মালদা, 16 জুলাই: দুই ভাইয়ের জমি বিবাদের সালিশি করতে গিয়ে 14 বছরের এক কিশোরীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে । প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই নাবালিকা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । এই ঘটনায় ওই নেতা-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেছেন নাবালিকার বাবা । তিনিও একজন তৃণমূলকর্মী । ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের মালিওর গ্রামে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস্তুভিটের ভাগ নিয়ে মালিওর গ্রামের দুই ভাই সুদাম মণ্ডল ও সুকুমার মণ্ডলের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ । সম্প্রতি ওই ভিটেয় পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন সুকুমারবাবু । ওই জমি শুক্রবার মাপামাপির কথা ছিল । দুপুরে আমিনও জমি মাপতে আসেন। তিনি জমি মাপা শুরু করতেই ফের দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়ে যায় ।
অভিযোগ, সেইসময় দলবল নিয়ে সেখানে আসেন এলাকার তৃণমূল নেতা নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল । বড় ভাই সুদাম তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসাবে এলাকায় পরিচিত । নারায়ণবাবু নাকি সুদামবাবুর হয়ে আমিনকে প্রভাবিত করতে শুরু করেন । প্রতিবাদ জানান সুকুমারবাবু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা । এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয় । তখন নারায়ণবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা সুকুমারবাবুদের মারধর শুরু করে । বাবা-মাকে বাঁচাতে ছুটে আসে তাঁদের 14 বছরের মেয়ে ছটি । তাকেও বেধড়ক মারধর করেন নারায়ণবাবুরা । মারের চোটে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় তার। সঙ্গে সঙ্গে তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও সে সেখানে চিকিৎসাধীন। এদিকে ছটি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যেতেই সেখান থেকে দলবল নিয়ে সরে পড়েন নারায়ণবাবু ।
আরও পড়ুন: ইস্কোর জমি দখল নিয়ে দুই দলের সংঘর্ষ
সুকুমারবাবু বলেন, "নারায়ণ আর তার দলবল দাদার হয়ে আজ সালিশি করছিল । প্রতিবাদ করলে ওরা আমাদের মারতে শুরু করে । সেইসময় ছটি আমাদের বাঁচাতে আসলে ওরা মেয়েটাকেও ছাড়েনি । মারের চোটে ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে । শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় । আমি নারায়ণ আর তার দলবলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ।"এদিকে নারায়ণবাবুর দাবি, "পঞ্চায়েত ভোটের আগে আমাকে বদনাম করতে এসব মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে । এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র । আমি এই ঘটনায় জড়িত নই । এটা ওদের ভাই ভাইয়ের ঝামেলা ।" এ নিয়ে যুব তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, "একটা ঘটনার কথা শুনেছি । কিন্তু এরসঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই । পারিবারিক ঝামেলায় দলের কেউ জড়িয়ে পড়লে আইন আইনের পথে চলবে ।"