করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ শেষ পর্যন্ত রজতবাবুর হাত ধরেই চঞ্চল চৌধুরী ও বিপ্লব গিরির উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে আসল ৷ দুই অধ্যাপককে তাঁদের সাসপেনশনের নোটিশ ধরানো হয়েছে ৷ তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷

এনিয়ে উপাচার্য রজতকিশোর দে জানিয়েছেন, 2020 সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও আধিকারিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে ৷ এনিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হয় ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আগের উপাচার্যের আমলেই এই দু'জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ গত 9 সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের 38 নম্বর এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে তদন্ত কমিটির সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় ৷ আমি শুধু এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছি ৷

এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি চঞ্চলবাবু কিংবা বিপ্লববাবু ৷ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে দু'জনেই জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রোস্টারের অনুমোদন দেয় রাজ্য সরকারের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্ট (বিসিডব্লিউডি) দফতর ৷ তাই রোস্টার বিতর্কের দায় তাঁদের কাঁধে চাপানো যায় না ৷ তাছাড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আগে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়নি ৷ তাঁদের শোকজও করা হয়নি ৷ সুতরাং এই সাসপেনশন নোটিশ সঠিক নয় ৷ তবে তাঁরা আরও কয়েকদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ দেখতে চাইছেন ৷

নয়া উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া উপাচার্য এসব করে রাজ্যপালের কাছে নিজের নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন ৷ উপাচার্য পদে তাঁর নিয়োগ কতটা বৈধ, তা নিয়েও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে ৷ এই মুহূর্তে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিরোধ চরম আকার নিয়েছে ৷ প্রায় প্রতিদিনই চলছে কথা চালাচালি ৷ তার মধ্যে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রাক্তন পদাধিকারীকে সাসপেনশনের নোটিশ ওই আগুনে ঘি ঢালল বলেই মনে করা হচ্ছে ৷

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে গতি আনতে 'স্পিড প্রোগ্রাম' চালু রাজ্যপালের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.