ETV Bharat / state

National Fountain Pen Day: জাতীয় ঝর্না কলম দিবসের গুরুত্ব বোঝালেন পেনপ্রেমী সুবীর - মালদা

প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার পালিত হয় জাতীয় ঝর্না কলম দিবস (National Fountain Pen Day) ৷ এই দিনের গুরুত্ব কী ? তা জানতেই মালদা শহরের বাসিন্দা সুবীরকুমার সাহার মুখোমুখি হয়েছিল ইটিভি ভারত ৷ সুবীরের ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে 1 হাজারেরও বেশি কলম !

Malda man describes the importance of National Fountain Pen Day
National Fountain Pen Day: জাতীয় ঝর্না কলম দিবসের গুরুত্ব বোঝালেন পেনপ্রেমী সুবীর
author img

By

Published : Nov 3, 2022, 8:34 PM IST

মালদা, 3 নভেম্বর: প্রাচীন মানুষ নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে গুহাচিত্র আঁকত ৷ তীক্ষ্ণ পাথরের ফলায় পাথরের গায়েই সৃষ্টি করত ছবি ৷ পরবর্তীতে সেই ছবির উপর ভিত্তি করেই লেখা হয় মানব জাতির ইতিহাস ৷ সময় গড়িয়েছে ৷ মানুষের মনোভাব প্রকাশেও বদল এসেছে ৷ প্রাচীন মানুষের হাতে এসেছে প্যাপিরাসের ছাল ৷ মানুষ দেখেছে, তার উপর লেখা যায় ৷ নিজেদের সুবিধেয় কখনও নলখাগড়া, কখনও পাখির পালক চলে এসেছে মানুষের তিন আঙুলের ফাঁকে ৷ গাছগাছড়া থেকে পাওয়া গিয়েছে কালি ৷ পরবর্তীতে আবিষ্কৃত হয়েছে ঝর্না কলম এবং রাসায়নিক কালি ৷ এভাবেই সংরক্ষিত হয়েছে ইতিহাস ৷ মানুষের মনের বিবর্তনের ইতিহাস !

বিজ্ঞানের হাত ধরে এগোচ্ছে প্রযুক্তি ৷ এখন দিনের 24 ঘণ্টাই মানুষ এই প্রযুক্তির দাস ৷ ফলে দিন দিন দূরে, আরও দূরে সরে যাচ্ছে মানব ইতিহাসের দলিল নির্মাণের অন্যতম প্রধান সামগ্রী ৷ তা হল এই ঝর্না কলম (Fountain Pen) ৷ ফাউন্টেন পেন নয়, এখন ঘরে ঘরে থাকে পেন ড্রাইভ ৷ তবে কি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কলমের কথা কখনও জানতে পারবে না ? সেই চিন্তা থেকেই 2012 সালে ভারতে জাতীয় ঝর্না কলম দিবস (National Fountain Pen Day) পালন শুরু হয় ৷ তারপর থেকে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার সারা দেশে দিনটি পালিত হয়ে আসছে ৷ সেই হিসাবে এবছর 4 নভেম্বর পালিত হবে জাতীয় ঝর্না কলম দিবস ৷

আরও পড়ুন: শীত আসতেই পর্যটক টানতে তৈরি হরিশ্চন্দ্রপুরের ডিয়ার পার্ক

বিশেষ এই দিনটি এগিয়ে এলেই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন মালদা শহরের গ্রিন পার্কের বাসিন্দা সুবীরকুমার সাহা ৷ পেশায় লাইব্রেরিয়ান সুবীর গত 30 বছর ধরে কলম সংগ্রহ করে চলেছেন ৷ এমনকী, আদিম মানব যেভাবে পাথর ব্যবহার করে গুহাচিত্র আঁকত, ঠিক সেই আকারের ছুঁচলো পাথরও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে ! রয়েছে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতিকে ব্যবহার করে তৈরি লেখনি ৷ 1827 সালে পেট্রাচ পয়েনারুর আবিষ্কৃত ফাউন্টেন পেনের কোনও সংস্করণ না-থাকলেও তাঁর কাছে রয়েছে 1884 সালের চ্যানেল ইংক ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক লুইস এডসন ওয়াটারম্যানের কোম্পানির ঝর্না কলম ৷ রয়েছে সোনা, রুপো, তামা, কাঠ, বাঁশ, এমনকী কাগজের তৈরি কলমও ! এভাবেই তাঁর সংগ্রহে এসেছে 1 হাজারেরও বেশি কলম ৷ এখনও বিভিন্ন ধরনের কলম সংগ্রহ করেই চলেছেন সুবীর ৷

জাতীয় ঝর্না কলম দিবস

সুবীরবাবু বলছেন, "ছাত্রজীবন থেকেই আমার কলম সংগ্রহের নেশা ৷ কারণ, কলম মানব জীবনের ইতিহাস লেখে ৷ কিন্তু কলমের বিবর্তন আর ইতিহাস মানুষ মনে রাখে না ৷ কলম না-থাকলে হয়তো মানব সভ্যতাই গড়ে উঠত না ৷ বিজ্ঞান যত এগিয়েছে, আমরা ততই কলমকে ভুলতে বসেছি ৷ সামাজিক মাধ্যমের হাত ধরে আমরা কলমের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছি ৷ তাই আগামী প্রজন্মের কাছে কলমকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার এদেশে ন্যাশনাল ফাউন্টেন পেন ডে পালিত হয় ৷ আমি চাই, প্রত্যেক মানুষ ফাউন্টেন পেন ব্যবহার করুন ৷ নিকট আত্মীয়দের এই পেন উপহার দিক ৷"

সুবীরবাবু জানান, "আমার সংগ্রহে থাকা 1 হাজারেরও বেশি কলমের মধ্যে অনেক ধরনেরই কলম রয়েছে ৷ ফাউন্টেনের সঙ্গে বল পেনও রয়েছে অনেক ৷ পাথর ব্যবহারের পর মানুষের হাতে প্রথম এসেছিল খাগের কলম ৷ মিশরে এই কলমের প্রচলন হয় ৷ পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ধরনের কলম তৈরি হয়েছে ৷ আমার কাছে শুধু এদেশের নয়, জার্মানি, জাপান, চিন, আমেরিকা, বাংলাদেশ, রাশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের কলম রয়েছে ৷ কলম একজন মানুষের মননে সৃজনশীলতা নিয়ে আসে ৷ তাই মানুষের সৃজনশীলতা অক্ষত রাখতে প্রত্যেকের কাছে আমার আবেদন, সবাই কলম ব্যবহার করুন ৷"

মালদা, 3 নভেম্বর: প্রাচীন মানুষ নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে গুহাচিত্র আঁকত ৷ তীক্ষ্ণ পাথরের ফলায় পাথরের গায়েই সৃষ্টি করত ছবি ৷ পরবর্তীতে সেই ছবির উপর ভিত্তি করেই লেখা হয় মানব জাতির ইতিহাস ৷ সময় গড়িয়েছে ৷ মানুষের মনোভাব প্রকাশেও বদল এসেছে ৷ প্রাচীন মানুষের হাতে এসেছে প্যাপিরাসের ছাল ৷ মানুষ দেখেছে, তার উপর লেখা যায় ৷ নিজেদের সুবিধেয় কখনও নলখাগড়া, কখনও পাখির পালক চলে এসেছে মানুষের তিন আঙুলের ফাঁকে ৷ গাছগাছড়া থেকে পাওয়া গিয়েছে কালি ৷ পরবর্তীতে আবিষ্কৃত হয়েছে ঝর্না কলম এবং রাসায়নিক কালি ৷ এভাবেই সংরক্ষিত হয়েছে ইতিহাস ৷ মানুষের মনের বিবর্তনের ইতিহাস !

বিজ্ঞানের হাত ধরে এগোচ্ছে প্রযুক্তি ৷ এখন দিনের 24 ঘণ্টাই মানুষ এই প্রযুক্তির দাস ৷ ফলে দিন দিন দূরে, আরও দূরে সরে যাচ্ছে মানব ইতিহাসের দলিল নির্মাণের অন্যতম প্রধান সামগ্রী ৷ তা হল এই ঝর্না কলম (Fountain Pen) ৷ ফাউন্টেন পেন নয়, এখন ঘরে ঘরে থাকে পেন ড্রাইভ ৷ তবে কি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কলমের কথা কখনও জানতে পারবে না ? সেই চিন্তা থেকেই 2012 সালে ভারতে জাতীয় ঝর্না কলম দিবস (National Fountain Pen Day) পালন শুরু হয় ৷ তারপর থেকে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার সারা দেশে দিনটি পালিত হয়ে আসছে ৷ সেই হিসাবে এবছর 4 নভেম্বর পালিত হবে জাতীয় ঝর্না কলম দিবস ৷

আরও পড়ুন: শীত আসতেই পর্যটক টানতে তৈরি হরিশ্চন্দ্রপুরের ডিয়ার পার্ক

বিশেষ এই দিনটি এগিয়ে এলেই উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন মালদা শহরের গ্রিন পার্কের বাসিন্দা সুবীরকুমার সাহা ৷ পেশায় লাইব্রেরিয়ান সুবীর গত 30 বছর ধরে কলম সংগ্রহ করে চলেছেন ৷ এমনকী, আদিম মানব যেভাবে পাথর ব্যবহার করে গুহাচিত্র আঁকত, ঠিক সেই আকারের ছুঁচলো পাথরও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে ! রয়েছে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতিকে ব্যবহার করে তৈরি লেখনি ৷ 1827 সালে পেট্রাচ পয়েনারুর আবিষ্কৃত ফাউন্টেন পেনের কোনও সংস্করণ না-থাকলেও তাঁর কাছে রয়েছে 1884 সালের চ্যানেল ইংক ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক লুইস এডসন ওয়াটারম্যানের কোম্পানির ঝর্না কলম ৷ রয়েছে সোনা, রুপো, তামা, কাঠ, বাঁশ, এমনকী কাগজের তৈরি কলমও ! এভাবেই তাঁর সংগ্রহে এসেছে 1 হাজারেরও বেশি কলম ৷ এখনও বিভিন্ন ধরনের কলম সংগ্রহ করেই চলেছেন সুবীর ৷

জাতীয় ঝর্না কলম দিবস

সুবীরবাবু বলছেন, "ছাত্রজীবন থেকেই আমার কলম সংগ্রহের নেশা ৷ কারণ, কলম মানব জীবনের ইতিহাস লেখে ৷ কিন্তু কলমের বিবর্তন আর ইতিহাস মানুষ মনে রাখে না ৷ কলম না-থাকলে হয়তো মানব সভ্যতাই গড়ে উঠত না ৷ বিজ্ঞান যত এগিয়েছে, আমরা ততই কলমকে ভুলতে বসেছি ৷ সামাজিক মাধ্যমের হাত ধরে আমরা কলমের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছি ৷ তাই আগামী প্রজন্মের কাছে কলমকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার এদেশে ন্যাশনাল ফাউন্টেন পেন ডে পালিত হয় ৷ আমি চাই, প্রত্যেক মানুষ ফাউন্টেন পেন ব্যবহার করুন ৷ নিকট আত্মীয়দের এই পেন উপহার দিক ৷"

সুবীরবাবু জানান, "আমার সংগ্রহে থাকা 1 হাজারেরও বেশি কলমের মধ্যে অনেক ধরনেরই কলম রয়েছে ৷ ফাউন্টেনের সঙ্গে বল পেনও রয়েছে অনেক ৷ পাথর ব্যবহারের পর মানুষের হাতে প্রথম এসেছিল খাগের কলম ৷ মিশরে এই কলমের প্রচলন হয় ৷ পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ধরনের কলম তৈরি হয়েছে ৷ আমার কাছে শুধু এদেশের নয়, জার্মানি, জাপান, চিন, আমেরিকা, বাংলাদেশ, রাশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের কলম রয়েছে ৷ কলম একজন মানুষের মননে সৃজনশীলতা নিয়ে আসে ৷ তাই মানুষের সৃজনশীলতা অক্ষত রাখতে প্রত্যেকের কাছে আমার আবেদন, সবাই কলম ব্যবহার করুন ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.